|
Date: 2022-08-14 16:25:47 |
নিউজ ডেস্ক :
ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে ব্যাংকগুলোকে আন্তঃব্যাংক ডলার বেচাকেনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি বিদেশে আটকে থাকা রপ্তানি মূল্য বা এক্সপোর্ট প্রসিডস দ্রুত দেশে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, এবিবি ও বাফেদা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন ব্যাংকের এমডিরা সভায় অংশ নেন।
মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলারের যে সংকট তা কাটিয়ে উঠতে এবিবি ও বাফেদার সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল করতে তাদের থেকে কিছু পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা কথা দিয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, এবিবি ও বাফেদাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলো যেন তাদের রপ্তানি বিল দ্রুত দেশে এনে নগদায়ন করে। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে আন্তঃব্যাংক লেনদেন কার্যকর করে।
আমদানি কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব নির্দেশনা দিয়েছে তা কার্যকর হতে শুরু করেছে বলেও জানান সিরাজুল ইসলাম। বলেন, ইতিমধ্যে ৩১ শতাংশ আমদানি কমে এসেছে। আশা করি আগামী দুয়েক মাসের মধ্যে ডলারের বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়ে যাবে।
ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলার নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ডলার মার্কেট কেন্দ্রীয় ব্যাংক সবসময় পর্যবেক্ষণ করছে। এমন কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এখন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। চলতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। এ হিসাবে দেড় মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ৫৫ পয়সা।
তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এখন ১০৬ থেকে ১০৮ টাকায় নগদ ডলার বিক্রি হচ্ছে। আর খোলা বাজারে ডলারের দাম ১১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এর আগে খোলা বাজারে ডলারের দাম প্রথমবারের মতো ১০০ টাকার ঘর পেরিয়ে যায় গত ১৭ মে। এরপর আবার কমে আসে। পরে গত ১৭ জুলাই ফের ১০০ টাকা অতিক্রম করে। গত ১০ ও ১১ আগস্ট নগদ ডলার ১২০ টাকায় উঠেছিল।
এ ছাড়া প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করার প্রমাণ পাওয়ায় গত ৮ আগস্ট দেশি-বিদেশি ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো--বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
এ ছাড়া ডলারের দামের কারসাজি রোধে খোলা বাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কারসাজির অপরাধে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪২টিকে শোকজ করা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে দেশে ৮১ কোটি ৩০ লাখ (৮১৩ মিলিয়ন) ইউএস ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৯৬ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ৭ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২৪৩ কোটি ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
© Deshchitro 2024