বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি)’ নামের বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশ্বমানের ফ্যাশন টেকনোলজির বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষার নতুন দুয়ার খুলতে যাচ্ছে  বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে।

আজ  আনুষ্ঠানিকভাবে
‘চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (সিবিইউএফটি)’ নামের বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শুভ উদ্বোধন করলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে   শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন , আমরা একেবারে প্রাকপ্রাথমিক থেকে উচ্চতর পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটাচ্ছি, ।

আমরা চাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ভাষা, আইটি, উদ্যোক্তা হওয়া শেখাতেই হবে। স্পেশাল কোর্স দিতে হবে। সেগুলোর চর্চা করতে হবে ছাত্রাবস্থায়। তারা চাকরিদাতাকে বলবে না সুযোগ দেন। দক্ষ জনশক্তি হয়ে বের হবে তারা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় গড়া শুরু করেছিলেন বলেই আমাদের ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনলোজি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় নেভি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত উক্ত  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন - শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ও  গেস্ট অব অনার ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। সভাপতিত্ব করেন সিবিইউএফটি ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী।

বিজিএমইএ সুত্রে জানা যায় - সরকার ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়টি অস্থায়ীভাবে স্থাপন ও পরিচালনার সাময়িক অনুমোদন প্রদান করেন । যার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষে আজ উদ্বোধন হলো ।  আগামী মার্চে  উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। চারটি বিভাগে ৩৫ জন করে প্রথম সেমিস্টারে মোট ১৪০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।

সিবিইউএফটি ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী জানান, ৪র্থ শিল্প বিপ্লব, ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডে প্রতিনিয়ত তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়ন ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট ১০৬তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সিবিইউএফটির অনুমোদন দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চারটি বিভাগ চালুর অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দুইটি অনুষদে বিভক্ত এসব বিভাগ।
ক্লথিং ও ফ্যাশন টেকনোলজি অনুষদের অধীনে টেক্সটাইল অ্যান্ড ক্লথিং টেকনোলজি (টিসিটি) ও ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি (এফডিটি) বিভাগ থেকে বিএসসি কোর্স এবং ফ্যাশন অ্যান্ড অ্যাপারেল ডিজাইন অনুষদে অ্যাপারেল মার্সেন্ডাইজিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (এএমএম) ও ফ্যাশন ডিজাইন (এফডি) বিভাগ ব্যাচেলর ডিগ্রি দেওয়া হবে।

আগামী জুলাই-ডিসেম্বর সেশনে টেক্সটাইল ম্যানুফেকচারিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (এফটিএমই) অনুষদ চালুর পরিকল্পনা আছে জানিয়ে নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন-এর অধীনে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (টিই) ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (টিইএম) বিভাগের বিএসসি ডিগ্রি নিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। আমাদের দেশের পোশাক কারখানায় বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হতো। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে তৈরি হওয়া দক্ষ জনবল একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচবে, অন্যদিকে বেকারত্ব কমবে।

সিবিইউএফটিতে আন্তর্জাতিক মানের সব সুবিধাই শিক্ষার্থীরা পাবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডিজিটাল ক্লাসরুম, অত্যাধুনিক সুবিধার ল্যাবরেটরি, স্যুইং ল্যাব, টেক্সটাইল টেস্টিং ল্যাব, ফ্যাশন ডিজাইনিং স্টুডিও, উচ্চ ক্ষমতার ফ্রি ইন্টারনেট, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি থেকে শুরু করে বিষয়ভিত্তিক প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ এবং প্রজেক্টর মাল্টিমিডিয়ার মতো শিক্ষা সহায়ক উপকরণ থাকবে।
চট্টগ্রামের সেরা পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইন্টার্নশিপের সুযোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা নামী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিময়ের সুযোগও পাবেন।
চার বছরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীর গড়ে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা খরচ পড়তে পারে উল্লেখ করে তিনি ভালো ফল করলে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ মিলবে বলেও জানান।

আপাতত খুলীতে অবস্থিত বিজিএমইএ ভবনে কার্যক্রম চললেও আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন উদ্যোক্তারা। 

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024