প্রকাশের সময়: 03-09-2023 03:10:51 pm
শিক্ষক ‘সংকটে’ আছে
চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ। প্রাচীনতম এই সরকারি কলেজে নেই লাইব্রেরি ভবন ও
অডিটরিয়াম। প্রায় ৮২ পদের মধ্যে ১৫ পদ শূন্য শিক্ষক সংকটে ভুগছে নগরীর প্রাচীনতম
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ। উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (সম্মান), স্মাতক (পাস) ও
স্নাতকোত্তর কোর্স মিলে চার স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে এই কলেজে। এই চার
স্তরে ১৬ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৬৭ জন। শতবর্ষী এই
কলেজে ৮২টি শিক্ষকের পদ থাকলেও এরমধ্যে ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে। ফলে ৬৭ জন শিক্ষকের
পাঠদান করতে হচ্ছে এই ১৬ হাজার শিক্ষার্থীকে। যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত
হচ্ছে ১:২৩৮। অর্থাৎ একজন শিক্ষকের বিপরীতে
শিক্ষার্থী রয়েছেন ২৩৮ জনের কিছু বেশি। এছাড়া, খন্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন ১০ জন।
এনাম কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী অনার্স বিষয়ের জন্য সাত জন এবং মাস্টার্স বিষয়ের
জন্য ১২ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও তার কোনটি নেই নগরীর এই প্রাচীন কলেজে।
কলেজ সূত্র থেকে জানা যায়, কলেজে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬
হাজারের বেশি। যার মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকে রয়েছেন সাড়ে ৩ হাজার। এছাড়া, স্নাতক
(সম্মান), স্নাতক (পাস) ও স্মাতকোত্তর কোর্স মিলে সাড়ে ১২ হাজারের মত শিক্ষার্থী
রয়েছেন। বর্তমানে ১৪টি বিষয়ে স্মাতক এবং ১২টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে
এই কলেজে। তবে এনাম কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী অনার্স বিষয়ের জন্য সাত জন এবং
মাস্টার্স বিষয়ের জন্য ১২ জন শিক্ষকের থাকার কথা থাকলেও তা নেই মহসিন কলেজে। যার
ফলে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষক সংকটে ভুগছেন এই কলেজে। এছাড়া, অনেক
ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষক দিয়েই চলছে স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (পাস)
ও স্নাতকোত্তর কোর্সের ক্লাস।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মদ কামরুল
ইসলাম জানান, বর্তমানে আমাদের শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষার্থী অনুপাতে যে পরিমাণ
শিক্ষক প্রয়োজন তা আমাদের নেই এবং নতুন করে শিক্ষকের কোন পদও সৃষ্টি হয়নি। এছাড়া,
আমাদের ৮২টি পদ থাকলেও এরমধ্যে ১৫টি পদ খালি রয়েছে। ফলে ৬৭ জন শিক্ষক দিয়ে ১৬
হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে হচ্ছে। নতুন পদ সৃষ্টি হলে এ সমস্যা সমাধান
হবে আশা করছি।
এ সম্পর্কে মহসিন কলেজের ছাত্র প্রতিনিধি আনোয়ার পলাশ জানান, সারা
দেশের ১৬টি শতবর্ষী কলেজের মধ্যে মহসিন কলেজ অন্যতম। কিন্তু বাকি ১৫টি কলেজ যেভাবে
এগিয়ে যাচ্ছে মহসিন কলেজ সেভাবে এগিয়ে যেতে পারছে না। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে
শিক্ষক সংকট। আমাদের ১৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৬৭ জন।
শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে সরকারের নজর দিতে হবে এবং কলেজের শিক্ষক সংকট দূর করতে
হবে। এছাড়া, মহসিন কলেজের মত একটি কলেজে কোন লাইব্রেরি ভবন ও অডিটোরিয়াম নেই। এটি
খুবই দুঃখ জনক।
কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস: ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে মহসিন ফান্ডের বদান্যতায়
চট্টগ্রামে সরকারিভাবে প্রথম মাদ্রাসা স্থাপিত হয়। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে ৩০ হাজার
টাকা দিয়ে মাদ্রাসার জন্য সরকারের কাছ থেকে একটি বিরাট পাহাড় অধিগ্রহণ করা হয়। যার
আয়তন ৩০ একর। এরপর ১৯২৭ খিস্টাব্দে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আই এ (উচ্চ মাধ্যমিক)
কোর্স চালু করা হয়। সেসময় প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ইসলামিক ইন্টার মিডিয়েট কলেজ
বা আই আই কলেজ। ১৯৭০ সালে এই কলেজে বিজ্ঞান কোর্স চালু হয় এবং ১৯৭৮ সালে
সর্বধর্মালম্বীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১৯৭২ সালে কলেজের শিক্ষক পরিষদ হাজী
মুহাম্মদ মহসিন কলেজ নামকরণের প্রস্তাব করেন। সেই প্রস্তাব মোতাবেক আই আই কলেজ এবং
১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ দু’টিকে একত্রিত করে ১৯৭৯ সালের জুলাই মাসে সরকারি হাজী মুহাম্মদ
মহসিন কলেজ নামে রূপান্তরিত করা হয়।
৫ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৪২ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৫৬ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ১০ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৩১ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৪৯ মিনিট আগে
৭ ঘন্টা ২০ মিনিট আগে