|
Date: 2025-06-17 23:34:20 |
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই। তিনি উপজেলার গুরুই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম সোনাফর মিয়া এবং মায়ের নাম দুঃখী বিবি। সখিনা নিঃসন্তান। মুক্তিযুদ্ধের আগেই তার স্বামী কিতাব আলী মারা যান । নিকলীতে সখিনা বেগমকে দেখভাল করার কেউ না থাকায় তিনি বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়ার বড়মাইপাড়া গ্রামে তার ভাগ্নি ফাইরুন্নেছা আক্তারের কাছে থাকতেন।
আজ মঙ্গলবার(১৭ জুন) ভোরে হিলচিয়া বড়মাইপাড়া গ্রামে ভাগ্নির বাড়িতে ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন। আজ মঙ্গলবার আসর নামাজ বাদ সখিনার গ্রামের বাড়ি গুরুই ঈদগাহ মাঠে জানাজা নামাজ শেষে শাহী মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সখিনা বেগম মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে সখিনা বেগমের ভাগ্নে মতিউর রহমান সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাক হানাদার বাহিনী এবং দেশীয় রাজাকারদের হাতে শহীদ হন। ভাগ্নের অকালমৃত্যু সখিনাকে প্রতিশোধ পরায়ণ করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সখিনা বেগম গুরুই এলাকায় বসু বাহিনীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রান্নার কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি রাজাকারদের গতিবিধির বিভিন্ন খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতেন।
একপর্যায়ে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পরে কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। আসার সময় সেখান থেকে নিয়ে আসেন একটি ধারালো দা। আর সেই দা দিয়েই নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন। সখিনা বেগমের সেই দা বর্তমানে ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে বলে জানা যায়।
© Deshchitro 2024