|
Date: 2023-03-18 18:04:12 |
◾ মোতালেব হোসাইন
চাকরির মাধ্যমে মানুষের পকেট ভরে কিন্তু ভ্রমনের মাধ্যমে মানুষের আত্মা বিশেষত্ব লাভ করে। দীর্ঘ বিরতির পর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি(যবিপ্রবিসাস) যাচ্ছে সাগরকন্যা কুয়াকাটাতে। সবার মধ্যে একধরনের চাপা উত্তেজনা, কখন পৌছাবো গন্তব্যে!
যথারীতি সবায় আগে থেকে প্রস্তুতি গ্রহন পর্ব শেষ করে বাসের অপেক্ষায়। এরমধ্যে সদস্যদের মধ্যে মজার খুনশুটি। বিভিন্ন পুরাতন ঘটনার স্মৃতিচারন করতেই হাসির রোল পড়ছে দলে।
সময় হতেই বাসে চড়ে বসলাম আমরা। বাস চলছে আর আমাদের খুনশুটি বেড়েই চলেছে। মাঝেমধ্যে একজনের গুনগুনিয়ে গাওয়া গানের সাথে সুর মিলাচ্ছে অন্যরা। বাসের অন্য যাত্রীরা ও আমাদের খুনশুটিতে মুগ্ধ। চলছে যবিপ্রবিসাস, চলছে খুনশুটি, বাড়ছে সাগর কন্যাকে কাছে পাওয়ার আকাঙ্খা।
এরমধ্যে বাস বরিশাল এসে পৌছালো আর আমরা রাতের খাবার শেষ করলাম। আবার আমাদের পথচলা শুরু। এবার একেবারে আমরা সাগরকন্যায় চলে যাব।
একরকম দুচোখ মিলাতেই বাস মামার ডাকাডাকি শুরু "চলে আসছে কুয়াকাটা, নামেন,নামেন"। বাস থেকে নামলো যবিপ্রবিসাস পরিবার। কিন্তু আমাদের আগে থেকে হোটেল বুক না করায় আমাদের এবারের গন্তব্য হোটেল বুক করা। চলছে হোটেল খোঁজার কার্যক্রম।
দীর্ঘ খোঁজাখুজির পর আমরা আমাদের কাঙ্খিত হোটেল পেয়ে গেলাম। রাতে অল্প ঘুমিয়ে সকালে বিচ এ যাব এটা আমাদের পরিকল্পনা। যথারীতি সকালে সকল সদস্য নিজ উদ্যোগে ঘুম থেকে উঠে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে দিলো।
আমরা ফুটবল নিয়ে রওনা দিলাম সাগরের উদ্দেশ্যে। সাগর পাড়ে যেতেই অন্যরকম অনুভূতি। এ যেন সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে ঢেলে সাজিয়েছেন তার সৃষ্টি। সাগরের বিশাল ঢেউ আচড়ে পড়ছে তীরে। ঢেউয়ের গর্জন মনে দিচ্ছে দোলা। অন্যান্য পর্যাটকরা মিলে যাচ্ছে ঢেউয়ের সাথে। আমরা ফুটবল নিয়ে গেছি তাই আমাদের প্রথম পরিকল্পনা ফুটবল খেলা।
যথারীতি যবিপ্রবিসাসের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দলে আলাদা হয়ে আমরা আমাদের খেলা শুরু করলাম এবং খেলা শুরু হতে না হতেই এক মিনিটের মধ্যে গোল ব্যবধানে এগিয়ে গেল সাধারণ সম্পাদকের দল। উল্লাসে মেতে উঠলো তারা। দুই শুন্য ব্যবধানে এগিয়ে থেকে তারা খেলা শেষ করলো।
এবার ঢেউয়ের সাথে মিশে যাওয়ার পালা। পাড় থেকে যবিপ্রবিসাস পরিবার দৌড়ে সাগরে আচড়ে পড়ল এবং মিশে গেলো সাগরের সাথে। রূপকথার গল্পের মতো ঢেউ আচড়ে পড়তে থাকলো আমাদের বুকে। আমরা মেতে উঠলাম খুনশুটিতে।
ছবি: সুমুদ্রে লেখক ও যবিপ্রবিসাসের সদস্যরা।
এরপর শুরু হলো বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির ফটো উঠানো। আমরা সাতরে সাগরের বেশ ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এবং গোসল করে হোটেলে ফিরলাম।
গরম কাপড় পরে চললাম দুপুরের খাওয়ার উদ্দেশ্যে। খাওয়া শেষে এবারের গন্তব্য রাখাইন পল্লি। ভ্যানে করে যাওয়ার সময় সকলে কন্ঠ দিলো বিভিন্ন গানে। আমরা রাখাইন পল্লি থেকে কিছু কেনাকাটা করে আমাদের হোটেলে ফিরলাম। রাতে বসবে আড্ডার আসর..
তীরে আচড়ে পড়া ঢেউয়ের সাথে আমাদের আড্ডার আসর চলছে। ঢেউয়ের শব্দের সাথে মিশে যাচ্ছে যবিপ্রবিসাসের গানের গলা। কেউ বা মনের উৎফুল্লতায় ঢেউয়ের সাথে পা মিলাচ্ছেন। কেটে যাচ্ছে রাত। আমরা চলে এলাম হোটেলে।
এভাবেই সাগরকন্যা যবিপ্রবিসাসের সাথে মিলে মিশে বন্ধনে সম্পৃক্ত হলো। আমরা ধরে রাখলাম স্মৃতি। এ এক নবীন মেলবন্ধন।
© Deshchitro 2024