হামিদের বিদেশ গমন ও আ.লীগ নিষিদ্ধ নিয়ে মুখ খুললেন আইন উপদেষ্টা ভারতের ৫০ সেনাকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে অবস্থান জুমার পরও চলবে: হাসনাত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ ইলিয়াস কাঞ্চনের জেপিবির শার্শায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও মাদক ব্যবসায়ীসহ আটক-৩ দুর্যোগ বিষয়ক মহড়া সাগর পাড়ের জীবন যুদ্ধ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৪ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভয়াবহ আগুন সাবেক মেয়র আইভি গ্রেফতার সাতক্ষীরায় বিএসটিআই অনুমোদিত লাইসেন্স না থাকায় দুই ড্রিংকিং ওয়াটার মালিককে জরিমানা খুবিতে প্রফেসর দীপক কামাল মেমোরিয়াল স্কলারশিপ পেলন ১৬ শিক্ষার্থী মানবতার সেবায় রেড ক্রিসেন্টের ভূমিকা অতুলনীয় - চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ. লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থানের ঘোষণা ঝিনাইগাতীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ১৬টি টাওয়ারসহ পাইপ ধ্বংস, ১টি ট্রাক ও ২টি মাহিন্দ্র জব্দ বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার কাইয়ুমের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে, অভিযোগ পদবঞ্চিত নেতাদের কৃষ্ণনগরে কালিকাপুর সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসায় এডহক কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত নিয়মিত ক্রু মিটিং বাস্তবায়ন করায় পুরস্কার পেলেন বাকৃবির রোভার স্কাউট লিডার প্রথমবারের মতো ইন্টার্নশিপ পেল বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা আশাশুনিতে অঙ্কনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সম্পদ ও ঝুঁকি চিহ্নিত করণ কর্মশালা পীরগাছায় ভাবীর হোটেলে ১৯৯টাকায় পাওয়া যাবে একটি মোটরসাইকেল ভারতের ১৫ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের, দাবি দিল্লির

মাদ্রাসা শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বৈষম্য

মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন ( Contributor )

প্রকাশের সময়: 31-03-2024 02:48:12 pm

মাদ্রাসা শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বৈষম্য
                  মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন

