দেশের মানুষ এখনই ঐক্যবদ্ধ না হলে বাংলাদেশের অবস্থাও ফিলিস্তিনের মতো হবে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার মানুষের স্বার্থ দেখে না এবং তাদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেছে।
৮ মার্চ, শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশজুড়ে নারী দিবস পালিত হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই নারীরা বেশি নির্যাতিত ও নিগৃহীত হচ্ছে। নারী ও শিশুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হলেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তারা ক্ষমতায় থাকলে দেশের কেউ নিরাপদ নয়।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। রমজানের প্রধান উপাদান খেজুরের দামও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটি অন্যায়। খেজুরের বদলে বরই খাওয়ার কথা বলে ডামি সরকারের মন্ত্রীরাও জনগণের সঙ্গে মশকরা করছে।
দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপি আন্দোলন করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
রিজভী আহমেদ বলেন, দেশের সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যা, এমনকি বিজিবি সদস্য মেরে ফেললেও বাংলাদেশের প্রতিবাদ করার সাহস নেই। বরং, দিন দুয়েক আগে ‘ডামি প্রধানমন্ত্রীর ডামি উপদেষ্টা’র একটি বক্তব্য রীতিমতো বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য উদ্বেগজনক। তিনি বলেছেন, সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনা হত্যাকান্ড নয়, সীমান্ত হত্যাকান্ড নাকি দুর্ঘটনা।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে দেয়া বক্তব্য তুলে ধরেন রিজভী।
তিনি বলেন, কোনো অজুহাত কিংবা ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে যদি আমরা ঐকবদ্ধ না হই তবে একদিন আমাদেরকেও হয়তো নিজ ভূমিতেই নির্মম নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যবরণ করতে হবে। অনেকেই হয়তো ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার রোষানল থেকে বাঁচার জন্য নীরব ছিলেন কিংবা যেকোনো কারণেই হোক সরব প্রতিবাদ করেননি। তাতে দেশের কোনো লাভ হয়নি। বরং দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস এমন এক সময় পালিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশে নারীরা ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে সর্বত্রই নির্যাতিত-নিপীড়িত-লাঞ্ছিত-খুন খারাবীর শিকার হচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে। রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সারাদেশে ভয়ংকর নারী নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতার আশ্রয়, প্ররোচনায় এদের অসভ্যতা রুচিহীন বর্বর শক্তিতে পরিণত করেছে। নবধারার আওয়ামী বাকশালরাজ্যে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রায় এখনো কোন ছেদ যতি টানা হয়নি, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে গত ১৩ মাসে এক হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। গত বছর নারীর প্রতি সহিংসতা ছিল উদ্বেগজনক বিষয়। এ সময়ে সারাদেশে ৫৭৩ জন নারী ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কোন কোন নারীকে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ১২২ জন পুরুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আটজন নারী-পুরুষ খুন হন।
বিএনপি নেতা বলেন, দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন মহীয়সি নারী। যিনি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে বার-বার মুক্ত করেছেন। যিনি বাংলাদেশ নারী সমাজের অগ্রগতিতে অসামান্য অবধান রেখেছেন। অথচ তাঁকে সীমাহীন হয়রানী ও হেনস্তা করার জন্য অন্যায় এবং বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় আটক করে রাখা হয়েছে। সমস্ত মৌলিক মানবাধিকার, সাংবিধানিক অধিকারকে পদদলিত করে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে বিনা ভোটের ডামি সরকার। পদ্মা সেতু থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার হুমকীও দিয়েছেন চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ শেখ হাসিনা। তার প্রধান টার্গেট এখন দেশনেত্রী। অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে কেবল একজন রাজনৈতিক নেত্রীকেই নয় বরং বাংলাদেশের কণ্ঠকেই রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। শেখ হাসিনা নারী অধিকারের কথা বললেও আদতে সব ভাওঁতাবাজী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকলে ভয় প্রাধাণ্য লাভ করে। কারণ এবারও ডামি নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর মুকুটে শোভিত হলো গণশক্রর এক কালিমা লিপ্ত পালক।
এসময় তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য আজাদ চৌধুরী নাহিদকে গ্রেফতার ও আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আজকের শান্তিপূর্ণ র্যালীতে বাধা দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, সহ অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, কৃষক দলের নেতা মেহদেী হাসান পলাশ প্রমুখ।
৪ দিন ১৮ ঘন্টা ৯ মিনিট আগে
৪ দিন ১৮ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
৫ দিন ১৬ ঘন্টা ২২ মিনিট আগে
৫ দিন ১৬ ঘন্টা ৩৪ মিনিট আগে
৬ দিন ৭ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
৬ দিন ১০ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
৭ দিন ৪ ঘন্টা ৫৫ মিনিট আগে
৭ দিন ৭ ঘন্টা ২ মিনিট আগে