যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী নওয়াপাড়া বাজারে হাটের দিনে খেজুরের গুড় কেনা-বেচার রীতিমত ধুম পড়েছে। শনিবার হাটের দিনে নওয়াপাড়া বাজারে খেজুরের গুড়ের পাটালি কেনার জন্য ক্রেতারা যেমন ভিড় জমিয়েছেন, সেই সাথে পাটালি বিক্রেতা রিতিমত হিমশিম খাচ্ছেন।

 

এখানকার খেজুর রস থেকে তৈরি হচ্ছে উন্নত মানের গুড়। এই খেজুর গুড় ও নলেন পাটালির রয়েছে দেশজুড়ে খ্যাতি। খেজুর গুড় ও নলেন পাটালি বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে জমজমাট হয়ে উঠেছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া হাট। দূর-দূরান্ত থেকে হাটের দিনে এখানে ছুটে আসছেন ব্যাপারীসহ বহু ক্রেতা-বিক্রেতা। 

শীত যতই বাড়ছে খেজুরের রস- গুড়ের চাহিদা ততই বাড়ে চলেছে। সরজমিনে দেখাযায় বাঘারপাড়ার চাড়া ভিটা থেকে পাটালি বিক্রয় করতে এসেছেন গাছি বাদশা মিঞা। তিনি জানান, নিজেই খেজুর গাছ কাটেন নিজেরাই পাটালি তৈরি করেন, খুব কষ্ট করে বানাতে হয় এই পাটালি। তিনি কেজি প্রতি পাটালি বিক্রয় করছেন ৩০০ টাকা দরে। কোন ভেজাল নেই এই পাটালি গুড়ে। মুহূর্তে মধ্যেই সব গুড় বিক্রয় হয়ে যায় তার। কথা হয় গাছি মকবুল হোসেনের সঙ্গে, তিনি এসেছেন উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়ন থেকে, তিনি বলেন নিজের হাতেই গাছ কাটি, খাঁটি গুড় বিক্রয় করি।তিনি হাত এগিয়ে দেখান, হাতের অবস্থা দেখলেই বোঝা যাবে কে গাছি আর কে ব্যবসায়ী। তিনি এক ঠিলে/ভাড় গুড় বিক্রয় করছেন তেরশ টাকা।

অনেক ক্রেতাকেগুড় খেয়ে খেয়ে স্বাদ পরিক্ষা করে ক্রয় করতে দেখা গেছে। অনেকেই গুড় কিনতে ভয় পাচ্ছেন ভেজাল গুড়ের সন্ধহে। অনেকেই বলছেন যে, গুড় ব্যবসায়ীরা চিনি মিশিয়ে গুড়ে তৈর করে থাকে।

খেজুরের গুড় আর পাটালির জন্য বিখ্যাত যশোর। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেলেও বদলায়নি যশোরের গুড় ও পাটালি তৈরির রেওয়াজ। অতীত এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে জেলার অভয়নগর উপজেলার অনেক পরিশ্রমী গাছিরা।

খেজুরের রস, গুড় ও পাটালির চাহিদা প্রতিবছরই বাড়ছে। কিন্তু উৎপাদন কম হওয়ার কারণে রীতিমতো কাড়াকাড়ি পড়ে যায় নির্ভেজাল গুড় ও পাটালি নিয়ে।



যশোরের ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত অভয়নগরের খেজুরের গুড়। যার স্বাদ ও গন্ধ অতুলনীয়।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024