একজন আদর্শ মানুষ ও দক্ষ সুনাগরিক  হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে পড়াশোনার কোন বিকল্প নেই। আর পড়াশোনা ছাড়া যেহেতু জ্ঞানার্জন করা কঠিন তাই ইসলাম ধর্মে জ্ঞানার্জনের ওপর ব্যাপক জোর দেয়া হয়েছে। 
পড়াশোনার ওপর গুরুত্ব দেয়ার কারণেই নবী করীম (সা.) এর প্রতি মহান আল্লাহ প্রথম যে ওহিটি নাজিল করেছেন, তা শুরু হয়েছে 'ইক্‌রা' শব্দটি দিয়ে। রাসূলাল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ। তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, "দোলনা থেকে শুরু করে কবরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মানুষকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।" হাদীস শরীফে এসেছে, "বিদ্বানের কলমের কালি, শহীদের রক্তের চাইতেও পবিত্র।"  জ্ঞানার্জন এক প্রকার ইবাদতের শামিল। জ্ঞানী ব্যক্তিদের  মর্যাদার কথা উল্লেখ করে আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে যারা জ্ঞানবান। (সূরা যুমার-৯)। 
জ্ঞানার্জন লাভ করার জন্য শিক্ষার বিকল্প নেই। আর মাদ্রাসা  শিক্ষাই হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষা ব্যাবস্থা। কারণ এ শিক্ষা ব্যবস্থায় ইহকালীন ও পরকালীন শিক্ষার অপূর্ব সমন্বয় সাধন হয়েছে। মাদ্রাসা কারিকুলামে আল কুরআন ও আল হাদীস সহ ইসলামী শরীয়া সংক্রান্ত , বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ বাস্তব জীবনের সাথে জড়িত বিভিন্ন বিষয় পাঠ্যভূক্ত। মাদ্রাসাগুলো সৎ, যোগ্য, দক্ষ, দেশপ্রেমিক ও নৈতিকগুণ সম্পন্ন নাগরিক গড়ে উঠার কারখানা। তাছাড়া প্রতি মূহুর্তে মাদরাসায় নৈতিক শিক্ষা ও ইসলামী মূল্যবোধ সম্পর্কে শিক্ষা দেয়। আজ পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়াবস্থায় কোন ছাত্র তেমন কোন বড় অপরাধ করেনি। এমন কি  শিক্ষা মন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম নাহিদ সাহেব অকপটে স্বীকার করেছেন "মাদরাসার ছাত্রদেরকে কালভার্ট নির্মাণ সহ অন্যান্য কাজে দায়িত্ব দিলে তারা কোন দূর্নীতি করবে না"।
বাংলাদেশের সংবিধানে শিক্ষাকে সকলের জন্য সমান মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও বাস্তবে তা কি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে?? স্বাধীন বাংলাদেশের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মাদ্রাসা শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বৈষম্য চোখে পড়ার মত। যদিও সেটা অনেকটা কমে এসেছে। মাদ্রাসায় শিক্ষক সংকট যা একটি অন্যতম বড় বৈষম্য। মাদ্রাসায় একজন শিক্ষককে বিভিন্ন সাবজেক্ট পড়াতে হয় কিন্তু স্কুল- কলেজের জন্য প্রতি সাবজেক্টের জন্য একজন করে শিক্ষক বরাদ্দ। এমন কি পূর্বে মাদ্রাসা ছাত্রদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী,বাংলা,অর্থনীতি, রাষ্টবিজ্ঞান সহ  সকল সাবজেক্টে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকলেও  দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় বাংলা ২০০ ইংরেজী ২০০ নম্বরের শর্তরোপের মাধ্যমে প্রধান নয়টি বিভাগে মাদরাসা ছাত্রদের  ভর্তি না করার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছিল। প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান সহ টপ ২০ জনের মধ্যে প্রায় ০৯/১০ জন থাকার পরও ভালো সাবজেক্টে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয়নি এই রকম নজির অনেক। অথচ সরকারী অধ্যাদেশের মাধ্যমে দাখিল ও আলিম কে যথাক্রমে এস এস সি ও এইচ এস সি সমামান দেয়া হয়েছিল।দীর্ঘ ২০/২৫ বছর মাদরাসা ছাত্ররা উপরোক্ত নয়টি বিষয় সহ বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি হয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। 
২০১৫ সাল হতে মাদ্রাসা বোর্ড শিক্ষার্থীদের জন্য দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের ইংরেজি ও বাংলা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে। ফলে ঢাবির এসব বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে আর কোনো বাধা থাকার কথা নয়। তবে গত বছর মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সেই শর্ত পূরণ হয়েছে। অভিযোগ আছে, তা সত্ত্বেও গত বছর ঢাবির ‘খ’ ইউনিটভুক্ত কলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের চয়েস ফরমে অনেকগুলো বিভাগ আসে নায়।
মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন ২০১৩ সালে বর্তমান সরকার উচ্চতর মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।  অবশ্য ২০০৬সাল থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া হতে ফাজিল ও কামিল সার্টিফিকেটে বিএ ও মাস্টার্সের মান পেয়েছে। উল্লেখ্য মান দেয়ার আগে যারা কামিল শ্রেণীতে অধ্যায়ন করেছিল তাদেরকে একাধারে তাফসীর, হাদীস ও ফিকাহ সহ বিভিন্ন বিষয়  পড়তে হয়েছে। যার ফলে বড় আলেম তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো। কিন্তু মান  দেয়ার পর তাদেরকে এত কিছু পড়তে হচ্ছে না। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার কারণে তুলনামূলক তেমন কোন আলেম তৈরী হচ্ছে না। এত কিছুর পর প্রশ্ন থেকে যায়, মাদ্রাসায় পড়াশুনার মান বৃদ্ধি পেয়েছে কি?? ফাজিল কামিলকে মান দেয়ার পরও বিসিএস সহ বিভিন্ন সরকারী চাকুরীতে অংশগ্রহণ করার কেন সুযোগ নেই?? আশা করি এই ব্যাপারে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন।

লেখক: সংগঠক ও কলামিস্ট । 
Tag