দ্রুত বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবে দেখতে চাই: নাহিদ ইসলাম কেঁপে উঠল যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি শাকিবের ‘তাণ্ডব’ থেকে বাদ ২ নায়িকা, কারণ কী? শার্শায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ পালন ইসলামপুর থানায় বেড়েছে দালাল, ২ দালালকে থানায় প্রবেশ না করতে ওসির হুঁশিয়ারি বর্ষবরণ | বিথী রহমান তাঁরা সবাই আজ মারা গেছে | মোঃ মাজিদুর রহমান শাহীন ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় ডোমারবাসীর বর্ষবরণ সরকারের মূল লক্ষ্য কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা যেন ফিরে না আসে’ পলাশে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ উদযাপন ঢাকার আকাশে ব্যতিক্রমী ড্রোন শো খুবিতে নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন ন স্বপ্ন থেমে গেল,কুবির তিন্নি আর নেই দেশে চীনের বিনিয়োগকারীদের এফবিসিসিআই এর পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে : হাফিজুর রহমান বগুড়ায় নানা আয়োজনে নববর্ষ উদযাপন আলোচনা-ঐক্যের মাধ্যমে নির্বাচনী রোডম্যাপসহ সব সমস্যার সমাধান হবে: মির্জা ফখরুল কুবির বৈশাখী মেলায় ১০ টাকায় মেয়েদের মন নওগাঁর নিয়ামতপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো শুভ নববর্ষ ১৪৩২ কমলগঞ্জে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে হাজার হাজার মুসল্লিদের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ

দেশ শ্রীলঙ্কা হয়নি, তাদের মুখে ছাই পড়েছে : প্রধানমন্ত্রী

দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 12-11-2022 05:58:21 am

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হবে বলে অনেকেই বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাদের মুখে এখন ছাই পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 


গতকাল শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্য আয়োজিত যুব মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি।  


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলেছিল দেশ শ্রীলঙ্কা হবে, এটা হবে; সেটা হবে। তাদের মুখে ছাই পড়েছে। সেটা হয় নাই, সেটা হবেও না। কিন্তু আমাদের কাজ করতে হবে।’ 


বিরোধীদের কথা বা হুমকিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করে, অর্থলুট করে বিদেশে টাকা পাচার করে, বিদেশে গিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারাই বড় বড় কথা বলছে। আমরা কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা সেই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। 


‘এই ময়দানে জাতির পিতা বলেছিলেন এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমিও বিশ্বাস করি কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ওরা (বিএনপিসহ বিরোধী পক্ষ) যতো কথায় বলুক, বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, আমরা এগিয়ে যাব। জাতির পিতার বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবেই গড়ে তুলব।’ 


প্রধানমন্ত্রী একই সাথে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দায় সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি এড়াতে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তৃণমূলে যেতে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। 


এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সেজন্য সবাইকে নিজ নিজ জমিতে উৎপাদন করার পাশাপাশি অন্যদেরও উতসাহিত করতে কাজ করার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা।


করোনা মহামারির কারণে প্রায় আড়াই বছরের বেশি সময় পরে সরাসরি জনসমাবেশে অংশ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 


নির্ধারিত সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করার পর সমাবেশস্থলে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে সমাবেশ উদ্বোধন করেন। এরপর মঞ্চে আসার পর শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। 


ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের পক্ষ থেকে কাঠের ভেতর খোদাই করা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি তুলে দেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন বাবুল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। 


জাতির পিতার আরেকটি ছবি তুলে দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ গড়ার কাজে যুবলীগের মনোযোগী হতে হবে। করোনা মোকাবিলায় বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি, টেস্ট করিয়েছি। ঠিক তেমনিভাবে দেশ ও মানুষের সেবা করতে হবে। এজন্য যুব সমাজকে অনুরোধ করব, যেহেতু ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, এ জন্য সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমদানি করতে হয় যেসব পণ্য সেগুলোতে আমরা সমস্যা পড়ে গেছি। এজন্য আমি আহ্বান করেছিলাম যেন এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী না থাকে। নিজের গ্রামে যান। সেখানে কোনো জমি যেন অনাবাদী না থাকে সেজন্য কাজ করতে হবে। অন্যের জমিও যাতে অনাবাদী না থাকে সেটিও বলতে হবে। সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। আমাদের ইনশাল্লাহ কিছু হবে না। এ জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।’


