সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাহাদুরপুর
ভূবন মোহন কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ মোহিত কুমার দাশের বিরিদ্ধে স্কুলে
শিক্ষক জাকির হোসেনকে লাঞ্ছিত ও চাকুরিচ্যুত করার প্রতিবাদে ছাত্ররা
বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
শনিবার সকাল ৯ টায় স্কুলের সামনে সড়কে ছাত্ররা এ কর্মসূচি পালন করেন।
কর্মসূচিতে
অংশ নেন স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা । মানববন্ধনের
অংশগ্রহণকারী ছাত্ররা শিক্ষক লাঞ্ছিত প্রতিবাদে অধ্যক্ষ মোহিত কুমার দাসের
বিচার ও শাস্তির দাবি করেন।
তারা
বলেন অধ্যক্ষ শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার ও চাকুরিচ্যুতির হুমকির ধামকি
দেন। অধ্যক্ষের অশিক্ষক সুলভ আচরণের কারণে প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মানসহ
সার্বিক পরিবেশ ক্ষুন্ন হচ্ছে ।
গত
বুধবার (৩ জুলাই) কলেজ চলাকালীন সময়ে অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক জাকির
হোসেন অফিস সহকারীর কক্ষে বসে পরীক্ষার ফলাফল তৈরীর কাজ করছিলেন। এসময়
অধ্যক্ষ সেখানে উপস্থিত হয়ে ধমক দিয়ে তিনি কেন এই রুমে কৈফিয়ত তলব করেন এবং
তাকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। লজ্জা আর অপমানে কলেজ শিক্ষক হতভম্ব হয়ে
পড়েন। পরবর্তীতে প্রভাষক জাকির হোসেন অন্যান্য শিক্ষকদের ঘটনাটি অবহিত
করলে শিক্ষকবৃন্দ অধ্যক্ষের কাছে ছুটে যান এবং ঘটনা নিয়ে আলাপ করতে চাইলে
অধ্যক্ষ উত্তেজিত হয়ে শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালি গালাজসহ হুমকি দিতে
থাকেন। এসময়ে কয়েকজন শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করলে এক
পর্যায়ে সকল শিক্ষকদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান তিনি। অধ্যক্ষ মোহিত কুমার
দাশ ঘন্টাব্যাপী প্রভাষক জাকির হোসেনকে মানসিকভাবে অপদস্ত করা, চাকুরিচ্যুত
করাসহ মারমুখী হলে প্রভাষক জাকির প্রচন্ডভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে এক পর্যায়ে
তার সহকর্মীরা তাকে এম্বুলেন্স সহযোগে সাতক্ষীরা ইসলামি হাসপাতালে ভর্তি
করা হয়।
তারা আরো অভিযোগ
করে বলেন অধ্যক্ষ মোহিত কুমার দাশ বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট স্কুলে
যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।
বিদ্যালয় থেকে শুরু করে কলেজ শাখার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ও
রাজনীতিতে বিভক্ত করে রেখেছেন তিনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একের পর এক এহেন
ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। তারা
অবিলম্বে এই অধ্যক্ষের অপসারণ ও শাস্তির দাবি জানান।
কর্মসূচি
চলাকালীন সকাল ১০টার দিকে বুধহাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ
জাহাঙ্গীর হোসেন খান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের
বুঝিয়ে স্কুলে পাঠায় ।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মোহিত
কুমার দাশ বলেন,কিছু বহিরাগত ছেলেরা এসে স্কুলের সামনে আমার বিরুদ্ধে
বিক্ষোভ করছে সেখানে স্কুলের শিক্ষার্থীরা নাই বলে দাবি করেন তিনি। তিনি
বলেন ঘটনার দিন প্রভাষক জাকির হোসেন আমার রুমে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায়
গালিগালাজ করা সহ চেয়ার উঠিয়ে মারধর করতে আসে। ঘটনার সময় অন্যান্য
শিক্ষকদের সহায়তায় তাদেরকে থামানো হয়। পরে শুনলাম প্রভাষক জাকির হোসেন
অসুস্থ হয়ে সাতক্ষীরা ইসলামী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার শারীরিক
অসুস্থতার বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা হয়নি বলে জানান তিনি।