জয়পুরহাটে স্বর্ণের দোকানে তল্লাশী করতে গিয়ে দুই ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক ইসলামপুরে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৩ মাদক কারবারী আটক নদীতে জেলের জালে ধরা পড়ল কাছিম সাংবাদিকের ওপর হামলা বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে: জয়পুরহাটে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান "নলছিটি পাবলিক লাইব্রেরিতে বাংলা নববর্ষে সাংস্কৃতিক প্রতিভার উন্মেষ" কুবি'র 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু পীরগাছায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন!! সভাপতি মুফতি আশরাফুল, সম্পাদক আবু শাহমা ও সাংগঠনিক আব্দুল আহাদ সাংবাদিকের প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন শ্রীমঙ্গলে 'কিডস ইংলিশ জোন' এর শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ ও ক্রেস্ট বিতরণ ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে তজুমদ্দিনে ফিলিস্তিনের পক্ষে গণজোয়ার। জয়পুরহাটে মার্শাল আর্ট কারাতে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট ও বেল্ট বিতরণ ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন করবে অন্তর্বর্তী সরকার : প্রধান উপদেষ্টা কুবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন যৌথবাহিনীর অভিযানে গাঁজা সহ গ্রেফতার-৩ বসুন্ধরা শুভসংঘ মনপুরা উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে বসাতে গণঅভ্যুত্থান হয়নি: নাহিদ বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস উপলক্ষে বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনালে মাভাবিপ্রবি ভেতরে পরীক্ষা, বাইরে অপেক্ষা আর উৎকণ্ঠা রামগড়ে গরুর ঘাস খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৭

উপকূলে পরিবেশ বান্ধব ব্যয় সাশ্রয়ী জ্বালানী গুলের ব্যাবহার বাড়ছে

 উপকূলে বিকল্প জ্বালানী হিসাবে পরিবেশ বান্ধব ব্যয় সাশ্রয়ী জ্বালানী গুলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপকূলে সাধারণত চিংড়ী চাষের আধিক্য থাকায় বৃক্ষ রাজি কম একই সাথে ধান চাষের উৎপাদন কম থাকায় বিচালী,নাড়া বা খড় কম। ফলে জ্বালানী সংকট রয়েছে সব সময়। এই জ্বালানী সংকটের ফলে বিকল্প জ্বালানী হিসাবে গ্রামীণ নারীরা গুলের ব্যবহার করছে প্রায়ই ঘরে ঘরে।

গুল হল এক ধরনের জ্বালানী। গুল তৈরীর প্রধান উপকরণ হলো কয়লা ও কাদামাটি। জ্বালানী হিসাবে কাঠ ব্যবহারের পর অবশিষ্ট ছাই থেকে কয়লা তৈরী করা হয়। কয়লা ভালভাবে গুড়া করে তার সাথে নরম কাদা মাটি মিশিয়ে গোল পাকিয়ে রোদে শুকিয়ে এই গুল তৈরী করা হয়। কয়লার গুড়া একবারে মিহি হবে না কিছুটা তেতুল বিচির মত হবে এবং নরম কাদা পুকুর বা জলাশয়ের পঁচা কাদা মাটি হলে ভাল হয়।

পরিমান হিসাবে বুড়িগোয়ালিনী ইউপির গৃহিনী ছায়া রানী বলেন প্রায় এক কেজি কয়লার সাথে প্রায় ২৫০ গ্রাম কাদামাটি মিশিয়ে গুল তৈরী করা হয়। নকিপুর গ্রামের বাসিন্দা গৃহিনী শর্মিষ্ঠা রানী বলেন এক ঝুড়ি কয়লায় অর্ধ ঝুড়ি কালো নরম মাটি লাগে। এটি সাধারণ কয়লা ও নরমমাটি মিশিয়ে ৩/৪ দিন কড়া রৌদে শুকিয়ে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এটি তৈরী করে সংরক্ষণ করে রাখা যায় বহুদিন।

