কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় আলী আকবর ডেইল দাখিল মাদ্রাসার সুপার জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে সরকার প্রদত্ত টিউশন ফি ও বিভিন্ন ফান্ডের টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ, মাদ্রাসায় না পড়লেও নিজের সন্তানের নামে উপবৃত্তির টাকা গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বেশ কিছু তথ্য এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
১। আমার বিরুদ্ধে না লিখার জন্য কিছু সাংবাদিকদের মাসোহারা দিই।
২। এনটিসিআর এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগদানের সময় উৎকোচ আদায়।
৩। পরীক্ষার হলে যাওয়ার অজুহাতে দাখিল পরীক্ষার্থীদের নিকট টাকা দাবি।
৪। মাদ্রাসায় না পড়লেও নিজের সন্তানের নামে উপবৃত্তির টাকা গ্রহণ।)
ওই সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. ইব্রাহিম খলিলসহ একাধিক শিক্ষক জানান, অভিনব কায়দায় নিয়োগ বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের নিকট দীর্ঘদিন যাবত রসিদ ব্যতীত অতিরিক্ত ভর্তি ফি ও রেজিস্ট্রেশন ফি আদায়, অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক কর্মচারীদের ছুটি প্রদান, মাদ্রাসার জমিজমা বর্গা লাগিয়তের টাকা আত্মসাৎ, বিনা ছুটিতে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকা, শিক্ষার্থীদের বিতরণের পর অবশিষ্ট বই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষক কর্মচারীদের অগোচরে বন্ধের দিন মাদ্রাসায় এসে চুরি করে বিক্রি, মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দকৃত ওয়াশ ব্লকের মোটর ও পানির ট্যাংক অনিয়মের মাধ্যমে আত্মসাৎ এবং পরীক্ষার হলে যাওয়ার অজুহাতে সহকারী শিক্ষকের মাধ্যমে দাখিল পরীক্ষার্থীদের নিকট টাকা দাবি করেন।
এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রাখার জন্য স্থানীয় জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন অভিযুক্ত ওই সুপার। এতে গেল মাস দুয়েক ধরে বেতন উত্তোলন করতে পারছেন না বলে জানান শিক্ষকরা। মাদ্রাসা পরিচালনায় ও শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত বোর্ডের ওয়েবসাইট এর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সদ্য এনটিসিআর এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, যোগদানের সময় বিভিন্ন অজুহাতে এবং স্থানীয় শিক্ষা অফিসারকে দেয়ার নামে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন সুপার জহিরুল ইসলাম। স্থানীয় বাসিন্দা না হওয়ায় পরিশেষে বিভিন্ন জোরজবরদস্তি ও হুমকি ধমকির ভয়ে দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করে মাদ্রাসায় যোগদান করেন। তিনি আরো জানান, চলতি বছর সরকার প্রদত্ত অবশিষ্ট নতুন বই বিক্রি করার জন্য তার সহযোগিতা চাই ওই সুপার। তবে এটা নিয়ম বহির্ভূত হওয়ায় অসম্মতি প্রকাশ করেন তিনি।
জানা যায়, গেল মাসতিনেক আগে অন্যত্র নিয়োগ পেয়েছেন মর্মে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি বরাবরে ছাড়পত্রের আবেদন করেন ওই সুপার। এর পরিপ্রেক্ষিতে যাবতীয় আয় ব্যয়ের হিসাব প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টরা। তবে যথাযথ হিসাব প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন মাদ্রাসা পরিচালনা কার্যক্রমে অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে বিভিন্ন অপকর্মসহ প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সুপার জহিরুল ইসলাম প্রথমে অনিয়ম দুর্নীতি ও টাকা আত্মসাৎ এর কথা অস্বীকার করেন। তবে কথার একপর্যায়ে তাহার বিরুদ্ধে না লিখার জন্য কথিত কিছু সাংবাদিকদের মাসোহারা দেন বলে জানান তিনি।
এদিকে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই সুপারকে সাময়িক বরখাস্তসহ আত্মসাৎকৃত সব টাকা মাদ্রাসার তহবিলে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ্ছাফা বি.কম পূর্বকোণকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত ব্যাপারে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
৩ ঘন্টা ২৮ মিনিট আগে
৩ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে
৪ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
৬ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
১২ ঘন্টা ৩৮ মিনিট আগে
১২ ঘন্টা ৪৪ মিনিট আগে