সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গনিনগর ষোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষকরা। সোমবার ১১ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় শিক্ষার্থীদের উশৃংখলতায় পাঠদানের সুষ্টু পরিবেশ নেই জানিয়ে ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে চলে যান তারা। কোন ক্লাস ও রোলকল না নিয়ে অসময়ে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার প্রতিবাদে বিদ্যালয় ত্যাগ না করে বিক্ষোভ করেছেঅত্র বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ গত কয়েক মাস ধরেই ঠিকমত ক্লাস না নিয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে চলে যান শিক্ষকরা। এতে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে। তবে শিক্ষকদের দাবী কয়েক মাস ধরেই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের কোন নিয়ম কানুন না মেনে শিক্ষকদের সাথে নানা বাক বিতন্ডায় জড়াচ্ছেন এবং অনেকে অশোভন আচরণ করছেন। বিদ্যালয়ে পাঠদানের পরিস্থিতি অবনতি থাকায় শিক্ষকরা পাঠদান থেকে সরে দাড়িয়েছেন।
খবর পেয়ে সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় সকাল সাড়ে ১০ টা বাজলেও ক্লাস না করে শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গনে জড়ো হয়ে হইচই করছে। এবং স্কুলের শিক্ষকরা ক্লাসে না গিয়ে শিক্ষক মিলনায়তনে বসে আছেন। এরপর দুপুর ১২ টায় ছুটির ঘন্টা বাজিয়ে ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন শিক্ষকরা। তবে ছুটির ঘন্টা বাজলেও বিদ্যালয় ত্যাগ না করে বিদ্যালয়ে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
ক্লাস বর্জন করার বিষয়ে বিদ্যালয়ের সিনিয়ন শিক্ষক রথীন্দ্র কুমার দাশ সহ অন্যন্য শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থীদের উশৃংখল আচরণ ও আক্রমণাত্বক মনোভাবের কারণে মান সম্মানের ভয়ে আমরা ক্লাস বর্জন করেছি। এর আগেও বার বার অভিভাবক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা শিক্ষার্থীদের বুঝালেও তারা এখনও আক্রমণাত্বক রয়েছে। যেকোন সময় ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে। প্রকৃতপক্ষে এই মুহুর্তে স্কুলে ক্লাস নেওয়ার কোন পরিবেশ নেই। এই বিষয়গুলো আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
অশোভন আচরণের কথা অস্বীকার করে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শিমুল কান্তি দাশ, হুমায়রা আক্তার সহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত কয়েক মাস আগে নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ এনে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক তদবির আলমের অপসারণ চেয়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছিলাম আমরা। তখন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের দাবী মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখনও তা পূরন হয়নি।আন্দোলনের পর থেকে প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এরপর থেকেই শিক্ষকরা ঠিকমত ক্লাস না নিয়ে মনগড়া মত বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে চলে যাচ্ছেন। আজও তারা কোন ক্লাস না নিয়ে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে চলে গেছেন। তারা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আনার পায়তারা করছেন যা আমরা কখনও মেনে নেব না। প্রধান শিক্ষক ব্যতিত অন্যান্য শিক্ষককের সাথে আমাদের কোন সমস্যা নেই। আমরা এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক তদবির আলমের দ্রুত অপসারণ চাই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা জানান, মূলত বাহিরের কিছু গোষ্ঠীগত কোন্দল থেকেই স্কুলে এ বিশৃংখলা তৈরী হয়েছে। দিনদিন স্কুলের লেখাপড়া চরম বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুলের পাঠদানের সুষ্টু পরিবেশ তৈরীর জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহ এলাকাবাসীর সচেতনতা প্রয়োজন।
মুঠোফনে কথা হলে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক তদবির আলম বলেন, এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে আনিত একটি অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের পর আমার বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত আসবে আমি তা মেনে নিব।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, ক্লাস বর্জনের বিষয়ে আমার জানা নাই, তবে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে শুনেছি। কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।
৮ ঘন্টা ২৪ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৩২ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৪১ মিনিট আগে
৮ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ২৫ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ১৩ মিনিট আগে
১০ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে