মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের কড়া হুঁশিয়ারি ওবায়দুল কাদেরের দুই বিভাগে হতে পারে বৃষ্টি সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত ৬ কে হচ্ছেন শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান.? নন্দীগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ জনের জরিমানা ঝিনাইদহের উদয়পুর পবহাটি এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে হাফেজ ছাত্রকে বলাৎকারের বিষয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা নলছিটি কৃষি ব্যাংকে উৎসবমুখর পরিবেশে হালখাতা উদযাপন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মামলা,কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ তীব্র তাপদাহে নাকাল জনজীবন, সারাদেশের ন্যায় সুন্দরগঞ্জে বৃক্ষরোপণ করলো ছাত্রলীগ। জয়পুরহাটে ১৬ টি স্বর্ণের বারসহ চোরাকারবারি আটক রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে হিট স্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু। অবৈধ মাটি উত্তোলনের দায়ে অভিযুক্তকে লাখ টাকা জরিমানা বে-টার্মিনালের ৪টি টার্মিনালই বিদেশি বিনিয়োগে হবে - বন্দর চেয়ারম্যান মাতামুহুরি নদীতে নিখোঁজ সেই দুই জেলেকে মৃত উদ্ধার জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে চশমা মার্কা ভোট চাই : ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জুনাইদ সালুয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান একেএম ফরিদ উদ্দিন খান আর নেই নাগেশ্বরীতে চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে ভেড়া বিতরণ চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে মাছ ধরার ঝাঁক ঘিরতে গিয়ে ২ যুবক নিখোঁজ ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক-স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী আবারও টেকনাফে এসে পড়লো গুলি

ভেতরে-বাইরে কী হচ্ছে মিয়ানমারে

সংগৃহীত ছবি

◾ আন্তর্জাতিক ডেস্ক


মিয়ানমারকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় এখন সর্বত্র। দেশটিতে সামরিক সরকারের অপশাসন, গণতন্ত্রকামীদের বিপরীতে পীড়ননীতি, অং সান সু কিকে অন্তরীণ রাখা, রোহিঙ্গাদের গণহত্যা তথা বাংলাদেশে পুশইন করানো, বাংলাদেশে মর্টার শেল নিক্ষেপ এবং আকাশসীমায় সামরিক হেলিকপ্টার প্রবেশ করে গোলাবর্ষণ প্রভৃতি বিষয় মানুষকে এই মর্মে ভাবাচ্ছে যে, ‘ভেতরে-বাইরে কী হচ্ছে মিয়ানমারে?’ এক কথায় এর সহজ উত্তর হচ্ছে, ঘরে-বাইরে বেশ চাপে পড়েছে দেশটি।


এই চাপের শুরু মূলত আগস্ট মাসে। ওই মাসে ইয়াঙ্গুন কর্তৃপক্ষ চার গণতন্ত্রকামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। এরপরই আসিয়ানের বৈঠকের আলোচ্যসূচির শীর্ষে উঠে আসে ‘মিয়ানমার সংকট’। আসিয়ানের ওই বৈঠকের সপ্তাহখানেক আগে চার গণতন্ত্রকামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপরই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলকে (এসএসি) সতর্ক করে আসিয়ান । 


অবশেষে, ১০ সদস্যের অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের বৈঠকে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেন। আসিয়ানের পক্ষ থেকে বলা হয়, যতক্ষণ মিয়ানমার সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবিলায় ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করবে, ততক্ষণ মিয়ানমার আসিয়ানের বাইরে থাকবে। এটা মিয়ানমারের জন্য নিঃসন্দেহে বড় চাপ। 


