লাখাইয়ে বুল্লার মেলা উপলক্ষে মৃৎ শিল্পীরা খেলনা সামগ্রী তৈরীতে ব্যস্ত।

লাখাইয়ে স্থানীয় বুল্লাবাজার সংলগ্ন হযরত শাহবায়েজিদ( রঃ) মাজারে বার্ষিক ওরস আগামী শনিবার (২৪ ডিসেম্বর)  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওরস উপলক্ষে মাজার প্রাঙ্গনে মেলা বসছে। এদিকে এ মেলাকে সামনে রেখে বুল্লাবাজার এর পার্শ্ববর্তী পূর্ববুল্লা গ্রামের কুমার পল্লীতে চলছে বাহারী রকম ও রঙের  পন্য তৈরির ধুম।প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কুমার পল্লীর মহিলা তাদের নিপুণ হাতে মাটি দিয়ে তৈরি করছে হরেকরকম খেলনা।মাটির তৈরী এ খেলনাকে আকর্ষনীয় করতে দেওয়া হচ্ছে  রঙের নানা ধরনের কারুকাজ। কারুকাজের বেশ কদর রয়েছে এ মেলায়।খোঁজ নিয়ে জানা পূর্ব বুল্লা গ্রামের বাসন্তী রানী রুদ্র পাল(৬৫) ও তার বোন মালতী রানী রুদ্রপাল দীর্ঘদিন যাবত  এ মাটির তৈরী পন্য তৈরির কাজ করে আসছেন। সারাবছর  এ পন্যে তেমন চাহিদা না থাকলেও  মেলায়  বেশ চাহিদা থাকে।এতে তাদের আয়- রোজগার ও ভালো হয়। কিন্তু দিন দিন রঙের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায়  পন্য তৈরির খরচ বেড়ে যাওয়ায়  কমে গেছে মুনাফাও।এ বিষয়ে  বিধবা বাসন্তী রানী রুদ্র পাল  ও তার বোন মালতী রানী রুদ্র পালের সাথে আলাপকালে জানান  এক সময় অনেক পরিবার এ পেশায় জড়িত ছিল।তবে বাজারে প্লাস্টিকের পন্যের সহজলভ্যতায়  মৃৎ পন্যের চাহিদা কমে যাওয়ার  এ পেশায় টিকতে না পেরে পেশা বদল করেছে। কিন্তু আমাদের পরিবারে উপার্জনক্ষম তেমন কেউ না থাকায়  জীবিকার তাগিদে এ বয়সে এসে এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে রয়েছি। আমাদের এ কাজে বাড়ির  অন্যরাও সহযোগিতা করে থাকে।আমারা সারাবছর মাটির হাঁড়ি-পাতিল  তৈরি করে থাকি।এতে তেমন আয় না হলেও কোন রকমে সংসার চলে।আশা থাকে মেলায় খেলনা সামগ্রী তৈরী করে  দুপয়সা লাভের  মুখ দেখব।তবে এবছর এ নিয়েও রয়েছে শংকা।কারন একদিকে  মাটি সংগ্রহ ও আনুষঙ্গিক খরচ বৃদ্ধি সেই সাথে  রঙের মূল্য বৃদ্ধি তো রয়েছেই।বিকল্প কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে এ কাজ করে পন্য তৈরি করছি।এ ব্যাপারে  বুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান  এডভোকেট খোকন চন্দ্র গোপ এর সাথে আলাপকালে জানান  পূর্ববুল্লা গ্রামে এ সময় অনেক পরিবার মৃৎ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। বর্তমানে অনেক পরিবার পেশা বদল করেছে। যাঁরা এখনো রয়েছে তারা খুবই অভাব অনটনে দিনাতিপাত করছে। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর বাসন্তী রানী রুদ্র পাল  ও মালতী রানী রুদ্র পাল  এর পরিবারের জন্য ভিজিডি ও অন্যান্য সুবিধার ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়াও বিগত বন্যায় ক্ষতি গ্রস্থ হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রদান করা হয়েছে। তাদের একটি ছেলে বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে মারা গেলে তার পরিবারের জন্য সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করেছি। তাদের এক প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছি। আমি আমার সাধ্য মতো তাদেরকে সহযোগিতা করে আসছি।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024