বাংলাদেশ কোস্টগার্ড প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, বনজ সম্পদ রক্ষা-সংরক্ষণ, মৎস্যসম্পদ রক্ষা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষ করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলদস্যু ও বনদস্যু নির্মূল, জেলেদের নিরাপত্তা প্রদান এবং নৌপথে অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
এককথায় বলা চলে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূল ও নদী তীরবর্তী অঞ্চল এবং সুন্দরবনের সার্বিক নিরাপত্তায় কোষ্টগার্ডের ভূমিকা অপরিসীম।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার মোঃ সিয়াম-উল-হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তীতে সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের ৫ই আগস্ট পরবর্তী কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশ সেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, গত বছরের ৫ই জানুয়ারি বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমায় ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বর্ডার (IMBL) অতিক্রমকারী ৯৫ জন ভারতীয় জেলেকে ৬টি বোটসহ হস্তান্তর এবং ৯০ জন বাংলাদেশি জেলেকে ২টি বোটসহ দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা। সন্ত্রাস দমনে অপারেশন পরিচালনা করে ৯০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৯০ রাউন্ড গুলি, ১০ টির অধিক বোমা ও ককটেলসহ ৮৫ জন সন্ত্রাসী ও ডাকাত আটক করা হয়। মাদক নিয়ন্ত্রণে ৫ হাজার পিসের অধিক ইয়াবা, ২৪ কেজি গাঁজা, ২০০ টির বেশি বিদেশি মদ, হুইস্কি ও বিয়ার জব্দ করা হয়। পাশাপাশি চোরা চালান রোধে ৮১ হাজার ভারতীয় বিড়ি, ৬৩৫ পিস সুন্দরবনের কাঠ, ৬০০ কেজি হরিণের মাংস, ৮টি হরিণের চামড়া ও ২০০টির বেশি ফাঁদসহ ২০ জন হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়। এছাড়াও ১,০০০ কোটি টাকার সমমূল্যের অবৈধ জাল, ৩০০ কোটি টাকার রেণুপোনা, ২,৫০০ কেজি বিষাক্ত চিংড়ি এবং ১০,০০০ কেজি জাটকা, ১২০ টন চোরাইকৃত লোহার স্ক্র্যাপ, ৭ হাজার লিটার ডিজেল ও হাইড্রোলিক অয়েল এবং ১,২০০ লিটার অবৈধ পেইন্ট এবং সুন্দরবনে অপহৃত ৩৫ জন জেলে এবং সমুদ্রে দুর্ঘটনায় পতিত বোট থেকে ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
উপকূলীয় অঞ্চলে ২,০০০ এর বেশি দুস্থ, অসহায় ও শিশুদের চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরবনে ভ্রমনে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে গত রমজানে মোংলা, রূপসা, নোয়াপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান গুদামে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে নিয়ম বহির্ভূত মজুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, বন বিভাগ, মৎস্য অধিদপ্তর এবং শিপিংসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন শুধু উপকূলীয় নিরাপত্তা নয়, বরং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের জান-মাল রক্ষা, বন্দর নিরাপত্তা, বনজ সম্পদ সংরক্ষণ এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জন করেছে এবং ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
১ ঘন্টা ৩৬ মিনিট আগে
১ ঘন্টা ৩৯ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে
২ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৮ মিনিট আগে