|
Date: 2023-01-22 03:33:46 |
◾ মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
সুরা কোরাইশ পবিত্র কোরআনের ১০৬তম সুরা। কোরাইশ মূলত রাসুল (সা.)-এর দ্বাদশ পুরুষ নজর বিন কিনানাহর উপাধি। পরে তাঁর বংশধরেরা কোরাইশ নামে পরিচিতি লাভ করেন। এ সুরায় কোরাইশদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, তাই এর নাম ‘কোরাইশ’ রাখা হয়েছে।
মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটিতে আল্লাহ তাআলা কোরাইশদের প্রতি তাঁর বিশেষ নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাদের একমাত্র তাঁরই ইবাদত করার নির্দেশ দেন। ইরশাদ করেন, ‘যেহেতু কোরাইশের লোকেরা অভ্যস্ত, অর্থাৎ তারা শীত ও গ্রীষ্মকালে (ইয়েমেন ও সিরিয়ায়) সফর করতে অভ্যস্ত, তাই তারা যেন এই ঘরের (পবিত্র কাবাঘরের) মালিকের ইবাদত করে, যিনি তাদের ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভয়ভীতি থেকে নিরাপদ রেখেছেন।’ (সুরা কোরাইশ: ১-৪)
মহানবী (সা.)-এর আগমনের আগে আরব অঞ্চলে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ছিল না। কিন্তু কোরাইশরা যেহেতু বায়তুল্লাহ শরিফের আশপাশে বাস করত এবং তার সেবা করত, তাই আরবের সব লোক তাদের সেবা করত। তারা কোথাও সফর করলে তাদের কেউ ক্ষতি করত না। এই সুবাদে তারা প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে ইয়েমেনে এবং শীতকালে সিরিয়ায় নিরাপদে বাণিজ্যিক সফর করত। মক্কায় কোনো খেত-খামার ছিল না। তা সত্ত্বেও এসব সফরের কল্যাণে তারা সচ্ছল জীবন যাপন করত। আল্লাহ তাআলা এই সুরায় তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তারা যে নিরাপত্তা ও সচ্ছলতা উপভোগ করছে, তা পবিত্র কাবাঘরের প্রতিবেশী হওয়ার কল্যাণেই। সুতরাং অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা বাদ দিয়ে একমাত্র এই পবিত্র ঘরের মালিক মহান আল্লাহরই ইবাদত করা উচিত তাদের।
◾ সুরা কোরাইশ থেকে আমাদের শেখার বিষয় হলো—
• এক. আমাদের নিরাপত্তা ও রিজিকদাতা একমাত্র আল্লাহ তাআলা। সুতরাং একমাত্র তাঁরই ইবাদত করা বাঞ্ছনীয়।
• দুই. ধর্মীয় কারণে যারা সাধারণ মানুষের সমীহ পায়, তাদের অন্যদের তুলনায় অধিক পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগি করা উচিত।
• তিন. উপকারকারীর উপকার স্বীকার না করা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করা নিন্দনীয়।
© Deshchitro 2024