সাতক্ষীরায় আছিয়া হত্যার বিচারের দাবিতে জামায়াতের মহিলা বিভাগের মানববন্ধন অনুষ্টিত কবিরহাটে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ ঝিনাইগাতীতে ২৫ মার্চ ও ২৬ মার্চ উদ্‌যাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত পুলিশের ১২৭ কর্মকর্তার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ কুতুবদিয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ঘাটাইলে গারোবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ৮ দোকান ভস্মীভূত ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি উখিয়ায় চাচীর সাথে পরকিয়া প্রেমের জেরে প্রাণ দিতে হলো যুবককে! কক্সবাজারে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা ঢাবির বিজয় একাত্তর হলে আইএইচসি পরিবারের ইফতার বাঘায় ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন বিএনপি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত লালপুরে মাদকের আসর বন্ধ করায় সাংবাদিকের নামে থানায় অভিযোগ বগুডার শেরপুর বার্মিজ চাকুসহ যুবক গ্রেফতার শ্রীমঙ্গলে প্রশাসনের অভিযানে আড়াই কোটি টাকা মূল্যের খাস জমি উদ্ধার বগুড়ার শেরপুর উপজেলা ও পৌর যুবদলের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হৃদয়ে নান্দাইল এর উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত বগুড়া আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ ৩নং খামারকান্দী ইউনিয়ন নতুন কমিটি গঠন তারেক জিয়ার নির্দেশ মানুষের জন্য কাজ করতে হবে কমলগঞ্জে- মহসিন মিয়া মধু সাত কলেজকে স্বতন্ত্র কাঠামো করার লক্ষ্যে চূড়ান্ত হলো নতুন নাম। বড়লেখা সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ

দেবহাটার বাজারে উঠতে শুরু করেছে পানিফল

দেবহাটার বাজারে উঠতে শুরু করেছে পানিফল



 

মোঃ আজগার আলী, সদর উপজেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা:  

জেলার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে পানি ফল। আগাম চাষ করা ফল বিক্রি করে লাভের আশা করছেন চাষীরা। অন্য ফলের পাশাপাশি পানি ফল বাজার দখল করতে শুরু করায় দিনে দিনে চাহিদা বাড়ছে। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফলটি ছোট বড় সকলের কাছে পছন্দের।

কৃষি অফিসের তথ্য সুত্রে জানাগেছে পানি ফলের আদিনিবাস ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকা হলেও এর প্রথম দেখা পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকায়। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় পানি ফলের বাণিজ্যিকভাবে চাষ অনেক আগেই শুরু হয়েছে। পানিফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। জলাশয় ও বিল-ঝিলে এ ফলটি জন্মে। পানি ফলের এক একটি গাছ প্রায় পাঁচ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পানি ফলের আরেক নাম ‘পানি সিংড়া’।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, ফল চাষ শুরু হয় ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এবং ফল সংগ্রহ করা হয় অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে। পানিফল কচি অবস্থায় লাল, পরে সবুজ এবং পরিপক্ক হলে কালো রং ধারণ করে। ফলটির পুরু নরম খোসা ছাড়ালেই পাওয়া যায় হৃৎপিন্ডাকার বা ত্রিভুজাকৃতির নরম সাদা শাসঁ। কাঁচা ফলের নরম শাসঁ খেতে বেশ সুস্বাদু। পানি ফল কাঁচা খাওয়া হয়, তবে সিদ্ধ করেও খাওয়া যায়। কাঁচা পানিফল বলকারক দুর্বল ও অসুস্থ মানুষের জন্য সহজপাচ্য খাবার। ফলের শুকনো শাঁস রুটি করে খেলে এলার্জি ও হাত-পা ফোলা রোগ উপশম হয়। পিওপ্রদাহ, উদরাময় ও তলপেটের ব্যথ্যা উপশমে পানিফল খাওয়ায় প্রচলন রয়েছে। বিছাপোকা কামড়ের যন্ত্রণায় থেঁতলানো কাঁচা ফলের প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।

দেবহাটার সখিপুর গ্রামের পানিফল চাষি আব্দুল গফ্ফার জানান, গত কয়েক বছর ধরে আমি পানি ফল চাষ করছি। প্রথমে মানুষের মাঝে তেমন সাড়া পাওনা না গেলেও দিন দিন এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পানিফল চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি একটি ৫ বিঘা জমি লিজ নিয়ে পানি ফলের চাষ শুরু করেছেন। শুরুতেই এই চাষ লাভের আশা দেখিয়েছেন তাকে। তিনি আগামী বছর আরও বেশি জমি নিয়ে চাষ করবেন বলেও জানান।

আরেক পানিফল চাষি শামছুর রহমান বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে পানিফল চাষ করে আসছেন। এবছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে এ চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি ১৫/২০ মণ ফলন পাচ্ছেন। শুরুতেই যার প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছেন।

সখিপুর মোড় এলাকার খুচরা পানিফল বিক্রেতা আব্দুল গফুর জানান, বর্তমানে তিনি ৪০ টাকা কেজিতে ক্রয় করে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রয় করছেন। এতে তিনি কেজিতে ১০ টাকা হারে লাভ করে দিনে ৫০০/৭০০ টাকা উপার্জন করছেন।

সখিপুর মহিলা কলেজ এলাকার ইমরান হোসেন জানান, প্রতিদিন সকালে চাষিদের কাছ থেকে পানিফল ক্রয় করে সারাদিন ধরে তা বিক্রয় করেন। এ ব্যবসা করে তিনি সাংসারিক চাহিদা মেটাচ্ছেন।

পাইকারি পানিফল ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম জানান, চাষের মৌসুম আসার আগে তিনি অর্ধ শতাধিক চাষীর মাঝে অর্থ বিনিয়োগ করেন। পরবর্তীতে ফলন আসার পরে বাজার দর অনুযায়ী উৎপাদিত ফসল ক্রয় করেন। এভাবে ১০/১২ বছরের বেশি সময় তিনি পানিফল ব্যবসায় নিয়োজিত আছেন। প্রতিদিন তিনি ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, বরগুনা, চিটাগাং, সিলেট, রাজশাহী, বেনাপোল, যশোর, নাটোর, বগুড়া, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ফল রপ্তানি করেন। বর্তমান জেলার বাইরের বাজার ভেদে পাইকারীভাবে বিক্রি করেন তিনি।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. ইউনুস আলী জানান, এবছর দেবহাটাতে আনুমানিক ৫০ হেক্টর জমিতে পানিফল চাষাবাদ করা হচ্ছে। প্রতি বিঘায় ১৫/২০ মণ ফলন পেয়ে ২০/২৫ হাজার টাকা লাভবান হবেন কৃষক।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শওকত ওসমান জানান, পানিফল কৃৃষি খাতে চাষ হিসেবে ধরা না হলেও এটি অতিদ্রুত চাষের খাতে আনা হতে পারে। তাছাড়া অন্য বছরের তুলনায় এবছর আবাদ বেড়েছে। কৃষি অধিদপ্তর থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ অবাঞ্ছিত ফলটি চাষাবাদে খরচ কম ও অল্প পরিশ্রমে বেশ লাভবান হওয়ায় প্রতিবছর আগ্রহ বেড়ে চলেছে পানি ফল চাষিদের।


Tag
আরও খবর