হাফিজের চোখে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিতে খেলবে যে ৪ দল মোদি ফের ক্ষমতায় গেলে দেশের সংবিধানই থাকবে না: মমতা ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যা বললেন মামুনুল হক এবার এক লাফে যত বাড়ানো হলো স্বর্ণের দাম নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শতভাগ পাস, শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা বিচ্ছুর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত। জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত নাফনদী থেকে দুই কাঁকড়া শিকারীকে অপহরণ করেছে আরসা আবহাওয়া অধিদপ্তর যা জানাল সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ নিয়ে বিশ্বকাপে টাইগাররা কে কোথায় ব্যাটিং করবেন, জানিয়ে দিলেন পাপন কোম্পানীগঞ্জে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ সাংবাদিক প্রবেশের বিষয় স্পষ্ট করলো বাংলাদেশ ব্যাংক কংগ্রেসম্যানদের সই জালকারী বিএনপি একটা জালিয়াত রাজনৈতিক দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী নতুন কারিকুলামে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল কমিটি ও অভিভাবকদের মতবিনিময় কুড়িগ্রামে বিশ্ব উচ্চরক্তচাপ দিবস পালিত কক্সবাজার পিটিআইয়ে প্রশিক্ষণরত শিক্ষিকার মৃত্যু গলাচিপা উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ১৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হবে। পাঁচবিবি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিন সম্পাদক জুয়েল শেখ নির্বাচিত ঈশ্বরগঞ্জে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনাসভা সিরাজগঞ্জ পৌরসভার কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হান্নান খান, সম্পাদক আল আমিন

মেহেরপুরের ছেলে ফিজ ইন্ডিয়ার জনপ্রিয় ইউটিউবার।

মেহেরপুরের গাংনী পৌর এলাকার বাঁশবাড়ীয়া গ্রামে ১৯৯৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ফিজ। বাংলাদেশ থেকে ২০১৯ সালে ইন্ডিয়ায় যান পড়াশোনা করতে। এখন তিনি লেখাপড়া করছেন কলকাতার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অব হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে, হোটেল ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে। ২০১৯ সালে লেখাপড়ার সুবাদে ইন্ডিয়ায় গিয়ে তিনি শখের বশে ইউটিউব চ্যানেল খোলেন। একের পর এক ঘুরতে থাকেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এবং সেগুলো ক্যামেরাবন্দী করতে থাকেন। জানা যায়, কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গোয়া, কেরালাসহ এ পর্যন্ত দেশটির ১২টি রাজ্য ঘুরেছেন ফিজ। প্রতিটি রাজ্য নিয়েই তিনি বানিয়েছেন ভ্রমণ ভ্লগ। দেখিয়েছেন কীভাবে অল্প খরচে ইন্ডিয়ার সব দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করা যায়। ধীরে ধীরে সে ওখানে জনপ্রিয় হয়ে যান ইউটিউবার হিসেবে। দেশে তার জনপ্রিয়তা তৈরি হচ্ছে এখন। একেবারে মেহেরপুরের আঞ্চলিক ভাষায় ভ্লগ করেন ফিজ। বর্তমানে ফেসবুক আর ইউটিউব মিলে তার ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ।


পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, মাবিয়া খাতুন নামে ফিজের এক ফুফু আছে ইন্ডিয়ায়। ফিজের ছোট ফুফু মাবিয়া খাতুনের বিয়ে হয় ইন্ডিয়ার নদীয়া জেলায়। একসময় সীমান্তে দুই দেশের মানুষের অবাধ যাতায়াত ছিল পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই। ঠিক ওই সময়ে, সেই আশি বা নব্বই দশকে মাবিয়া খাতুনের বিয়ে হয় নদীয়ায়। তখনো কাঁটাতারের বেড়া ওঠেনি সীমান্তে। ফিজ তার দাদির সাথে যেতেন ছোট ফুফুর বাড়ি। ফুফু ভীষণ ভালোবাসতেন ফিজকে।



তারপর হঠাৎ এক সময় কাঁটাতারের বেড়া ওঠে সীমান্তে। হাজার হাজার পরিবার একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরস্পর থেকে। কান্নার রোল ওঠে সীমান্তবর্তী জনপদগুলোতে।




অনেকের মতো এক সময় ফিজেরও ফুফুর বাড়ি যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তবুও ফিজ মাঝে, মাঝে সীমান্তে যেতেন আর ফুফুর দেখা না পেয়ে ঘুরে আসতেন। সীমান্তবর্তী জেলায় বসবাস করায় ফিজের বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে ছিল না তার ফুফুর বাড়ি। কিন্তু দেশ তো ভিন্ন। ফিজের সাত-আট বছর বয়স তখন। 


এক সময় কিশোর বয়সের ফিজের মধ্যে ভীষণ ইচ্ছে জাগে ফুফুকে একদিন দাদির কাছে আনবে! ফিজের সে স্বপ্ন পূরণও হয়েছে। পড়তে গিয়ে প্রথমে ফুফুর বাড়িতেই ওঠেন ফিজ। প্রায় ১৩ বছর পর দাদির সঙ্গে তার ফুফুর কথা বলিয়ে দেন।


ফিজের বাবা মিজানুর রহমান মিজান নিজের কনস্ট্রাকশনের ব্যবসার কাজে থাকতেন ঢাকায়। ফলে মা মমতাজ বেগম একটু শাসনেই রেখেছিলেন ফিজকে। গ্রামময় টইটই করে ঘুরে বেড়ানো এবং খুবই চঞ্চল প্রকৃতির ছিলো ফিজ, মায়ের শাসন বারণ না মানার জন্য। প্রায় প্রতিদিনই ভাগ্যে জুটত মার কিংবা বকা। বাবাও ঢাকা থেকে নিয়মিত ছেলের খোঁজখবর নিতেন মোবাইল ফোনে। দুরন্ত ফিজের কাজকর্ম সম্পর্কে বেশ ধারণা ছিল বাবার। এজন্য তাকে মাঝে, মাঝে তুই আমার অলক্ষ্মী ছেলেও বলতেন বাবা। এটা শুনতে মোটেও ভালো লাগত না ফিজের। ফল যা হওয়ার তা-ই হলো। ২০১৫ সালের দিকে ফিজ এইচএসসি পাস করে অভিমানে মেহেরপুর থেকে পালিয়ে চলে গেলেন গাজীপুরে। উঠলেন চাচার বাসায়। চাচা আবার সংবাদ দিলেন তার বাবাকে। ফলে গিয়ে উঠতে হলো তার বাবার কাছে ঢাকা মোহাম্মদপুরে। ভাগ্যে জুটল বাবার প্রচণ্ড মার ও বকা। কী আর করা! ভর্তি হলেন মোহাম্মদপুরের একটি কলেজে। সেখান থেকে ইন্ডিয়ায়। 


এখন অবশ্য ফিজের বাবা তাকে অলক্ষী থেকে লক্ষী ছেলে বলে ডাকেন। ফিজের এলাকাবাসীরা জানান, প্রথম দিকে আমরা অনেকেই তাকে নিয়ে ট্রল করতাম। বিভিন্ন ভাবে হেনস্তা করতাম। বাজে মন্তব্য করে উপহাসও করেছি অনেক। গ্রামে তার কর্মকাণ্ড দেখে এক সময় আমরা তাকে উন্মাদ বলেও আক্ষা দিতাম। তবে কারো সমালোচনা ফিজ কে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সে তার লক্ষে অটুট ছিলো, যার ফলে আজকের এই সাফল্য। এখন ফিজ কে নিয়ে আমাদের অনেক গর্ব হয়। আর এক সময় তাকে নিয়ে করা বাজে মন্তব্যের জন্য খুব আফসোস হয়। এখন ফিজ শুধু আমাদের গ্রামের নয়, পুরো জেলার গর্ব।

আরও খবর