শৈলকুপা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলের মতবিনিময় আদমদীঘিতে চোলাই মদ বিক্রেতা দুই জনের জেল-জরিমানা বগুড়া শাজাহানপুরে রাণীরহাট গবাদিপশুর হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, জরিমানা ৫০ হাজার টাকা ! লালপুরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন, নালিতাবাড়ীতে কারিতাসের আয়োজনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন শেরপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে কথিত সাংবাদিক নোমান গ্রেফতার গোয়ালন্দে ভেজাল দই ও ললিপপ তৈরির দায়ে এক ব্যক্তিকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড মোংলা-ঘাষিয়াখালী এলাকায় টেকসই বেড়ি বাঁধের দাবিতে মানববন্ধন শ্রীবরদীর কাকিলাকুড়া ইউনিয়নে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন শেরপুরের শ্রীবরদীর সিংগাবরুনা ইউনিয়নে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন লালপুরে ঈদ উদযাপন ও পশুর চামড়া সংরক্ষণে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত চামড়া সংরক্ষণে শ্যামনগরে সরকারিভাবে লবন সরবরাহ শান্তিগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে জেলের মৃত্যু পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে শান্তিগঞ্জে ভিজিএফ এর চাল বিতরণ সম্পন্ন ঝিনাইগাতীতে কারিতাসের আয়োজনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন লালপুরে তীব্র গরমে তাল শাঁসের কদর বাড়ছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্তৃক খুলনা অফিস উদ্বোধন ঈশ্বরগঞ্জে অবিরাম বর্ষণে সড়ক ভেঙ্গে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীল ।। যান চলাচল বন্ধ দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া পর্যটন থেকে ভেসে এলো অজ্ঞাতা যুবকের মরদেহ ‘মানবিক করিডোর নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি’

বেঁচে থাকার জন্য জীবনে খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না

ছবি : জীবনে উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতীকী




বেঁচে থাকার জন্য জীবনে খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না


আপনি যখন নিজেই নিজের পুরোপুরি যত্ন নিতে আর সক্ষম নন, এবং আপনার সন্তানরাও যখন নিজেদের কাজ, তাদের সন্তান-সন্ততি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে; তখন আপনার যত্ন নেওয়ার কোনও সময় তাদের থাকবে না; অগত্যা নার্সিংহোমই তখন হয়ে উঠে ‘নিরাপদ’ ঠাঁই!


সুসজ্জিত পরিষ্কার একক কক্ষ, বিনোদন সুবিধা, সুস্বাদু খাবার, সুন্দর পরিবেশসহ নার্সিং হোমের পরিষেবাটিও হয়তো খুব ভাল; তবে এসবের দামটিও নেহাত কম নয়। আমি যতটুকু পেনশন পাই, তা দিয়ে এ খরচ পোষানো সম্ভব নয়। তবে আমার সৌভাগ্য যে, আমার নিজের বাড়ি আছে। আমি যদি এটি বিক্রি করি, তবে অর্থ কোনও সমস্যা নয়। আমি এটি অবসর নেওয়ার জন্য ব্যয় করতে পারি এবং বাকি পয়সা আমার ছেলের জন্য রেখেও দেয়া যেতে পারে। তবে পুত্রটি আমার বুঝদার; আমাকে বলেছে, “আপনার অর্থ এবং আপনার সম্পত্তি আপনারই উপভোগ করা উচিত, আমাদের সম্পর্কে চিন্তা করবেন না”। বুঝলাম এখন আমাকে নার্সিংহোমে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই হবে।


কিন্তু কী করে এতোসব ছেড়ে যাওয়া যাবে! কতোদিনের জোগাড় এসব- বাক্স, ব্যাগ, ক্যাবিনেট এবং ‘প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয়তা’য় ভরা ড্রয়ারগুলি। এসব কিছুর সাথে যে আমি কী নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছি!


রয়েছে আমার শখের সংগ্রহশালাও। প্রচুর স্ট্যাম্প, কয়েকশো বেগুনি মাটির চা পাত্র, পান্না এবং আখরোটের অ্যাম্বারের দুল এবং দুটি ছোট হলুদ ক্রোকার। রয়েছে আমার শখের বইগুলোও। এছাড়াও কয়েক ডজন বোতল বিদেশি মদ রয়েছে। রয়েছে গৃহস্থালী সামগ্রীর সম্পূর্ণ সেট, রান্নার বিভিন্ন পাত্র, হাঁড়ি এবং কলসী, চাল, তেল, নুন, নুডলস, ফ্লু, মশলা। এছাড়া কয়েক ডজন ফটো অ্যালবামও রয়েছে …, জিনিসগুলিতে ঠাসা বাড়ির দিকে তাকিয়ে আমি কেমন আনমনা হয়ে গেলাম!


একটু পরেই নার্সিংহোমে আমার জন্য বরাদ্দ রুমটির দিকে তাকাই- একটা ক্যাবিনেট, একটি টেবিল, একটি বিছানা, একটি সোফা, একটি ফ্রিজ, একটি ওয়াশিং মেশিন, একটি টিভি, একটি ইনডাকশন কুকার এবং একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন- এ সমস্ত কিছু সত্যই হয়তো আমার প্রয়োজন হবে। তবে বুঝলাম আমি যে সম্পদ সারা জীবনধরে জমিয়েছি তা সঞ্চয় করার কোনও জায়গা এখানে নেই।


আমি অনুভব করলাম, আমার জোগাড় করা তথাকথিত সম্পদগুলো আসলে আমার নয়। আমি কেবলি ছিলাম এগুলোর রক্ষক বা সেবকমাত্র! মৃত্যুর পর এর কিছুই আমার সাথে যাবে না।


ভাবলাম, আমার বাড়ির জিনিসগুলো দান করে দিব। আজকালকার বাচ্চারা (আমার নাতি-নাতনিরা) এসবের কদর করবে না। ওদের জন্য এগুলো ‘ব্যাকডেটেড’। কল্পনা করতে পারি, আমার যাবার পরে এসবের কী হবে! সমস্ত পোশাক এবং বিছানাকে ফেলে দেওয়া হবে; কয়েক ডজন মূল্যবান ছবি ধ্বংস হয়ে যাবে; বই স্ক্র্যাপ হিসাবে বিক্রি হবে। পুরনো মূল্যবান মেহগনি আসবাবগুলোও ব্যবহারযোগ্য নয় বিধায় স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে দেয়া হবে।


প্রিয় বাড়িটিকে, প্রতিবেশীদের বিদায় জানালাম। সাথে নিলাম ক’টিমাত্র প্রিয় জামা, বই, টি-পট, আমার আইডি কার্ড, সিনিয়র সিটিজেন সার্টিফিকেট, স্বাস্থ্যবীমা কার্ড, পরিবারের রেজিস্টার এবং ব্যাংক কার্ডটি।


আসলে জীবন সায়াহ্নে এসে লোকমাত্রই বোধহয় বুঝতে পারে- ‘আমাদের আসলে খুব বেশি প্রয়োজন হয় না। সুখী হতে আসলেই অতিরিক্ত কিছু লাগে না। খ্যাতি এবং যশের প্রতিযোগিতা করা হাস্যকর। জীবন বিছানা ছাড়া আর কিছু নয়।’


তাই ষাটোর্ধদের নিয়ে আমাদের ভাবা উচিত। জীবনের শেষ যাত্রাটির ব্যাপারে আমাদের যত্ন সহকারে বাস্তবভিত্তিক চিন্তা করা উচিত।

লেখক :

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু নাছের 

কলামিস্ট, কবি, উপন্যাসিক ও গবেষক 


আরও খবর