রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী খেতুর গ্রামে অবস্থীত শ্রীপাট খেতুরী ধাম (গৌরাঙ্গবাড়ী)। এই গৌরাঙ্গবাড়ী খেতুরী ধাম মন্দিরে পুজার নামে প্রবেশ করে অফিস কক্ষ, ম্যানাজারের কক্ষ, উপসনালয়ের কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা মারার অভিযোগে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০ জনকে বিবাদি করে গোদাগাড়ী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। গত ৮ মার্চ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি শ্রী বিদ্যুৎ নারায়ন সরকার।
বিবাদীগণরা হলেন ০১। সুনন্দন দাস রতন, পিতাঃ স্বর্গিয় পঞ্চানন দাস, ০২। শ্রী সুজন পাল, পিতাঃ স্বর্গিয় লাছমন পাল, ০৩। শ্রী রিংকু সাহা, পিতাঃ শ্রী গোপাল সাহা, সর্বসাং- ডুমুরিয়া, পো: প্রেমতলি, থানা- গোদাগাড়ি, জেলা- রাজশাহী, ০৪। শ্রী সুধির পাল, পিতাঃ স্বর্গিয় রামেশ্বর পাল, ০৫। বিজয় কর্মকার, পিতাঃ বিশ্বজিৎ কর্মকার, ০৬। গোপাল ঘোষ, পিতাঃ স্বর্গিয় ফণি ঘোষ সর্বসাং- খেতুর, পোঃ প্রেমতলি, থানা- গোদাগাড়ী, জেলা- রাজশাহী, ০৭। সজল ঘোষ, পিতাঃ বৈদ্যনাথ ঘোষ, সাং- হরিশংকরপুর, পোঃ পিরিজপুর, থানা- গোদাগাড়ী, জেলা- রাজশাহী ০৮। সহদেব পান্না, পিতাঃ শ্রীকান্ত পান্না, সাং- গোগ্রাম-পুজাতলা, পোঃ গোগ্রাম, থানা- গোদাগাড়ী, জেলা- রাজশাহী ০৯। নয়ন শীল, পিতাঃ কাশি শীল, সাং- মোল্লাপাড়া, পোঃ মাটিকাটা, গোদাগারী, রাজশাহী, ১০। দিপলাল কর্মকার, পিতাঃ আনন্দ কর্মকার, সাং-চৌদুয়ার, পোঃ পিরিজপুর, থানা- গোদাগাড়ী, জেলা- রাজশাহী, ১১। নিরেন খানকু, পিতাঃ হরিপদ খানকু, সাং- ছাতনিপাড়া, পোঃ পালপুর, থানা- গোদাগাড়ী, জেলা-রাজশাহী।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ১ নং বিবাদী সুনন্দন দাস রতন ও অন্যান্য বিবাদীগন গত ৭ মার্চ দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটের সময় গৌরাঙ্গবাড়ী খেতুরীধাম মন্দিরে পুজার নাম করে প্রবেশের পর অফিস কক্ষ, ম্যানাজারের কক্ষ, উপসনালয়ের কক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা মেরে মন্দির কমিটির পদত্যাগ দাবি করে। এমকি অফিসের গুরুত্বপূর্ন কাগজ পত্র ও ৭৬ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
গৌরাঙ্গবাড়ীর ম্যনাজার গোবিন্দ পাল বলেন, সুনন্দন দাস রতন গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ প্রচার ও প্রকাশনা দম্পাদক ও গৌরাঙ্গদেব ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য। সে আওয়ামীলীগ পতিত সরকারের পালাতক এমপি ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় ৫ আগষ্টের আগে প্রভাব বিস্তÍার করে একক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ট্রাষ্ট ভঙ্গের মত গুরুতর অন্যায় আচরণ ও কার্যকলাপ কার্যসিদ্ধান্ত করেছেন। তিলিবাড়ীতে বড় প্রায় ১২ বিঘার পুকুর খননের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। শ্রী বিকাশ কুমার সরকার ভিষণ ভাবে অসুস্থ থাকা সত্তেও উক্ত পুকুর খনন কাজ করেন এবং পুকুর লিজ গ্রহণে একাধিক পাটি অভিমত প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে সুনন্দন দাস রতন মৎস্য বিভাগের কোন কারিগরী বিশেষজ্ঞর মতামত না নিয়ে নিজে একক সিদ্ধান্তে পুকুরটি অধিক খনন করে ট্রাষ্ট বোর্ডের অর্থ খরচ করে। পরবর্তীতে নিজ গ্রহিতা বারংবার পুকুরটি অধিক খননের ফলে মাছ চাষে নানা সমস্যা হচ্ছে মর্মে ট্রাষ্ট বোর্ডে অভিযোগ উত্থাপন করে।
