পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের মান্দারবাড়ি থেকে ভারতের নৌবাহিনীর পুশইন করা ৭৮ জন মুসলিম ব্যক্তিকে নিয়ে রোববার (১১ মে) সকালে মোংলার উদ্দেশে রওনা হয়েছে কোস্টগার্ডের জাহাজ স্বাধীন বাংলা। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হওয়ায় কাঠের ট্রলারে করে তাদেরকে আনা হচ্ছে। দুপুর নাগাদ তারা মোংলায় পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড।

কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, পুশইন করা ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে শুক্রবার রাতে তাদেরকে ভারতের নৌবাহিনী সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মান্দারবাড়ি ফরেস্ট টহল ফাড়ির কাছে নামিয়ে দেয়। তারা ফরেস্ট স্টেশনে এসে আশ্রয় নেয়।

জানা যায়, ভারতের গুজরাটের বস্তিতে বসবাস করত তারা। ভারতের বৈধ নাগরিকত্ব দেখাতে না পারার কারণে তাদেরকে পুশইন করা হয়েছে। খবর পেয়ে মংলা কোস্টগার্ড ঘটনাস্থলে যায়। বন বিভাগ তাদেরকে কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করে। পুশ ইন করা ব্যক্তিদের সুন্দরবন বিভাগ থেকে খাবার সরবরাহ করা হয়। তাদের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা কোস্টগার্ড থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে বলে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানানো হয়েছে।

পুশইন করা একাধিক ব্যক্তি জানান, তারা সবাই ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাট শহরের একটি বস্তিতে ছোটখাট কাজ করে জীবন চালাতেন। গত ২৬ এপ্রিল স্থানীয় প্রশাসন তাদের বস্তি গুঁড়িয়ে দেয় এবং রাতেই সবাইকে আটক করে।

তাদের দাবি, ওই রাতেই হাত ও চোখ বেঁধে পুলিশ ক্যাম্পে নেওয়া হয় এবং সেখানে চারদিন আটকে রাখা হয়। পরে বিমানে করে তাদের কলকাতায়, সেখান থেকে জাহাজে করে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় নিয়ে আসা হয়। তখনও চোখ বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে সেখানে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ২৬ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত আটকের পুরো সময়জুড়ে তাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না, প্রায়শই মারধর ও গালিগালাজ করা হতো। তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, কোনো রকম মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়াই তাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হয়েছে।

জন্মসূত্রে ভারতীয়, তবুও কেড়ে নেওয়া হয় কাগজপত্র

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024