জামালপুরের বকশীগঞ্জে বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সদলবলে উপস্থিত হওয়া পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরসহ তাঁর সাহযোগিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

গতকাল শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে পৌর শহরের মধ্য বাজার থেকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ তালুকদারের সমর্থনে

একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বকশীগঞ্জ থানা গেটে বিক্ষোভ করে মিছিলকারীরা। পরে যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম সওদাগরকে গ্রেপ্তার করতে থানা-পুলিশকে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।

এসময় অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি রকিবুল হাসান বাবুল, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কাইছার আমিন এবং সাধারণ সম্পাদক লাবলু।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব আব্দুল কাইয়ুম বলেন, গত ৫ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বকশীগঞ্জে বাট্টাজোড় পানাতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিক্রয় প্রতিনিধি রিপন মিয়া। ওই ঘটনায় গত ২৬ আগষ্ট রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন রিপনের ছোট ভাই আকতার হোসেন। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ ১৮ জনের নামোল্লেখ করা হয়। নামীয় ১৮ জনের মধ্যে বকশীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জুমান ও সমাজসেবক হাজী আমানুল্লাহসহ বকশীগঞ্জের ১৩ জনকে মামলায় আসামি করা হয়। এসব আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি। থানায় স্মারলিপি দিয়েছি।'

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় খয়ের উদ্দিন মাদ্রাসা মাঠে বকশীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে কয়েকজন সহযোগীকে সঙ্গে বিএনপির সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মানিক সওদাগরের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা  নজরুল ইসলাম সওদাগর। তাঁকে ঈঙ্গিত করে সম্মেলনে আসা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, 'একটি কথা দুঃখজনভাবে না বলে পারছি না। আজ যখন এই সম্মেলনে আসলাম। তখন দেখলাম পতিত স্বৈরাচারের দোসর এই বকশীগঞ্জে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাধারণ বিএনপির নেতা-কর্মীদের মতোই বিএনপি নেতা-কর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। তিনি একসময় যুবদলের বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরবর্তীতে বিএনপির দুঃসময়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন। এখানকার যুবলীগের দায়িত্ব পালন করেছেন। পৌরসভার মেয়র হয়েছেন। আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের সময়ে লুটপাটের মহোৎসব করেছেন। আজকে আবার বিএনপির নেতা-কর্মীর মতো বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মিশছেন। বকশীগঞ্জের নেতা-কর্মীরা যদি এটা নেমে নেন। কিন্তু জামালপুরের বিএনপি এটা মেনে নেবে না। আমরা বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে আহ্বান করছি, আগামী তিন দিনের মধ্যে যদি আওয়ামী লীগের ওই দোসরকে গ্রেপ্তার না করা হয়, এর দায়ভার আপনাদেরকেই নিতে হবে।'

বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, 'সাবেক পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা স্মারকলিপি দিয়েছে। তাঁর 

বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। তবে গত ৫ আগষ্টের পর থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'