|
Date: 2023-03-28 16:04:05 |
বাবু সাহেব এবং তার স্ত্রী নাদিয়া ছোট চাকুরী করেন। দুজনের আয় দিয়ে টুকটাক করে এতোদিন সংসার চলে যেত। সব খরচ করে প্রতি শুক্রবার তাদের একমাত্র সন্তান নুজাইফাকে নিয়ে আশে পাশে পার্কে বা সিনেমা দেখতে যেতেন। এতোদিন সব কিছু স্বাভাবিক ভাবে চললেও গত এক বছর ধরে সংসারের হিসাব মিলাতে গিয়ে মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু কোন ভাবেই আয়-ব্যায় এর হিসাব মেলাতে পারেন না বাবু সাহেব। এদিকে রান্না ঘরে গেলে নাদিয়ার চেহারার ভুগোল ই পালটে যায়। কিভাবে বাজেটের মধ্যে সংসার চালাবেন সেই চিন্তায় ঘুম হয় না। অন্ন, বস্ত্র,বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা প্রতিটি খাতেই বেড়েছে খরচ। এই খরচ এর মায়াজালে পড়ে দিশেহারা সাধারন মানুষ।
গল্পের চরিত্র গুলো সম্পুর্ন কাল্পনিক হলেও গল্পটি আজ সত্যি। মানুষের আয় বাড়েনি, বেড়েছে অস্বাভাবিক দ্রব্যমুল্য। বাজার পরিস্থিতি এখন সাধারন মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। কেমন আছেন তারা? কিভাবে চলছে তাদের জীবন?
আমাদের দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিসের দাম প্রতিদিন ই বাড়ছে। সেই অনুপাতে বাড়ে না কর্মজীবী মানুষের আয়। বাজার যেন এক আতংকের নাম। মাছ, মাংস, ডিম, তেল সব কিছুর দাম যেন প্রতিদিন এক লাফে বাড়ছে। কিছুদিন আগেও যেই গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৬০০ টাকা, সেই মাংস এখন ৭০০ অতিক্রম করেছে। মাংস ব্যাবসায়ীদের ভাষ্যমতে এই দাম আরো বাড়বে। খাসীর মাংস তো সোনার হরিন। কেজিতে এই মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। সাধারন মানুষ পোল্ট্রি মাংসের উপর নির্ভরশীল। ১৫০ টাকা থেকে সেই পোল্ট্রি মুরগি জাত ভেদে ২৭০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। ডিমের খাচি ৩০০ টাকার আশে পাশেই আছে। এদিকে তরিতরকারি সব কিছুর ই দাম ৫০-৬০ টাকার আশে পাশে। শিবচর উপজেলার একটি প্রসিদ্ধ বাজার শেখপুর বাজার। এই বাজারে কথা হয় ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী আবু বকর সিদ্দিকের সাথে। তিনি জানালেন কয়েক বছর আগের আর বর্তমানের বাজার অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন “আগে ৫শত টাকা নিয়ে বাজারে আসলে ব্যাগ ভরে যেত। এখন হাজার টাকা দিয়েও মন মতো বাজার করা যায় না। মাছ, মাংস আগের চেয়ে কম খাই। ইনকামের সাথে ভারসাম্য তো রাখতে হবে”। তুলনামুলক কিছুটা স্থিতিশীল মাছের বাজার। তবে দেশী মাছের দাম একটু বেশি। একাধিক সাধারন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজারের সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক। এভাবে চললে সাধারন মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। এই ব্যাপারে সরকারকে নজরদারি ও বাজার নিয়ন্ত্রনে আরো কঠোর হতে আহবান করেছেন খেটে-খাওয়া মানুষজন।
© Deshchitro 2024