সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি-সংগঠন নিষিদ্ধ করা যাবে, অধ্যাদেশ অনুমোদন সৃষ্টি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, তাণ্ডব চালাবে দুই বিভাগে নওয়াপাড়া পীরবাড়ি মাদ্রাসার মহাদ্দিস আবু তালহা (রহ:) এর কবর জিয়ারত ও স্মৃতিচারণ বরিশালে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ঘটনায় বিক্ষোভ তাপদাহে পুড়ছে মোংলা,প্রাণীকুলে নাভিশ্বাস শ্রীমঙ্গলে নারী মাদক ব্যবসায়ির বসতঘরে মিললো ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৩৫০ টাকা, ইয়াবাসহ গ্রেফতার-৫ আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট সব পেজ বন্ধে চিঠি দেবে বিটিআরসি নতুন সংবিধান প্রণয়ন হতে অনেক সময় লাগবে: আসিফ নজরুল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম  নিষিদ্ধ ঘোষণায় জয়পুরহাটে ছাত্র-জনতার আনন্দ মিছিল মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রদলের কর্মী শুভ এবং মাহিন নাগরপুরে গৃহবধূর অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা, চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আ.লীগের নিবন্ধন দ্রুত বাতিল করতে হবে, ইসিকে নাহিদ আমি তোমাদের ডাক্তার ভাই, আন্তরিক ও ভালোবাসার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন ডা: এড্রিক বেকার ঢাকা - না:গঞ্জ রুটে রেলের ডাবললাইন প্রকল্পের কাজ শুরু দোয়ারাবাজারে যুবকের আত্মহত্যা। কিশোরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই সহোদরসহ তিনজন নিহত ঝিনাইদহে বজ্রপাতে নিহত কৃষক পরিবার পেল আর্থিক সহায়তা মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীর উপর হামলা,আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশকে ৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম নিষিদ্ধ হলো ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নন্দীগ্রামে জামায়াত-শিবিরের বিক্ষোভ মিছিল

কৃষি অফিসের চরম দুর্নীতিতে পৌনে ৮ লক্ষ টাকার ৪ লক্ষ টাকাই গায়েব!




সরকারিভাবে দেয়ার কথা প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকার কৃষি পণ্য, অথচ কৃষকদের দেয়া হলো হাজার দুয়েক টাকার কষি উপকরণ বা পণ্যসামগ্রী। ৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার কৃষি পণ্যের মধ্যে ৪ লক্ষ টাকা গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। বালিশ কান্ডের মতো এবার কৃষকদের দেয়া কষি উপকরণের ক্ষেত্রে এমন চরম দুর্নীতি ফুটে উঠেছে। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রান্তিক কৃষকদের বিনামূল্যে প্রদানকৃত পণ্যে তুঘলকি ওই কান্ড হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ইফনাপ প্রকল্পের বসতবাড়ির আঙিনা, বসতবাড়ি সংলগ্ন পতিত জমি, বসতবাড়ির অন্যান্য ও অব্যবহৃত স্থানে পারিবারিক পুষ্টিবাগান প্রদর্শনী স্থাপনের জন্য কৃষকপ্রতি ৮ রকমের বিভিন্ন কষি উপকরণ বিতরণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

ইফনাপ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডক্টর মোহাম্মদ আকরাম হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত গত ৩ নভেম্বরের ভাংতি বিবরণীর ওই চিঠিতে জনপ্রতি কৃষকের দেড় শতক জমিতে ওই পণ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য মোট ৪৪০০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। চিঠিতে ওই বরাদ্দের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি করে পানির ঝাঁঝরি প্রকল্প সদর দপ্তর থেকে সরবরাহের করার কথাও উল্লেখ করা হয়। ইফনাপ প্রকল্পের ওই চিঠির আলোকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা কৃষি অফিস এখন পর্যন্ত ১৭৫ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে পণ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে বলে জানা গেছে।