বুড়িগোয়ালিনী ইউপির আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা কৌশল্য মুন্ডা বলেন জ্বালানী হিসাবে গুল ব্যবহারের সুবিধা অনেক। সুবিধা হিসাবে বলেন এই জ্বালানীর উৎপাদন খরচ খুব কম। একই জ্বালানী থেকে দুয়ের ব্যবহার। প্রথমে কাঠ দিয়ে রান্না করে পরে কাঠ থেকে কয়লা বের হলে সেটা দিয়ে গুল তৈরী করে আবারও জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিবারের গৃহিনীদের সাময়িক পরিশ্রম করলে জ্বালানী তৈরী করা সম্ভব বলে জানান। ধূমঘাট গ্রামের বাসিন্দা বিনোদিনী মুন্ডা বলেন গুল তৈরীতে খরচ নাই। কাঠ জ্বালানোর পর কাঠে সামান্য জল দিলে আগুন নিভানো হলে কয়লা তৈরী হয়ে যায়। আর কয়লার সাথে নরম পঁচা কাদা মাটি মিশিয়ে দিয়ে গোল গোল করে পাকিয়ে গুল তৈরী করা হয়। এর পর এর আর একটা সুবিধা বলেন গুল জ্বালানোর পর ছাই হয়ে গেলে সেই ছাই দিয়ে হাড়ি, কড়া,  থালা বাসন পরিস্কার করা যায়।

জ্বালানী হিসাবে গুলের ব্যবহারের ফলে কাঠের উপর চাপ কম পড়ছে বলে উল্লেখ করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার। তিনি বলেন উপকূলের সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় চিংড়ী চাষ শুরু হয় প্রায় আশির দশক থেকে। আর এই সময়ে জ্বালানী সংকট শুরু হতে থাকে। সেময়ে বুড়িগোয়ালিনী, দাতিনাখালী, গাবুরা, পদ্মপুকুর, মুন্সিগঞ্জ, ভেটখালী সহ অন্যান্য স্থানে গুলের ব্যবহার কম বেশি হতে থাকে। তবে সঠিক জানা যায়নি গুলের ব্যবহার কোন সময় থেকে শুরু হয়েছে বা কিভাবে আবিস্কার হল। তিনি বলেন আইলার পর থেকে উপকূলে গুলের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।  এটি বারোমাস জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেন উপকূলীয় জনপদে এক বিশেষ জ্বালানী গুল।

নকশীকাঁথা মহিলা সংগঠনের পরিচালক চন্দ্রিকা ব্যানার্জী বলেন শ্যামনগর উপজেলায় রান্নার কাজে জ্বালানী সংকট রয়েছে। জ্বালানী সংকট সমাধানে শুকনা মৌসুমে দেখা যায় গ্রামীন নারীদের পাতা কুড়ানো, লাকড়ি কুড়ানো, জমি থেকে ধানের অবশিষ্ট অংশ সংগ্রহ, কাগজ কুড়ানো ইত্যাদি। গ্রামীন নারীদের জ্বালানী সংকট সমাধানে এখন শহর কেন্দ্রিক বা গ্রাম গঞ্জেও সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তবে তিনি বলেন পরিবারের আর্থিক অবস্থায় বিবেচনা করে গ্রাম গঞ্জে বিকল্প জ্বালানী গুলের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এটি পরিবেশ বান্ধব ব্যয় সাশ্রয়ী জ্বালানী।

দাতিনাখালী গ্রামের বনজীবি নারী সংগঠনের পরিচালক শেফালী খাতুন বলেন দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে গ্রামীণ নারীরা রান্নার কাজে গুলের ব্যবহার করছেন। গুল ব্যবহারের ফলে গাছের উপর কিছুটা হলেও চাপ কম পড়বে এর ফলে পরিবেশ বাঁচবে। গুল ব্যবহারের আরএকটা সুবিধা তিনি উল্লেখ করেন সেটি হল হাড়ি পাতিলে কালি পড়ে না। ঘরের মধ্যে ধোঁয়া সৃষ্টি কম হয়। তিনি পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী গুলের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য সকলকে আহব্বান জানান। গ্রামীন নারীদের এটি একটি লোকায়াত জ্ঞান ও র্চ্চা বলে উল্লেখ করেন তিনি।

স্থানীয় পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা  গুলের ব্যবহার পরিবারে আর্থিক সাশ্রয় হবে বলে উল্লেখ করেন। এটি একটি জৈব জ্বালানী পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী হিসাবে উল্লেখ করে এর ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য আহব্বান জানান।


Tag
আরও খবর
নদীতে জেলের জালে ধরা পড়ল কাছিম

১ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে