আনুষ্ঠানিকভাবে তুরস্কের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। আগামী ১৪ মে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খবর আল-জাজিরার। 


উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে অনেকেই মনে করেছিল নির্বাচন পিছিয়ে নিতে পারে এরদোগান সরকার। তবে এ নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। বিগত ২১ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় আছেন এরদোগান। 


ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন এ নির্বাচনে এরদোগানের জয়লাভ করার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ বিরোধী ছয় দলের জোট থেকে সরে গিয়েছে একটি দল।


প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতৃত্বে ৬টি দলকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স বা টেবিল অব সিক্স। ধারণা করা হচ্ছিল, দীর্ঘদিনের শাসন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং ৬ দলের অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী জোটের কারণে এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন এরদোগান। তবে শুক্রবার জোটের অন্যতম শরিক গুড পার্টি (আইপি) জোট থেকে বেরিয়ে গেছে। এতে ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স এখন ৫ দলের জোটে পরিণত হয়েছে, যেখানে সিএইচপি-ই একমাত্র বড় দল।


ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুড পার্টির চেয়ারপারসন মেরাল আকসেনার শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, তার দলের পক্ষ থেকে আঙ্কারার মেয়র মনসুর ইয়াভাস এবং ইস্তান্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগ্লুর নাম প্রস্তাব করা হয় এবং আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে যে কোনো একজনকে বেছে নেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু জোটের অন্য শরিকরা আমাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।


তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে ৬ দলীয় জোটে আর জাতীয় স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব বলে কিছু নেই। তবে জোট ছাড়ার অর্থ এই নয় যে, জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিবর্তন হয়েছে। বরং আমাদের পক্ষ থেকে সরকারের সমালোচনা অব্যাহত থাকবে।


অপরদিকে জোটের বাকি ৫ দলের পক্ষ থেকে সিএইচপি প্রধান কামাল কিলিচদারোগ্লুকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।


অন্যদিকে গুড পার্টির পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা দুই রাজনীতিক অর্থাৎ ইস্তান্বুল ও আঙ্কারার মেয়র শুক্রবার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, তারা বর্তমানে ৫ দলীয় বিরোধী ব্লকের সিদ্ধান্তকে সম্মান করেন এবং প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কিলিচদারোগ্লুর পক্ষে কাজ করে যাবেন।


উল্লেখ্য, ২০০৩ সাল থেকে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পরে প্রেসিডেন্ট পদে আসেন এরদোগান। এবার তার সামনে ক্ষমতায় থাকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এসেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।


বিরোধী দলগুলির দাবি, সম্প্রতি তুরস্কের অর্থনীতিতে যে প্রবল চাপ এসেছে তা এরদোগানের নীতির জন্য। তার আমলে নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা বলতে আর কিছু তুরস্কে অবশিষ্ট নেই। তুরস্কে এখন একজনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালে এরদোগান প্রধানমন্ত্রীর অফিস অবলুপ্ত করে দেন এবং প্রেসিডেন্টের হাতে প্রায় সব ক্ষমতা কেন্দ্রিভূত করেন। এর আগে তুরস্কে প্রেসিডেন্টের পদ ছিল আলংকারিক, প্রকৃত ক্ষমতা ছিল প্রধানমন্ত্রীর হাতে। কিন্তু এখন প্রেসিডেন্টের হাতেই যাবতীয় ক্ষমতা আছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024