◾ মাহমুদুল হক হাসান
মহান আল্লাহ্ তায়ালার অসংখ্য নিয়ামতরাজির মধ্যে বৃক্ষ একটি নেয়ামত। প্রাণীকুলের জীবনধারণের জন্য বৃক্ষ অপরিহার্য। প্রকৃতির মাঝে মানুষ এক স্বর্গীয় স্বাদ অনুভব করে। অনেকেই প্রকৃতি বলতে শুধু বৃক্ষকেই বোঝেন।মূলত প্রকৃতি বলতে,জাগতিক বিশ্বের মানবসৃষ্ট নয় এমন সব দৃশ্য-অদৃশ্য বিষয় এবং প্রাণকে বুঝায় যা স্বয়ং বিশ্ব স্রষ্টার সৃষ্ট। যেমন:-পাহাড় -পর্বত, খাল-বিল, সাগর-মহাসাগর, পশু-পাখি, চাঁদ-তারা, আকাশ-বাতাস, গাছ-পালা, বন-জঙ্গল ইত্যাদি। প্রাকৃতিক ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ অবিকল্প ভূমিকা পালন করে। মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বৃক্ষসৃষ্টি ও পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
"আর আমি বিস্তৃত করেছি যমীনকে,তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা এবং তা থেকে উদগত করেছি নয়নাভিরাম সব ধরণের উদ্ভিদ। এটা আল্লাহর অনুরাগী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য জ্ঞান ও উপদেশ স্বরূপ। আকাশ থেকে আমি বর্ষণ করি কল্যাণকর বৃষ্টি অতঃপর তা দ্বারা আমি উৎপন্ন করি বহু বাগান,পরিপক্ক শষ্যরাজি আর উচু উচু খেজুরগাছ। যাতে রয়েছে কাঁদি কাঁদি খেজুর। সূরা ক্বাফ, আয়াত (৭-১০)
বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু।পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।সাম্প্রতিক সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে জনসংখ্যার চাপ, নগরায়ন,বিষাক্ত ধোঁয়া ও বাতাসে সীসার পরিমাণও। আমরা এসব পরিবেশগত বিরূপতার ফলে মুখোমুখি হচ্ছি বন্যা, খরা, ঝড়, টর্নেডো সাইক্লোন ও ভূমিকম্পের মতো নানা প্রতিকূলতার। এসব প্রতিকুলতা থেকে সুরক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা অনবদ্য। অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি রোধ, জলবায়ুর উষ্ণতা রোধ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও গাছপালার অবদান অনস্বীকার্য। ইসলাম বৃক্ষরোপণে ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করেছে।বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব বোঝাতে মহানবী (স)ইরশাদ করেন, যখন কোন মুসলিম একটা ফলবতী গাছের চারা রোপন করে আর এতে ফল আসার পর সে নিজে অথবা অন্য কোন মানুষ তা থেকে যা আহার করে, তা তার জন্য সদকা। যা চুরি হয়,যা কিছু গৃহপালিত পশু বা অন্যান্য পাখ-পাখালি খায় তাও তার জন্য সদকা। (বুখারী ও মুসলিম)। বৃক্ষ রোপনে মানুষকে উৎসাহিত করতে পবিত্র কুরআনের সূরা আনয়ামে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আর তিনিই (আল্লাহ) উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করেছেন যা মাচায় তুলে দেওয়া হয় এবং যা মাচায় তোলা হয় না, সৃষ্টি করেছেন খেজুর গাছ,বিভিন্ন স্বাদবিশিষ্ট খাদ্যশস্য ও জলপাই বাগান। তারা একে অন্যের মত এবং আলাদা। যখন গাছ ফলবতী হয় তখন তোমরা গাছের ফল আহার করবে আর ফসল কর্তনের সময় তার হক প্রদান করবে এবং অপচয় করবে না।কেননা আল্লাহ তায়ালা অপব্যয়ীকে পছন্দ করেন না। সূরা আনআম (আয়াত ১৪১) রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে কৃষি কাজ ও বৃক্ষরোপণ করতে উৎসাহিত করেছেন। বৃক্ষরোপণকে হাদিসে উত্তম ইবাদতের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যাকে ইসলামের ভাষায় সদকায়ে জারিয়া বলে। বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল (স) অন্যত্র বলেন, তুমি যদি নিশ্চিত ভাবে জানতে পারো যে,কেয়ামত অতি নিকটে আর তোমার হাতে একটি গাছের চারা থাকে তারপরও তা যমীনে রোপন করো। বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে মানুষ পার্থিব জীবনে আর্থিক লাভবানের পাশাপাশি পরকালেও কল্যাণকামী হবে। যদি কারো রোপনকৃত বৃক্ষে কোন পাখি বাসা তৈরি করে,ডালে বসে বিশ্রাম করে,গাছের ছায়ায় কোনো পথিক ক্লান্ত শরীর জুড়িয়ে নেয়, তাতেও রোপনকারী ব্যক্তির আমলনামায় সওয়াব লেখা হবে আর এটি সদকায়ে জারিয়া রূপে গণ্য হবে।
◾ মাহমুদুল হক হাসান
লেখক ও সংগঠক
১ দিন ৭ ঘন্টা ১৮ মিনিট আগে
৭ দিন ১ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৮ দিন ১ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
১২ দিন ১১ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
১৪ দিন ১৯ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
২১ দিন ৭ ঘন্টা ৭ মিনিট আগে
২২ দিন ৫ মিনিট আগে
২২ দিন ২১ ঘন্টা ৩৭ মিনিট আগে