১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম কমলো ৪৯ টাকা উখিয়ার সীমান্ত থেকে ১০ জেলেকে অপহরণ আরাকান আর্মির প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সারাদেশে বৃষ্টি নিয়ে সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস যুক্তরাষ্ট্রের ভার্সিটি ক্যাম্পাসগুলোতে গ্রেফতার, উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত শনিবার থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান চলবে সিরাজগঞ্জে নিরাপদ অভিবাসন দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভাঙ্গায় আবেশ স্মৃতি সংসদ এর উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ কয়রায় হয়রানি ও মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ফাসানোয় এলাকাবাসীর ক্ষোভ রাতেই বৃষ্টি হতে পারে যে সকল এলাকায় থাইল্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারত্বের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে: শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের সময় পেছাল গহিন পাহাড়ে এলাকাবাসী দুঃসাহসিক অভিযান টেকনাফে অপহৃত ৩ জনকে ৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার মে দিবসেও ক্লাস নিলেন বেরোবি শিক্ষক কক্সবাজারে বজ্রপাতে ২ লবণ চাষীর মৃত্যু টেকনাফে একই পরিবারের ৩ জনকে অপহরণ চকরিয়ায় সাড়ে ১২ লাখ ইয়াবা ফেলে পালিয়ে যাওয়া সেই কারবারি গ্রেপ্তার সমুদ্র শহরে কয়েক মিনিটের বৃষ্টি… কক্সবাজারসহ দুই জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস আগের রূপে টেকনাফ থানা, অপহরণ-নির্যাতন চলছেই

পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে লাইসেন্স ও ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ইটভাটা


সাতক্ষীরা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসের কর্তৃকপক্ষকে ম্যানেজ করে লাইসেন্স ও ছাড়পত্র ছাড়াই চালাচ্ছেন অধিকাংশ ইটভাটা। পুড়ানো হচ্ছে কাঠ ও রাবারের টায়ার কালি। যেন দেখার কেউ নেই, প্রশাসন নিরব। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাবুলিয়া বিবি ও এসবিএল ইটভাটা, ছয়ঘিরিয়া এসবি ইটভাটা, মাদবকাটি স্টার ইটভাটা, বিনেরপোতা রহমান ইটভাটা ও ভাদড়া, বিনেরপোতাসহ উপজেলার অধিকাংশ ইটাভাটায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের কাঠ, রাবার টায়ারের কালি ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। এতে করে এলাকায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং মানুষের নানা রোগব্যাধি হচ্ছে।


এছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়াপত্র ও সরকারি লাইসেন্স ছাড়াই চলছে জেলা ও উপজেলার অধিকাংশ ইটভাটা। অবাধে কাঠ পুড়ানোর কারনে এক দিকে যেমন বৃক্ষ নিধন হচ্ছে তেমনি ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। কাঠ-কালি ও রাবারের টায়ার পুড়ানোয় পাশাপাশি ফসলি জমির উপরের মাটি কেটে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট তৈরীর কাজে। এতে মাটির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। কোন কোন ভাটায় কয়লার সাথে কাঠ, তুষকাঠ ও টায়ার পোঁড়ানো কালি ব্যবহার করে ইট পোড়ানোর ফলে কলো ধোয়ায় পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। 


দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও মানছে না কেউ। মাঝে মধ্যে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পরিবেশ অধিদপ্তর হতেগোনা দু’একটি ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করলেও আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তেমন কোনো জোরালোভাবে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আজ পর্যন্ত সাতক্ষীরাতে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।


ইতোমধ্যে গত ২৩ সালে ডিসেম্বর মাসে লাইসেন্স না থাকায় সদর উপজেলার বাবুলিয়া বিবি ব্রিকস ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকায় চলতি বছরের ২০২৪ সালে জানুয়ারি মাসে ৮টি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়। এছাড়া লাইসেন্স না থাকায় কলারোয়া তামিম ব্রিকস ও কালিগঞ্জ উপজেলার রূপা ব্রিকসকে সিলগালাসহ তাদেরকে ৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু ইটভাটা ভেঙে দেওয়া ও জরিমানা করার পরও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসকে ম্যানেজ পুনারায় বাবুলিয়া বিবি ইটভাটা চালু করেছেন এবং এসব ইটভাটায় মহাৎসবে বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ, রাবারের টায়ার কালি, তুষকাঠ পোড়ানো হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসের কর্তৃকপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় নাগরিক সমাজ।


জেলা নদী বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির এক নেতা বলেন, গত জানুয়ারি মাসে এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আজও পর্যন্ত এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। প্রতি বছর এসব ইটভাটা থেকে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের নামে ভাটাপ্রতি এক থেকে দুই লাখ টাকা করে অর্থ আদায় করা হয়। এ কাজে সমন্বায়কের কাজটি করে থাকেন জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি। তবে ঈদের পর এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসের কর্তৃকপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পথসভা করে বিভিন্ন অধিদপ্তরে স্মারক লিপি প্রদান করবেন বলে পরিবেশ কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান।


এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইটভাটা মালিক বলেন, ইটভাটা মৌসুম শুরুর সাথে সাথে তাদেরকে দিতে হয়ে মোটা অংকের টাকা। তাই আমরা পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসকে ম্যানেজ করে চালায় ইটভাটা।


জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সাতক্ষীরায় মোট ৯৬টি ইটভাটার মধ্যে ঝিকঝাক ভাটা রয়েছে ৮৩টি। সনাতনী পদ্ধতির ভাটা রয়েছে ১৩টি। এসব ভাটার মধ্যে ৬৭টি ইট ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। পরিবেশের ছাড়পত্র বিহীন এসব অবৈধ ইটভাটার কোন সরকারি লাইসেন্স নেই। শুধুমাত্র উচ্চ আদালতে একটি রিটের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর ইটভাটা মালিকরা অবৈধভাবে চালাচ্ছে এসব ইটভাটা।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি উচ্চ আদালত এক আদেশে দেশের সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এক রিটের প্রাথমিক শুনানী শেষে গত বছর ১৩ নভেম্বর বিচারপতি মোঃ আশরাফুর ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এ বিষয় সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে উদ্ধর্তন সংশ্লিষ্টদের কাছে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার নাগরিক সমাজ।