কিন্তু সমাধানের পথে হাঁটছে না মিয়ানমার। তারা দেশের অভ্যন্তরের গণতন্ত্রকামীদের আন্দোলন রুখে দিতে গতবারের জান্তা সরকারের আমলে আরোপ করা এবং সু কির আমলে বাতিল করা ‘ওভার নাইট গেস্ট রেসট্রিকশন’ আইনটি আবার বলবৎ করেছে। এই আইনের অধীনে কারও বাসায় হঠাৎ করে আসা মেহমানদের তালিকা থানায় রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই আইনের অপব্যবহার করে প্রায় প্রতি রাতেই কোনো না কোনো শহরে তাণ্ডব চালাচ্ছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সন্দেহজনক মনে হলেই লোকজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে টর্চার সেলে। নির্যাতন থেকে বাঁচাতে পরিবারের লোকজনকে দিতে হচ্ছে বড় অঙ্কের ঘুষ। 


কিন্তু গণতন্ত্রকামীদের নিরস্ত্র আন্দোলন বর্তমান সময়ে সশস্ত্র আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সেই আন্দোলনকে রুখতে সামরিক পদক্ষেপকেই বেছে নিয়েছে জান্তা সরকার। সাগাইং অঞ্চলের কানি টাউনশিপে পরিচালিত জান্তা বাহিনী ২৮ আগস্ট আরাকান আর্মির (এএ) পাঁচ সদস্যকে হত্যা করে। এরপরই এই হত্যার সমুচিত জবাব দেয় আরাকান আর্মি। ৩১ আগস্ট চিন রাজ্যের ফালাম শহরের উপকণ্ঠে মিয়ানমারের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলায় একজন কর্মকর্তাসহ অন্তত পাঁচজন সরকারি সেনাকে হত্যা করে আরাকান আর্মি। এরপর থেকে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাউ জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের মধ্যে গত সপ্তাহে উত্তর রাখাইন এবং দক্ষিণ চিন রাজ্যে হাজার হাজার স্থানীয় বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যুদ্ধে আরাকান আর্মি এতটাই সাফল্য পেয়েছে যে, তাদের মোকাবিলায় দেশটির সামরিক বাহিনী ফাইটার জেট এবং হেলিকপ্টার পর্যন্ত ব্যবহার করতে বাধ্যে হচ্ছে। যুদ্ধের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ যে শহরের মানুষ বলছে, তারা দূরাঞ্চলের যুদ্ধের শব্দ ঘরে বসেই শুনতে পাচ্ছে। 


উভয়পক্ষের গোলাগুলি এবং গোলাবর্ষণের ঘটনায় শত শত বেসামরিক নাগরিকের হতাহত হওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীভাবে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, সেখানে ওষুধের সংকটও দেখা যাচ্ছে।


কিন্তু এই সংঘর্ষের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে জান্তা সরকার। তারপরও সেই ঘটনা প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যখন মিয়ানমারের মর্টার শেল এসে পড়ছে তখন। শুধু তাই নয়, শুক্রবার বাংলাদেশের আকাশসীমায় মিয়ানমারের সামরিক কপ্টার অবৈধভাবে প্রবেশ করে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাংলাদেশে গোলাবর্ষণ কিংবা সামরিক হেলিকপ্টার প্রবেশের ঘটনা মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ভুলবশত ঘটেছে। এসব পদক্ষেপ তারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধেই নিয়েছিল। 


আর যদি সজ্ঞানে করে থাকে তবে তার পেছনে একমাত্র কারণ ‘রোহিঙ্গা সংকট’। কারণ রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে মিয়ানমারকে আর কোনো সময় দিতে রাজি নয় জাতিসংঘ। তাই মিয়ানমার নিজেদেরকে নিরাপদ করতে চীনের সমর্থন লাভের পর এবার রাশিয়ার পথে পা বাড়িয়েছে। জান্তা সরকারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং আগামী সপ্তাহে মস্কো সফরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ ওই গোলাবর্ষণ এবং সামরিক কপ্টারের ইস্যুতে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূতকে এ বিষয়ে তলব করে স্পষ্ট জবাব চাওয়া হয়েছে। 

আরও খবর