বিভিন্ন সভার ডেকোরাম ভঙ্গ করে সুনন্দন দাস রতনের চেয়ে প্রায় সিনিয়র এককাধিক সদস্য (ট্রাষ্টি) দের অশালীন উগ্র আচরণের মাধ্যমে অকথ্য ভাষায় অপমান করেন।
এদিকে মন্দিরের উত্তর পার্শ্বে ভিতরে রতন দাস ও দোসর দিপ লাল কর্মকারের জমি থাকায় ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থে প্লট আকারে অধিক অর্থে জমি বিক্রয় করার জন্য ট্রাষ্ট বোর্ডের কোনরূপ সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে চুপিসারে সনাতন ধর্মাবলমম্বীদের মহা উৎসব দুর্গাপূজার মধ্যে অনেক গাড়ী রাবিস (ইটের গুড়ি) ফেলে গৌরাঙ্গ বাড়ীর আবাদি জমি নষ্ট করে মন্দিরের পিছনে প্রায় ১২ ফুট চওড়া এল প্যাটার্নে নিজেদের জমির পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার উদ্রোগ গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থাপক গোবিন্দ পাল বাধা দান করলে সুনন্দন দাস রতন ও তার দোসর পেটোয়া বাহিনিরা বাধা উপেক্ষা করে আবারও রাবিস ফেলেন। পরবর্তীতে আইনানুগ ভাবে ট্রাষ্ট বোর্ড নিজ অর্থায়নে উক্ত রাস্তার রাবিস সরিয়ে আবাদি জমি রক্ষা করেন।
এতে মন্দিরের ম্যানাজার ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা সেই রাস্তা ভেঙ্গে দিয়ে মন্দিরের জমি রক্ষায় করায় বিভিন্ন ভাবে মন্দিরের ম্যানাজার ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদে বিপদে ফেলার জন্য এখনো ষড়যন্ত্র মুলক বিভিন্ন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে সুনন্দন দাস রতন।
সুনন্দন দাস রতন ট্রাষ্ট বোর্ডের একজন সদস্য (ট্রাষ্টি) থাকা অবস্থায় ট্রাষ্ট ভঙ্গ করা, নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টা, পেশি শক্তি খাটিয়ে সিনিয়র সদস্যদের (ট্রাষ্টি), স্টাফ, পুরোহিত সকলকে উগ্র আচরণের দ্বারা বিভিন্ন সময়ে অকথ্য ভাষায় গালি গালিগালাজ করেন। বিধায় ১০ (দশ) জন সদস্যের (ট্রাষ্টি) দেয়া নিজ নিজ লিখিত মতামতের ভিত্তিতে ট্রাষ্ট ডিডের ০৫ (পাঁচ) ধারা (নিয়মাবলী) মোতাবেক সুনন্দন দাস রতনকে শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ দেব ট্রাষ্ট বোর্ডের সদস্য (ট্রাষ্টি) পদ থেকে অপসৃত বা অপসারণ করার সিদ্ধান্ত মতে ০৮/০২/২০২৫ ইং তারিখ অপরাহ্ন হতে শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ দেব ট্রাষ্ট বোর্ডের সদস্য (ট্রাষ্টি) পদ থেকে তাকে অপসৃত বা অপসারণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ০৮/০২/২০২৫ ইং তারিখ অপরাহ্ন হতে সুনন্দন দাস রতন এর সদস্য (ট্রাষ্টি) পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েয়ে।
অভিযোগের বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্চার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
৫৫ মিনিট আগে
১ ঘন্টা ০ মিনিট আগে
১ ঘন্টা ২ মিনিট আগে