লাখাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কর্মকাররা। আর ক'দিন পরই ঈদুল আজহা, তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন ককর্মকার শিল্পীরা। কর্মকাররা দিন-রাত টুং-টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে কর্মকার পট্টি । হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীন কর্মকার শিল্প যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এখন দম ফেলারও ফুরসত নেই কর্মকার পাড়ার শিল্পীদের। লোহার টুং-টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলার প্রতিটি কর্মকার পট্টি। উপজেলার বুল্লা বাজার, মুড়াকড়ি, লাখাই বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজার ও কর্মকার বাড়ীতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের ছোরা, চাপাতি, চাকু, দা, বটিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি ও মেরামত করছেন কর্মকার শিল্পীরা। তাছাড়া ক্রেতাদের পছন্দমত বিভিন্ন মাপের পশু জবাই করার ছোট-বড় ধারালো অস্ত্র তৈরী করছে। সারাবছর টুক-টাক কাজ থাকলেও কোরবানির ঈদের সময় কামার শিল্প মুখরিত হয়ে ওঠে। উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের হামরুল মিয়া জানান, কুরবানীর সরঞ্জামজাদি চা-পাতি, ছোরা, চাকু, দা, বটি কোরবানীর সময় প্রয়োজন পড়ে। বাকী মাস গুলোতে এ সকল জিনিসপত্র তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না বললেই চলে। তাই এ সকল জিনিসপত্রে মরিচা পড়ে ধার নষ্ট হয়ে যায়। তাই ঈদের আগেই কর্মকারের দোকানে কুরবানীর পশু জবাইয়ের জিনিসপত্র নতুন করে তৈরী করার প্রয়োজন পড়ে। কর্মকার শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসময় দোকানে পুরাতন ও নতুন ধারালো অস্ত্র বানানো ও মেরামতের ভিড় শুরু হয়। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এই ব্যস্ততা থাকে। বুল্লা বাজারের কর্মকার শিল্পী শ্রীকৃষ্ণ কর্মকার জানান, লোহা ও কয়লার দাম বেড়েছে। পশু জবাই করার ছোট-বড় বিভিন্ন সরঞ্জাম সাইজের উপর দাম নির্ভর করে। ছোট চাপাতি ৫শ টাকা, বড় চাপাতি ৭শ-৮শ, বড় ছোরা ৫শ থেকে সাড়ে ৮শ, চাকু ৫০ টাকা থেকে দুশ টাকা, বটি ৫শ থেকে ১ হাজার ২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এই পেশায় আমরা খুব অবহেলিত। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বেশি হলেও সেই অনুযায়ী দাম পাই না। ফলে সারা বছর সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। কোরবানির ঈদের সময় পশু জবাইয়ের সরঞ্জামের চাহিদা থাকায় কাজও বেশি হয়। আর সারা বছর তেমন কোন কাজ থাকে না। টুক-টাক কাজ করে সংসার চালাতে হয়, তাই কর্মকার শিল্পীরা বর্তমান এ পেশায় তাদের অবহেলিত মনে করেন। তারপরও পেশা টিকে রাখতে সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024