আক্কেলপুর বিএনপির নেতা কর্মীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত- ৫
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পৌর শাখার ৩টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন নিয়ে কমিটির পক্ষে ও বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছে। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কয়েক দফায় পৌর এলাকার কাঁচা বাজারে ঘটেছে। পরে কমিটি গঠণের পক্ষে থাকা নেতা কর্মীদের উপস্থিতিতে কাঁচা বাজার ব্রিজ এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে পৌর এলাকার ওই তিনটি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতরা হলেন, কমিটি গঠণের পক্ষে থাকা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহব্বায়ক আফাজ উদ্দীন, থানা আহব্বায়ক কমিটির সদস্য আমিনুর রশিদ ইকু, সদ্য ঘোষিত ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান এবং কমিটি গঠনের বিপক্ষে অবস্থান করা বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী শ্যামল।
জানা গেছে, কমিটি গঠনের পক্ষে থাকা আক্কেলপুরের বৃহৎঅংশের নেতাকর্মীরা পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পৌর এলাকার ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে জমায়েত হতে শুরু করেন। এসময় কমিটি গঠনের বিপক্ষে থাকা কয়েকজন নেতা কর্মী পূর্ব থেকে কাঁচা বাজার ব্রিজের সামনে অবস্থান করে দলীয় কার্যালয়ে যেতে বাধা প্রদান করে। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ও কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের মোট ৫ জন আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ঘটনাস্থলে একজন ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ইতিপূর্বেও বিএনপি’র পৌর এলাকার ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে উভয় পক্ষের দ্বন্দে¦ ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে গঠিত কমিটি বাতিল চেয়ে একাধিকবার বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছিল বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া নেতা কর্মীরা।
সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ এনে উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ন আহব্বায়ক কামরুজ্জামান কমল বলেন, আমরা পৌর বিএনপি’কে গতিশীল করতে পৌরসভার ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করার জন্য দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলাম। এসময় কপিতয় সন্ত্রাসী কমিটি গঠনকে পন্ড করার জন্য আমাদের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের চারজন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে উপজেলা বিএনপি’র আহব্বায়ক কমিটির সদস্য এম.কেরামত আলী বলেন, তারা বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ রেখে পৌর বিএনপির পকেট কমিটি গঠন করছেন। আমরা এর বিপক্ষে রয়েছি। পকেট কমিটি গঠনের প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাদের উপর চড়াও হলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। জুলফিকার আলী শ্যামলের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে বগুড়া স্থানান্ত করা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মইনুল ইসলাম বলেন, পৌর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে মাঠে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট মুনিরা সুলতানা বলেন, বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আমরা মাঠে কাজ করছি।