◾ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান :


মানুষ সামাজিক জীব। সমাজে বসবাস করতে গিয়ে বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে অন্তঃকলহ বা মনোমালিন্য হতেই পারে। এ মনোমালিন্য তৃতীয় পক্ষ কর্তৃক মীমাংসা করে দেওয়া খুবই পুণ্যের কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি মুমিনদের দুটি দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও।...তারপর যদি দলটি ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে মীমাংসা করো এবং ন্যায়বিচার করো। নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই। কাজেই তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দাও।’ (সুরা হুজুরাত: ৯-১০) তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পরস্পরের মধ্যকার অবস্থা সংশোধন করে নাও।’ (সুরা আনফাল: ১)


অনুরূপভাবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হলে সেখানেও মীমাংসা করে দেওয়া ইমানদারের কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘যদি কোনো নারী তার স্বামীর পক্ষ থেকে কোনো দুর্ব্যবহার কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তাহলে তারা উভয়ে কোনো মীমাংসা করলে তাদের কোনো অপরাধ নেই। আর মীমাংসা কল্যাণকর।’ (সুরা নিসা: ১২৮)


মহানবী (সা.)-এর বৈশিষ্ট্যই ছিল তিনি কারও মধ্যকার বিবাদের কথা শুনলে তা মীমাংসা করে দিতেন। সাহল ইবন সাআদ (রা.) বলেন, ‘কুবাবাসীরা পরস্পর মারামারির এক পর্যায়ে পাথর ছুড়তে শুরু করে। মহানবী (সা.) এ সংবাদ পেয়ে বললেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে চলো, আমি তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিব।’ (বুখারি)


এমনকি বিভিন্ন নফল ইবাদত থেকেও মীমাংসা করে দেওয়া উত্তম ইবাদত। একদা মহানবী (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে নামাজ, রোজা ও সদকার চেয়ে উত্তম বস্তুর সুসংবাদ দিব?’ তারা বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল।’ তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যকার অন্তঃকলহ মীমাংসা করা।’ (আবু দাউদ)


লেখক: সহযোগী অধ্যাপক,ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023