|
Date: 2025-05-13 20:37:52 |
সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে বিএসএফ কর্তৃক জোরপূর্বক পুশ ইন করা ৭৫ জন বাংলাদেশি মুসলিম এবং ৩ জন ভারতীয় মুসলিমদের উদ্ধারের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেছে কোস্টগার্ড। মঙ্গলবার সকালে শ্যামনগর থানায় অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ জানান, গত ৯ মে ভোররাতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ৭৫ জন বাংলাদেশি মুসলিম এবং ৩ জন ভারতীয় মুসলিমকে জোরপূর্বক পুশ ইন করা হয়। তাদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন যাবৎ ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাস করে আসছিল এবং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল গভীর রাতে ভারতীয় প্রশাসন তাদের বাসা থেকে আটক করে এবং গত ৯ মে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ভোররাতে গোপনে সুন্দরবনের মান্দারাড়ি চরে রেখে যায়। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তিরা মান্দারবাড়িয়া চর হতে মান্দারবাড়ি ফরেস্ট অফিসে এসে আশ্রয় নেয়। ফরেস্ট অফিস কর্তৃক কোস্ট গার্ডকে অবহিত করলে গত ১০ মে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন অতিদ্রুত পুশ ইন করা ৭৮ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাদের প্রয়োজনীয় খাবার ও ঔষধ সামগ্রী সরবরাহ করে।
পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা আরও জানায়, ভারতীয় পুলিশ তাদের বস্তিগুলোতে হানা দেয় এবং বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও তাদেরকে পরিবারের সদস্যদের সামনে অমানবিক নির্যাতন করার পাশাপশি পরিবারের অন্যন্যা সদস্যদেরও পাশবিক নির্যাতন করে। তারপর তাদের চোখ বেঁধে একটি সামরিক বিমানে এবং পরিবারের অন্যন্যা সদস্যদের অপর একটি সামরিক বিমান যোগে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় স্থানান্তর করে। পরবর্তীতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জাহাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুন্দরবনের একটি জায়গায় রেখে যায় এবং জাহাজে অবস্থাকালীন সময়ে শারীরিক নির্যাতন, অমানবিক আচরণ, ধর্মীয় অবমাননাসূচক মন্তব্য ও প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করেনি এবং এখন পর্যন্ত তাদের স্ত্রী সন্তানদের সঠিক অবস্থান তারা জানে না। তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১১ মে সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
প্রেস ব্রিফিং শেষে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশী ৭৫ জন কে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকী ৩ জন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
© Deshchitro 2024