বলছিলাম নোয়াখালীর ছেলে মেহরাজ হোসেন সাগর এর কথা। সে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ইলেকট্রনিক্স টেকনলোজির  অষ্টম পর্বের ছাত্র। মেহরাজ হোসেন সাগর তৈরি করেন এই বিষ্ময়কর ডিভাইস। ডিভাইসটির নাম দেন " এল পি জি গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর " , আপনার ঘরে বা প্রতিষ্ঠানে যখন গ্যাস লিকেজ হবে সাথে সাথে ডিভাইজটি ভেজে উঠবে এবং আপনার মোবাইলে কল চলে আসবে,  তরুণ এই গবেষক বলেন, আমি প্রায় সময় বিভিন্ন পত্রিকার পাতায় দেখি অনেক জায়গায় গ্যাস লিকেজ হয়ে অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটে অনেক মানুষ মারা যায় এবং অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। তারপর থেকে আমি ভাবতে শুরু করি, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক আমি ল্যাপ্টপ নিয়ে বসে প্রোগ্রামিং শুরু করি এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর সফল ভাবে ডিভাইসটি তৈরি করতে সক্ষম হই। 


এ ডিভাইসের বিশেষত্ব হচ্ছে,  কোন কারণে যদি আপনার বাসায় গ্যাস লিকেজ হয়। তাহলে সে অ্যালার্ম দিবে পাশাপাশি একটি লাল এল ই ডি জ্বলবে এবং  এ ডিভাইসে থাকা ডিসপ্লের মাধ্যমে দেখা যাবে  আপনার রুমে কি পরিমাণ গ্যাস আছে তার ভ্যালুটা দেখাবে। গ্যাসের পরিমাণ যদি বিপদসীমার অতিরিক্ত হয়, তাহলে আপনি বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে থাকুন না কেন এই ডিভাইসে থাকা জি এস এম মডিউলের মাধ্যমে  আপনার ফোনে একটি ফোন কলের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা প্রেরণ করবে। ফলে আপনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। শিক্ষার্থীর এমন উদ্ভাবন দেখে খুশি শিক্ষকগণ। কলেজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে তাঁরা জানান । মেহরাজ হোসেন সাগর নোয়াখালী জেলাধীন বেগমগঞ্জ উপজেলার শ্রীধরপুর গ্রামের মাইন উদ্দিন মানিকের ছেলে। মাইন উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার ছেলে ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞান মনস্ক ছিলেন। সে ছোট বেলা থেকেই ইলেকট্রনিক্সের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় করতেন।  তাই সে ২০১৮ সালে এস এস সি পরীক্ষায়  সফল ভাবে  উত্তীর্ণ হওয়া পর তার পছন্দের টেকনোলজি ইলেকট্রনিক্স নিয়ে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন আমরা তার মতকে সম্মতি জানিয়ে তাকে পলিটেকনিকে ভর্তি করিয়ে দিলাম। তারপর থেকে শুরু হলো তার নতুন নতুন উদ্ভাবন। সে পলিটেকনিকে থাকা অবস্থায় ইলেকট্রনিক এবং রোবটিক্স নিয়ে ৩০ + প্রজেক্ট তৈরি করেন। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য রোবট মীনা, ফায়ার ফাইটার রোবট, ফেস মাক্স ডিটেকশন,   কিউআর কোড বেস সিকিউরিটি সিস্টেম সহ অন্যান্য। সে পলিটেকনিকে পড়া অবস্থায় চার বার  বিজ্ঞান মেলায় অংশ গ্রহণ করে প্রতি বারে বিজয়ী হয় এবং দুইবার কৃর্তি শিক্ষার্থী সম্মাননায় ভূষিত হন।



 এছাড়াও সে বিভিন্ন রোবট অলিম্পিয়াডে অংশ গ্রহণ করে বিজয়ী হন। তার এই উদ্ভাবন দেখে খুশি এলাকাবাসী। তাকে যদি সরকার বা কোন প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাহলে সে অনেক ভালো কিছু করতে পারবে এমন দাবি এলাকাবাসীর।
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024