তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাংবাদিক মধুপুরে ছেলের হাতে মা খুন স্ত্রী গুরুতর আহত মিরসরাই সমিতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইফতার ও দোয়া মাহফিল শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে ব্যাক্তির দায়িত্ব দল নিবে না- ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন পাঁচবিবিতে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেফতার নান্দাইলে বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত নান্দাইলে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পীরগাছায় হাসনা পাইটকাপাড়া জামে মসজিদের দ্বিতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্থর রাজবাড়ীতে বিএনপির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অটোরিকশা চার্জে থেকে আগুনে পূর্ণ ৬টি দোকান পাংশায় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালিত পাংশায় দেড়শ পিস ইয়াবাসহ আটক ১ পাংশায় মোটরসাইকেল ও মাদকসহ গ্রেফতার ২ ঝিনাইদহে জামায়াত ও বিএনপির দুই গ্রুপ সংঘর্ষে আহত ৬ সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন কুবিতে লক্ষ্মীপুর স্টুডেন্ট’স ক্লাব'র ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিল বড়লেখায় কোয়াবের উদ্যোগে খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা ও ইফতার মাহফিল বড়লেখায় হঠাৎ ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি,ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করল সাতকানিয়া - লোহাগাড়া মানবিক ফাউন্ডেশন।

বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্প দশ মাস মেয়াদী প্রকল্পের কাজ তিন বছরে ৫০ শতাংশ অগ্রগতি

বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্প দশ মাস মেয়াদী প্রকল্পের কাজ তিন বছরে ৫০ শতাংশ অগ্রগতি




মোঃ আজগার আলী, সদর উপজেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:  

সাতক্ষীরার বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্পের ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দশ মাস মেয়াদী তিন বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি বলতে এ পর্যন্ত ৪০/৪৫ শতাংশ। প্রকল্পটি হাতবদল হয়েছে তিন বার। এভাবেই চরম অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্যে চলছে সাতক্ষীরার বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্প।

বেতনা নদী পাড়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ একের পর এক হাতবদল হওয়ার কারণে বেতনা নদী পুনঃখনন কাজ দায়সারাগোছের হচ্ছে। একেক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কিছুদিন কাজ করার পর টাকা পয়সা নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আসে অন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এভাবে একের পর এক হাতবদল হওয়ার কারণে কাজের মান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

তবে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দাবি প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমান কাজ খুব দ্রুত গতিতে হচ্ছে। এ পর্যন্ত কাজের অনুকুলে ৪৮ শতাংশ টাকা দেয়া হয়েছে।


সরেজমিনে বেতনা নদী পুনঃখনন এলাকা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গায় গিয়ে দেখা যায় খুলনার সততা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কয়েকটি স্কেবেটর মেশিন দিয়ে নদী খনন করছেন। কাজে দায়িত্ব থাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান আসাদের কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এই কাজটি নিয়েছি কিছুদিন হলো মাত্র। এর আগে আক্কাজ আলী নামের এক ঠিকাদার কাজ করতে করতে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে মুল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমাদের দায়িত্বে দিয়েছেন। আমরা খুব দ্রুতই কাজ শেষ করবো বলে আশা করছি।


ঝাউডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আশিষ কুমার ও আব্দুর রশিদ জানান, বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্পের কাজটি একটানা হচ্ছেনা, এক ঠিকাদার কিছুদিন করার পর চলে যায় আরেক ঠিকাদারের কাছে। এভাবে একের পর এক হাতবদল হচ্ছে। কিন্ত কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তারা আরও জানান, বেতনা নদী যেভাবে পুনঃখনন হচ্ছে তাতে খুব উপকারে আসবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ স্কেবেটর মেসিন দিয়ে তলার পলীমাটি উঠিয়ে নদীর পাড়েই রেখে দেয়া হচ্ছে। যা বর্ষা হলেই ধসে গিয়ে আবারও ভরাট হবে বেতনা নদী। এছাড়া মুল নদীর ৫০ শতাংশও খনন হচ্ছেনা বলে জানান এই গ্রামবাসি।

নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা ও পরিবেশকর্মী অধ্যক্ষ আশেক ইলাহী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদার যোগসাজস করে বেতনা নদী পুনঃখননে চরম অনিয়ম করে চলেছে। মূল ঠিকাদার কেন কাজ হস্তান্তর করবে? সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোজকন কেনই বা এই সুযোগ করে দেয়? সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো প্রকল্পের কাজ এক ঠিকাদারী পেয়ে অন্য ঠিকাদারকে দিতে পারবেনা। এতে কাজের মান ভালো হয়না। তিনি বলেন, বেতনা নদী পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ শুরু থেকে অদ্যাবধি ভালো কোনো অগ্রগতি নেই। তাছাড়া খনন কাজ যেভাবে হচ্ছে তা সরকারের কোনো কাজে আসবেনা।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেতনা নদী পুনঃখননে শুভংকরের ফাঁকি চলছে সাতক্ষীরাতে। ঠিক বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে নদী খনন শুরু করেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর পর যেই বর্ষা চলে আসে আবার কাজ বন্ধ রাখা হয়। ভাবা যায়? ১০মাসের কাজ তিন বছরেও শেষ হয়না। এছাড়া প্রকল্পের বরাদ্দের অর্থ দেয়া হয়েছে কাজের অগ্রগতি বিবেচনা না করে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার নং ১, ২, ৬, ৮ এবং ৬-৮ (এক্সটেনশন) এর নিষ্কাশন ব্যবহার উন্নয়ন প্রকল্প ২০২১-২২ এর অধিনে ১৮ নং প্যাকেজ ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলার হাজিপুর হতে কলারোয়া উপজেলা পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার বেতনা নদী পুনঃখননের জন্য পটুয়াখালী জেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবুল কালাম আজাদকে ৩০ জুন ২০২২তারিখে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ১০ মাস মেয়াদ অর্থাৎ ২১-০৬-২০২৩ তারিখে কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ১০ মাসের পরিবর্তনে ২ বছর পেরিয়ে গেলেও বেতনা নদী খননে তেমন অগ্রগতি নেই। স্থানীদের দাবি কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি ৫০ শতাংশও হয়নি এখনো। তবে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি নিজে না করে সাতক্ষীরার জনৈক আক্কাজ আলী নামের এক ব্যক্তিকে কাজ করার দায়িত্ব দেন। কিন্তু আক্কাজ আলী এ প্রকল্পের কাজটি গতানুগতিকভাবে কিছু করে সময়ক্ষেপন করতে থাকে। এক পর্যায়ে খুলনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সততা এন্টার প্রাইজের কাছে হস্তান্তর করেন ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ।

এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পটুয়াখালীর ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কাজটি প্রথম পর্যায়ে সাতক্ষীরার আক্কাজ আলীকে দিয়ে আমি ভুল করেছি। আক্কাজ আলী কাজটি নিয়ে বহু সময় নষ্ট করে দিয়েছে। পরবর্তীতে খুলনার সততা এন্টারপ্রাইজকে দেয়া হয়েছে। তারা খনন কাজ দ্রুত করছে। তাছাড়া কাজ শিডিউল অনুযায়ী বুঝে দেয়া হবে। কাজে কোনো ত্রুটি হবেনা।

এব্যাপারে জানতে চালইলে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, কিছুদিন হলো তিনি সাতক্ষীরাতে যোগদান করেছেন। তার পরও বেতনা নদী পুনঃখননে কোনো অনিয়ম হলে সেটা মেনে নেয়া হবেনা। কাজের অগ্রগতি অন্তত ৫০ শতাংশ হয়েছে দাবি করে তিনি আরো বলেন, কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য দাগিত দেয়া হয়েছে। তবে কাজের অনুকুলে এ পর্যন্ত ঠিকাদারকে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

Tag
আরও খবর