বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি এখন স্থল নিম্নচাপ আকারে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত স্থল গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর/ উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে প্রথমে স্থল নিম্নচাপ এবং পরে আরও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে শেরপুর ও তৎসংলগ্ন মেঘালয়ে অবস্থান করেছে। এর প্রভাবে দেশের সাত বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। আর ভারী বর্ষণজনিত কারণে কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।


শুক্রবার (৩০ মে) আবহাওয়া অফিসের ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।


আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাতেই স্থল নিম্নচাপ আকারে সাতক্ষীরা ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নেয়। এর পর থেকে এটি স্থল নিম্নচাপ আকারে রূপ নেয়।


নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃহস্পতিবার প্রবল বর্ষণ হয়েছে। ফলে উপকূলীসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অনেক এলাকার জনপদ। জলোচ্ছ্বাস এবং জোয়ারের তীব্রতায় ভেসে গেছে বাড়িঘর, গবাদিপশু, দোকান-পাটের মালামাল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক এলাকায় মানুষ। খাল-বিল ও কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ার ফসসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কৃষকদের। একইসঙ্গে বেড়েছে নদ-নদীর পানি। যা বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। 


আবার অনেক এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে পানি, বসতবাড়িতে পানি উঠে অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। অতিবর্ষণের কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে রেকর্ড করা হয় ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি।


আবহাওয়া অফিসের সতর্কবার্তায় বলা হয়, সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী (৪৪-৮৮ মিলোমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতিভারী (১৮৮ মিলোমিটার/২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে।


অতিভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলাগুলোতে পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।


আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত স্থল গভীর নিম্নচাপটি অগ্রসর ও ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে প্রথমে স্থল নিম্নচাপ এবং পরে আরও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে শেরপুর ও তৎসংলগ্ন মেঘালয়ে অবস্থান করেছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024