দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের কর্নাই আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার দপ্তরী মোঃ আব্দুল খালেক নশীপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রফিকুল ইসলাম নামে অষ্টম শ্রেনী পাশের সনদ দিয়ে দীর্ঘ প্রায় ২১বছর যাবৎ সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে গ্রহন করছে সরকারি অর্থ।অথচ সব কিছু জানার পরেও মাদ্রাসা কতৃপক্ষ এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে নেয়নি কোন পদক্ষেপ।শুধু নাম নয় বয়সেও রয়েছে গরমিল।তবুও স্বপদে এখনো বহাল।
কর্নাই আদর্শ দাখিল মাদ্রাসায় সরেজমিনে গিয়ে মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সালামের সাথে কথা বললে তিনি জানান ১৯৯৬সালে রফিকুল ইসলাম নশিপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেনী পাশের সনদ নিয়ে এই মাদ্রাসায় দপ্তরী হিসেবে যোগদান করেছে।কিন্তু তখন কোন ভোটার আইডি কার্ড ছিল না।২০০২সালে আমাদের মাদ্রাসাটি এমপিও ভুক্ত হয় সেখানেও তার নাম রফিকুল ইসলাম নামেই তালিকা এমপিওভুক্ত হবার পর থেকে অদ্যাবদি রফিকুল ইসলাম নামেই বেতন গ্রহন করছে।এছাড়াও মাদ্রাসা সুপার বলেন আমি তাকে মৌখিখভাবে নাম সংশোধনের কথা বলেছি।সেই অনুসারে তিনি আমাকে কাগজপত্র দিয়েছেন।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় রফিকুল ইসলাম তার একটি ছদ্দ নাম।তার প্রকৃত নাম ভোটার আইডি কার্ড অনুসারে আঃ খালেক,পিতাঃ মোঃ মফিজ উদ্দীন,মাতাঃ মোছাঃ শাহাজাদী বেগম,সাং কর্নাই,হাবিপ্রবি,দিনাজপুর।এবং জন্ম তারিখ ৬ জুলাই ১৯৮৪।কিন্তু নশিপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সংগ্রহকৃত হাতে লিখা সনদে নাম মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং জন্ম তারিখ ১০আগষ্ট ১৯৭৯।এবং কর্নাই এলাকার প্রায় সবাই জানে তার প্রকৃত নাম আঃ খালেক।কিন্তু কিভাবে রফিকুল ইসলাম সেজে মাদ্রাসায় চাকুরী করে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এটা বোধগম্য নয় বলে মন্তব্য করেন এলাকাবাসী।এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার কার্য নির্বাহী কমিটির সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।যা করেছে মাদ্রাসার সুপার আব্দুস সালাম করেছে।তবে আমরা বিষয়টি দেখবো এবং যথাযত আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করবো বলে প্রতিনিধিকে মুঠো ফোনে জানান।এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসায় কর্মরত দপ্তরী রফিকুল ইসলাম বৈধ কাগজপত্রে আঃ খালেকের সাথে কথা বললে তিনি জানান ইতিমধ্যে আমি নাম সংশোধনের জন্য নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছি এবং আমার নাম সংশোধনের যাবতীয় প্রমাপত্র মাদ্রাসা কতৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি।মাদ্রাসার সুপারের কাছে জমাদানকৃত দপ্তরী রফিকুল ইসলামের কাগজপত্র দেখলে দেখা যায় আঃ খালেক নামের ভোটার আইডি কার্ড,জন্ম নিবন্ধন সনদ,নশিপুর দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের হাতে লিখা সনদ ও ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কতৃক রফিকুল ইসলাম ও আঃ সালাম একই ব্যক্তি নামের প্রত্যয়ন পত্র যেটা ৯মে ২৩এ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহকৃত সনদপত্র জমা দেয়।অথচ একই ব্যক্তি প্রমানে প্রত্যয়নপত্র প্রদানের বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি প্রতিনিধিকে জানান আমি গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় আমি তাকে কিভাবে একই ব্যক্তি হিসেবে প্রত্যয়নপত্র দিবো।আর যদি দেই তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্রের বাইরে কোন কিছু দেয়ার সুযোগ নেই।অর্থাৎ তিনি রফিকুল ইসলাম ও আঃ খালেক একই ব্যক্তি এই প্রত্যয়নপত্র দেয়নি এটাও সে হয়তো কারসাজি করেছে।অথচ কর্নাই দাখিল মাদ্রাসার দপ্তরী আঃ খালেক, রফিকুল ইসলাম হয়ে সরকার ও সকলের চোখ ফাকি দিয়ে দীর্ঘ ২১বছর যাবৎ ব্যাংক থেকে সরকারি অর্থ গ্রহন করছে অথচ মাদ্রাসা কতৃপক্ষের নেই কোন পদক্ষেপ।শুধু তাই নয় দপ্তরী রফিকুল ইসলামের প্রকৃত নাম যে আঃ খালেক সেই প্রমান স্বরূপ তার মেয়ের যাবতীয় শিক্ষাগত সনদপত্রে আঃ খালেক,স্ত্রীর জাতীয় পরিপত্রে স্বামী আঃ খালেক।পারিবারিক জীবনের প্রতিটিক্ষেত্রে বৈধতা যাচাইয়ের যে ডকুমেন্টের প্রয়োজন তার প্রতিটি ক্ষেত্রেই আঃ খালেক ছাড়া রফিকুল ইসনাম নামের কোন অস্তিত্বই নেই।অথচ আঃ খালেক কর্নাই দাখিল মাদ্রাসায় দিব্যি রফিকুল ইসলাম সেজে দিনের পর দিন সরকারি অর্থ গ্রহন করে চলছে।এছাড়াও রফিকুল ইসলাম প্রমান পত্রে আঃ খালেক ২০১৪সালের ৫জানুয়ারি নির্বাচনে কর্নাই এলাকায় হিন্দুদের বাড়িঘড়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে দেশব্যাপি যে চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিয়েছিল সেই ঘটনার সাথে সম্পৃক্তা থাকায় আঃ খালেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল যা আজও বর্তমান।এমনকি গত ২মে আঃ খালেক সহ একাধিক ব্যক্তির নামে মোঃ আলমগীর হোসেন আলম,পিতা জার্জিস একটি ছিনতাই মামলা রুজু করেন।যার মামলা নাম্বার ১৫।কর্নাই দাখিল মাদ্রার দপ্তরী মোঃ রফিকুল ইসলাম ওরফে আঃ খালেক এর বৈধতা নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান এ বিষয়ে আমার জানা নেই তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে প্রতিনিধিকে জানান। তবে বৈধ কাগজপত্রে আঃ খালেক কিভাবে মোঃ রফিকুল ইসলাম হয়ে চাকুরীকরে দিনের পর দিন সরকারি অর্থ গ্রহন করে সরকারি নিয়োগের নীতিমালাকে ও আইনের বিধিবিধানকে কুলশিত করছে এমনটাই উদ্মেগ প্রকাশ করেছেন অত্র ইউনিয়নের সচেতন এলাকাবাসী।