গত ১২ ডিসেম্বর উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৭৫ জন প্রদর্শনী কৃষক বা চাষির মাঝে কৃষি সামগ্রী বিতরণ করা হয়। কিন্তু বিতরণকৃত পণ্যের মূল্য তালিকায় চরম দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠেছে। কৃষি উপকরণ বা পণ্য সামগ্রী পাওয়া কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইফনাপ প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে তাদেরকে দেয়া হয়েছে জনপ্রতি ২ কেজি জিপ সার, পটাশ ৫ কেজি, ইউরিয়া ৫ কেজি, ঢেপ সার ৫ কেজি, জৈব সার ৫ কেজি, প্লাস্টিক পট ১টা, নেট ২৫ হাত, বিভিন্ন শাক সবজির বীজ ২২ প্যাকেট, ১টি করে লিচু, পেয়ারা, কুল ও ডালিমের চারা এবং ২টি লেবুর চারা। প্রদানকৃত ছয়টি গাছের চারা অত্যন্ত ছোট, পাটকাঠির মতো চিকন ও মৃতপ্রায়। স্থানীয় বাজারে একাধিক দোকানে খোঁজ নিয়ে যে মূল্য তালিকা জানা গেছে তাতে ফুঁটে উঠেছে উপজেলা কৃষি অফিসের অর্থনৈতিক চরম দুর্নীতির চিত্র।

বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী প্রদানকৃত ২ কেজি জীপ সারের মূল্য ৭৫ টাকা, ৫ কেজি পটাশের দাম ১২৫ টাকা, ৫ কেজি ইউরিয়ার দাম ১০৫ টাকা, ৫ কেজি ঢেপ সারের দাম ১০০ টাকা, ৫ কেজি জৈব সারের দাম ৬০ টাকা, একটি প্লাস্টিকের পটের দাম সর্বোচ্চ ৭০ টাকা, ২৫ হাত নেটের দাম ২৫০ টাকা, বিভিন্ন শাক সবজির বীজ ২২ প্যাকেটের দাম সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা, ছয়টি গাছের চারার দাম ৫০০ টাকা। সবমিলিয়ে সর্বমোট প্রদানকৃত পণ্যের মূল্য ২০৮৫ টাকা। অথচ জনপ্রতি পণ্য সামগ্রী দেয়ার কথা ৪৪০০ টাকার। এতে কৃষকপ্রতি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২৩১৫ টাকার তছরুপ করা হয়েছে। আর ১৭৫ জন কৃষকের বিপরীতে জনপ্রতি ২৩১৫ টাকা করে মোট ৪ লক্ষ ৫ হাজার ১২৫ টাকার পণ্য কৃষকদের না দিয়ে তছরুপ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত ১৭৫ জন কৃষকের জন প্রতি ৪৪০০ টাকা হারে মোট ৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার কৃষি পণ্য দেয়ার কথা থাকলেও প্রায় ৪ লক্ষ টাকার বেশি উধাও করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কৃষি সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি জানান, সরকার প্রদত্ত প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকার পণ্যের বিপরীতে দেয়া হয়েছে হাজার দুয়েক টাকার কষি উপকরণ বা পণ্য সামগ্রী। বাকি টাকার কোন হদিস নাই। এতে ৪ লক্ষ টাকার অধিক দুর্নীতি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কলারোয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শুভ্রাংশু শেখর দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা কি কি উপকরণ দেয়া হয়েছে জানতে চান। উপকরণের তালিকা তাকে জানালে তখন তিনি বলেন, আমি ঢাকায় আছি পরশুদিন অফিসে আসেন, কথা বলবো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, আমি বিষয়টি দেখবো। আপনারা সাতক্ষীরার ডিডি সাহেবের সাথে কথা বলতে পারেন। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন ভ্যাট, ব্যক্তিগত আয়কর, অডিট খরচ ও অন্যান্য পারপাচে টাকা খরচ হয়। অডিটের জন্য খরচ লাগে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অডিটে খরচ লাগে, বিভিন্ন পারপাচে খরচ লাগে। বিভিন্ন উপকরণের দাম বাড়তে পারে এমনটি ডিডি সাইফুল ইসলাম বললে তাকে প্রশ্ন করা হয় গত ১৫-২০ দিনের মধ্যে কোন জিনিসের কি ডাবল দাম হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, পরে কথা হবে।

এদিকে, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যখন সামগ্রিকভাবে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে তখন কলারোয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তুঘলকি এই চরম দুর্নীতি কান্ডে প্রান্তিক কৃষক, কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সচেতন মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।


Tag
আরও খবর