জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটররা কর্মবিরতি পালন করায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে সেবা গ্রহীতাদের। এতে সকল সরকারি লেনদেন বন্ধ থাকায় সরকারি অর্থ পরিশোধে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নসহ চাকুরিতে বিভিন্ন বৈষম্য দূরীকরণ ও ১১ দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে কর্মবিরতি করছেন হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটররা।
বুধবার উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিসে শুধুমাত্র হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা দপ্তর খুলে বসে আছেন। সেখানে দুই জন অডিটর থাকলেও তারা দাবি আদায়ের জন্য কর্মবিরতি করছেন। ফলে টেবিলে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি বিল জমা হয়ে আছে। কিন্তু অডিটররা কর্মবিরতিতে থাকায় বিলগুলো পাশ হচ্ছে না। গত ০৩ সেপ্টেম্বর থেকে অডিটররা কর্মবিরতিতে থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের ২ টি, খাদ্য বিভাগের ২টি, শিক্ষা অফিসের ২টি, পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ৩টি, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের ঠিকাদারী বিল ৪টি, স্বাস্থ্য বিভাগের ৭টি, সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ২টি, সরকারি পোল্ট্রি ফার্মের ১৭টি, মৎস্য অফিসের ৪টি, সমবায় অফিসের ১৪টি, কৃষি অফিসের ২টি, প্রাণিসম্পদ অফিসের ২টি, প্রকৌশল অফিসের ২টি, হর্টিকালচার সেন্টারের ১০টি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের ১টিসহ এ পর্যন্ত মোট ৭৪টি বিল আটকে আছে। বিলগুলোর মোট পরিমান প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। এ কারণে সরকারি অর্থ পরিশোধ ও পেনশন উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা গ্রহীতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) কার্যালয়ের আওতাধীন অডিটরদের বেতন গ্রেড বৈষম্য দূর করে ১১ থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার লক্ষ্যে গত ০৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রধান কার্যালয়ে গণঅবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন অডিটররা। একই সাথে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটররা কর্মবিরতি করছেন।
উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর সাদ্দাম হোসেন জানান, ২০১৬ সালের সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশনের রায় সিএজি ও অধিনস্ত অফিসের পদকে ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার রায় দেন। অর্থ মন্ত্রণালয় এতে সম্মতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি দুষ্ট চক্রের কারণে কেউ ১০ম গ্রেডে উন্নীত হতে পারেননি। দেশের সবোর্চ্চ আদালতের রায় থাকার পরও অডিটর পদকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত না করা, আদালত অবমনানা ও চরম বৈষম্য মনে করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তবে জিও জারি হলে আমরা এক মিনিটও কর্মবিরতিতে থাকবো না। আমরা কাজ করতে চাই, প্রাপ্য এবং যৌক্তিক অধিকার চাই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ শেখ বলেন, আমার দপ্তরের সরকারি লেনদেনের বিল দাখিল করেছি। বিলগুলো এখনো পাশ না হওয়াই ঠিকাদারদের অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছেনা। এতে আমরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি।
উপজেলা সমবায় অফিসার আবু হাসেম মো. মোকাররম হোসেন বলেন, আমার অফিস থেকে এ মাসে মোট ১৪টি বিল দাখিল করেছি। কিন্তু হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটররা কর্মবিরতিতে থাকায় তারা বিলের টোকেন দিচ্ছেন না। এতে করে অর্থ পরিশোধের বিলগুলো আটকে আছে। কবে নাগাদ বিল হবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই। এতে আর্থিকভাবে আমরা সমস্যায় আছি।
ভোগান্তির কথা স্বীকার করে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা প্রতুল কুমার মন্ডল বলেন, সকল সরকারি বিল আমাদের কাছে আসলে অডিটররা অনলাইনে তাদের এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টোকেনের মাধ্যমে বিল পাশ করে থাকেন। আমি শুধুমাত্র অনুমোদন করি। তাদের কর্মবিরতিতে সরকারি অর্থ পরিশোধ আপাতত বন্ধ রয়েছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইবাস প্লাস সার্ভারে যে গুলো বিল হয় সেগুলো প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বলেন, অডিটরদের কর্মবিরতিতে এই উপজেলার সরকারি অর্থ পরিশোধ আপাতত বন্ধ আছে। এতে সরকারি দপ্তর এবং সেবা গ্রহীতারা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ বিষয়ে বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের সাথে কথা হয়েছে। তারা সমাধানের বিকল্প খুঁজছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।
৩ দিন ১৮ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৭ দিন ১২ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে
৭ দিন ২৩ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১৩ দিন ১৯ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
১৬ দিন ১৮ ঘন্টা ৫৯ মিনিট আগে
২০ দিন ২০ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
২৩ দিন ১২ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে
২৩ দিন ২০ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে