◾ আবদুল আযীয কাসেমি


রমজান বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার অসামান্য এক উপহার। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের একটা নির্দিষ্ট মৌসুম থাকে, যেখানে তাঁরা বেশি থেকে বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। পুরো বছরের লোকসান সে মৌসুমেই তাঁরা ক্ষতি পূরণ করে ফেলেন। ঠিক তেমনি ইবাদতেরও রয়েছে কিছু লাভজনক মৌসুম। সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে বান্দা তার আখিরাতের জন্য প্রচুর পরিমাণে নেকি উপার্জন করতে পারে। 


রমজানকে কাজে লাগাতে আমাদের পূর্বসূরিদের আয়োজন ছিল দেখার মতো। হজরত আনাস (রা.) বলেন, সাহাবায়ে-কেরাম শাবান মাসের মধ্যেই জাকাত পূর্ণ আদায় করে দিতেন, যাতে রমজানকে একান্তভাবে ইবাদতের মধ্যেই কাটানো যায় এবং গরিব লোকদেরও যেন ইবাদতের সুযোগ হয়। (মুসনাদে আহমদ) অনেক মুত্তাকির ব্যাপারে ইতিহাসে পাওয়া যায়, তাঁরা রমজানের আগেই দোকান বন্ধ করে দিতেন। ব্যবসায়িক সব ব্যস্ততা শাবান মাসেই শেষ করতেন। অনেকেই তাঁদের দাস-দাসী বিক্রি করে দিতেন; কিংবা মুক্ত করে দিতেন রমজান উপলক্ষে। 


দুঃখজনকভাবে আমরা যেন যাবতীয় ব্যবসায়িক ব্যস্ততা তুলে রাখি রমজানের জন্য। রমজানে যেখানে নিজেকে ব্যস্ততা থেকে অবসর করা দরকার, সেখানে আমরা ব্যস্ততার কারণে ফরজ নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারি না। তারাবিহ সঠিকভাবে আদায় করেন এমন মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা। অনেকেই তারাবিহ এত দ্রুত শেষ করেন যে, কোরআনের শব্দগুলো পর্যন্ত ঠিকঠাক আদায় হয় না।


রমজানের এই অভাবনীয় লাভজনক মৌসুমের ফসল ঘরে তুলতে আমাদের হতে হবে অত্যন্ত চৌকস ও সাবধান। ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা সম্পন্ন করতে হবে আগেভাগেই। সম্ভব হলে রমজানের আগেই, যাতে এ মাসে অযাচিত সমস্যাগুলো এড়ানো যায়। এ ছাড়া অন্যান্য ব্যস্ততাও যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে। ফজিলতের মাস রমজান কাটুক ইবাদতে।


লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024