শার্শার বাগআঁচড়ায় পবিত্র রমজানকে পুঁজি করে পাঁকা কলার দাম তিনগুণ
শার্শার বাগআঁচড়ায় পবিত্র রমজানকে পুঁজি করে পাঁকা কলার দাম তিনগুণ
কাল থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান।রোজাদাররা সারাদিন রোজা রেখে ইফতারে রকমারী খাদ্যের মধ্যে আলাদা মাত্রা হিসেবে যোগ করে পাঁকা কলা। তাই রমজান এলে পাঁকা কলার একটু বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়।
তাছাড়া পাঁকা কলা মানবদেহের জন্য খুবই পুষ্টিকর ও একটি সহজলভ্য ফল।পুষ্টিকর ও দামে সস্তা তাই হাতের নাগালেই পাওয়া যায় বিভিন্ন জাতের এ কলা। তাই এটি গরিব থেকে ধনী সবারই প্রিয়। সারা বছরই থাকে এর চাহিদা।
এজন্য সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও প্রতিবছর রোজাকে পুঁজি করে এর দাম বেড়ে যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।রমজানকে পুঁজিকরে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া বাজারে কলার বাজারে যেন আগুন লেগেছে। রমজানের আগের দিনই কলার দাম বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
গত ১৫ দিন আগেও যে মত্তমান কলা বিক্রি হয়েছে আকার ভেদে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।রোজার শুরুর আগের দিন থেকে এক লাফেই সেই কলার দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা।সাগর কলা ১৫ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা সেই কলা এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
রমজানের আগের দিন থেকে হঠাৎ এত দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তা ও ক্রেতারা। চড়া দামের জন্য রোজায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের নাগালের বাইরে চলে গেছে কলা।
বিক্রেতাদের দাবি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কলার সরবরাহ পর্যাপ্ত ছিল। দাম বাড়াবে বলেই সংকট তৈরি করছেন এ বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীরা। যেন হঠাতই সোনার হরিন গেছে কলা। রমজান শুরুর আগের দিন ইফতারের জন্য অনেকেই কলা কিনতে ভিড় জমান বাগআঁচড়া বাজারে। তবে তাদের কাছ থেকে কলা ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন বলে এ সময় অভিযোগ করেন।
শনিবার বাজার ঘুরে দেখা যায় কলা ব্যবসায়ীরা একটু ভালো মানের কলা বিক্রি করছে ১০০ টাকা কেজি।মাঝারি কলা ৮০ টাকা।সাগর কলা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
বিক্রেতারা সকলে একই সুরে বলছেন, কলার সংকট ও বেশী দামে কেনার কারণে দাম বেশী।তবে তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে তারা এক হয়ে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
কলা কিনতে আসা আজাদ আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, ইফতারে অন্যান্য ফলের সঙ্গে কলা খুবই জনপ্রিয় ও নিয়মিত একটি ফল। কিন্তু কলা কিনতে এসে দেখি দাম তিনগুন। আগে দাম কম থাকলেও রোজা আসতে না আসতেই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের পাকা কলার। অনেক ব্যবসায়ীই বেশি দামে তা বিক্রি করছেন। বছরের অন্য সময় ৩০/৪০ টাকা কেজি কলা পাওয়া গেলেও এবার তিনগুন দাম গুণতে হচ্ছে।প্রশাসনের কাছে তিনি বাজার তদারকি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্হা গ্রহনের অনুরোধ করেন।
আরেক ক্রেতা আব্দুল মতিন বলেন, এ সময় কলার এত দাম হাওয়ার কথা নয়। গরমে কলা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য বেশি দিন রাখা যায় না। কালো হয়ে যায়। তাই আগে গরমে কলার দাম কম থাকতো। কিন্তু এখন দেখছি সব উল্টো। শীতেও দাম বেশি, গরমেও দাম বেশি। আর রোজার জন্য আরও বেশি।
বাজারের কলা ব্যবসায়ী শামীম জানান, বর্তমানে বাজারে মত্বমান কলা ৭০ থেকে ৮০টাকা, সাগর কলা (বড়) ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে তাদের কিনতে হচ্ছে। তাই একটু বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দরদাম করলেও কোনো কলার দাম কমানো যাচ্ছে না। বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জানান,উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে বাজার মনিটরিং শুরু করেছে।কোন ব্যবসায়ী যদি পবিত্র রমজানকে পুঁজি করে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।