তিনি বলেন, যুবসমাজকে উৎপাদন বাড়াতে হবে, দেশের মানুষের কল্যাণ করতে হবে। 


যুব সমাজকে নানাভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বিনা সুদে ঋন নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবে। আওয়ামী লীগের ২০১৮ নির্বাচনি ইশতেহার তরুণদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। কারণ তরুণরাই পারে দেশ গড়তে।’ 


বিরোধী দলের সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ অনেকেই অনেক কথা বলছেন, সমালোচনা করছেন। তারা উন্নয়ন নাকি চোখে দেখে না। চোখ থাকতে যদি কেউ অন্ধ হয় তাকে তো কিছু দেখানো যায় না। কিন্তু তারাতো ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল তারাও ভোগ করছে। মোবাইল ব্যবহার করছে। সবই তো আওয়ামী লীগের দেওয়া।’ 


তিনি বলেন, ‘সাড়ে আট হাজার ডিজিটাল আমরা করেছি। কতো যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আর বিএনপির আমলে কি করেছে। জিয়া-এরশাদ-খালেদা সবই একই ইতিহাস। জিয়া সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া অরারেশন ক্লিনহার্টের নামে হাজার নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছেন। আর ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করেছে। তেমনি খালেদা জিয়াও অপারেশন ক্লিনহার্টের ইনডেমিনিটি দিয়েছে। খুনিদের লালন পালন করা এটা ওদের চরিত্র।’ 


বিএনপির নেতৃত্বের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের নেতৃত্বে বিএনপি চলে তারা কে? জিয়া ট্রাস্টের একটি টাকাও এতিমদের হাতে যায়নি। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা তারা মেরে দিয়েছে। এজন্য খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজা হয়েছে। সে হলো বিএনপির নেত্রী। 


তিনি বলেন, ‘বিএনপির আরেক নেতা মানি লন্ডারিংয়ে..., তারা লুটপাটের কথা বলে, তারেক জিয়ার শাস্তিই হয়েছে মানি লন্ডারিংয়ের জন্য। তার কেসে আমেরিকা থেকে এফবিআই এর লোক এসে বাংলাদেশে সাক্ষী দিয়েছে। তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে। মানি লন্ডারিং কেসে ৭ বছরের সাজা হয়েছে, ২০ কোটি টাকা জরিমানা। আর গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী তার জন্য সে সাজাপ্রাপ্ত। যাদের নেতাই হচ্ছে খুন, মানি লন্ডারিং অবৈধঅস্ত্র চোরাকারবারী আসামি, তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না।


‘এটা হলো বাস্তবতা। আর কিছু বলতে চাই না। একটা কথায় বলতে চাই। খালেদা জিয়া আমলে বাজেট ছিল মাত্র ৬৪ হাজার কোটি টাকা, আর আমরা ২০২২-২৩ বাজেট দিয়েছি ছয় লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। উন্নতি না হলে এতো বাজেট দিতে পারলাম কি করে। পুরো বাংলাদেশে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন যুব সমাজ গড়ে তুলতে চাই।’ 


পদ্মা সেতুর দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি। এই সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কিন্তু কানাডার আদালত বলে দেয় পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আবার কানাডার আদালত আরেকটি রায় দিয়েছিল সেটা হচ্ছে- বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।’ 


তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেশে কোনো মানুষ গৃহহীন ভৃমিহীন থাকবে না। আমি যুবলীগকে ধন্যবাদ জানাই, তারাও মানুষকে ঘর করে দিয়েছে। করোনাকালীণ সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার কাজ করায় যুবলীগের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। সেই সাথে যুব সমাজকে সন্ত্রাস, জঙ্গি, দুর্নীতি, মাদক থেকে দুরে থেকে দেশের কল্যাণকর কাজে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। 


তিনি বলেন, প্রতিটি নেতাকমৃীকে সেভাবে কাজ করতে হবে অন্যদের মধ্যেও সেই চেতনা গড়ে তুলতে হবে। সেই চেতনায় বাংলাদেশের উন্নতি হবে। 


রিজার্ভ নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জাবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা আজ রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে। ৯৬ সরকার গঠনের আগে বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। রিজার্ভ ছিল ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মাত্র দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল রিজার্ভ। সেখানে করোনাকালীন সময়ে আমরা রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠিয়েছিলাম।’ 


রিজার্ভ কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটার চিত্রও তুলে ধরে সরকারপ্রধান। বলেন, ‘বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা লাগানোর জন্য ঘরের টাকা ঘরে থাকছে সুদের টাকাটাও ঘরে থাকছে। দেশের জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছি।’ 


যুব মহাসাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অন্যরা।