বর্ষার শেষলগ্নে কক্সবাজারে অতিরিক্ত বর্ষণে পাহাড়ী ঢলে জেলার শতাধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কারণে ফের বন্যার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অতি বৃষ্টির কারণে পর্যটন এলাকা কলাতলী, পৌর এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ড, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাঁও, কক্সবাজার সদরের নিম্নাঞ্চলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছে বীজতলা, পানের বরজ এবং সবজি ক্ষেত। ইতিমধ্যে জেলা শহর ও উপজেলাগুলোর লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁকখালী এবং মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
টেকনাফের সদর ইউনিয়নের সদস্য মো. ফারুক বলেন, টেকনাফে ২ দিনের ভারি বর্ষণে ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অর্ধলাখ মানুষ। অনেকের ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। এতে করে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় থেকে টানা বৃষ্টিতে টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর , বাহারছড়া শামলাপুর, সাবরাং ইউনিয়নের অনেক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
বিশেষ করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী, লেদা ও হোয়াব্রাং এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার।
রঙ্গিখালী লামার পাড়া এলাকার মামুনুর রশিদ আক্ষেপ করে বলেন, আধা ঘন্টা বৃষ্টি হলে ডুবে যায় ঘর-বাড়ি। এভাবে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ৪/৫ বার কষ্ট পেতে হয়। বাড়ির ভেতরের আসবাবপত্রসহ সবকিছু পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এ কষ্টে বাড়ির সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এ এলাকার কষ্টের কথা কেউ দেখে না। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা শুধু আশ্বাস দিয়ে চলে যায়।
রঙ্গিখালী লামার পাড়া স্থানীয়রা জানান, লামারপাড়ায় যারা বসবাস করে তারা সবাই পানি নিয়ে যুদ্ধে থাকে। এটা এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। তাই ঘরের জিনিসপত্র উপরে তুলে রাখা হয়। আজকে বাড়ির ভেতর দুই ফুট পানি উঠে ফ্রিজসহ অনেককিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এভাবে আর থাকতে চাই না-বাড়ি ঘর বিক্রি করে চলে যাব।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারি আবওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮৮ থেকে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সাথে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজ দুপুর থেকে কক্সবাজারে অতি ভারী বর্ষণ শুরু হয়।
সেই কারনে শহর ও কলাতলিতে অনেক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেড ক্রিসেন্টের সহযোগিতায় মাইকিং করা হচ্ছে।
পৌর এলাকায় যারা পানিবন্দি ও পাহাড় ধ্বসের আশংকায় বসবাস করছেন তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসার জন্য অনুরোধ করছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, জেলায় অতি বৃষ্টির ফলে সমস্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাজ করতে বলা হয়েছে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছেন তাদেরকে সংশ্লিষ্ট আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসার অনুরোধ করেন তিনি।
২ দিন ১৮ ঘন্টা ১৬ মিনিট আগে
১১ দিন ২০ ঘন্টা ৫২ মিনিট আগে
১৩ দিন ২০ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
১৭ দিন ২২ ঘন্টা ৫৩ মিনিট আগে
১৭ দিন ২২ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
৩৩ দিন ১০ ঘন্টা ৩ মিনিট আগে
৩৫ দিন ২১ ঘন্টা ৩৩ মিনিট আগে
৩৫ দিন ২২ ঘন্টা ৫১ মিনিট আগে