নোয়াখালীর সেনবাগে নারী শিক্ষায় যুগোপযোগী অগ্রগতির এক দৃষ্টান্তমূলক ইতিহাস ও ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজ।
নোয়াখালীর অবহেলিত জনপদ সেনবাগে এ নারী শিক্ষা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করছে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক , সানজী গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক, শিক্ষানুরাগী লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক।
নারী শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী এ শিক্ষানুরাগী ১৪ জানুয়ারী ১৯৬৮ সালে নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলার ৬নং কাবিলপুর ইউনিয়নের সায়েস্তানগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা শহীদ তরিক উল্লা বীর বিক্রম, মাতা বিশিষ্ট সমাজসেবী রত্নগর্ভা বেগম আংকুরের নেছা।
লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিককে ৮ বছর ও ছোট ভাই ফিরোজ আলম খোকনের ৫ বছর বয়সে দেশমাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পিতা শহীদ হওয়ার পর মা বেগম আংকুরের নেছা দুই ছেলেকে কোলে-পিঠে করে বড় করেন। লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ডিগ্রী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রী অর্জন করেন।
এরপর তিনি উপলব্ধি করেন দেশের ও দশের কল্যাণে অংশগ্রহণ ও অবদান রাখতে হলে আর্থিক অবস্থা উন্নয়ন প্রয়োজন এবং তৎপ্রেক্ষিতে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে সম্পৃক্ত হন। ব্যবসার শুরুর পর শিক্ষা বিস্তার বিশেষ করে নারী শিক্ষা বিস্তারে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় তিনি ২০১৮ সালে সেনবাগ উপজেলার সায়েস্তানগরে সম্পূর্ণ নিজ অর্থে আধুনিক দ্বিতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে সুযোগ সুবিধা সংবলিত নারী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন।
কলেজের প্রথম শিক্ষাবর্ষে ৩৭৬ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হন। কলেজটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পূর্ব থেকেই ১০ জন মেধাবী শিক্ষক ও ৪ জন কর্মকর্তা/কর্মচারী ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একের পর এক সম্মান অর্জন করতে থাকে। ২০২০ সালে কলেজটিতে শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করে।
২০২১ সালে সেনবাগ উপজেলার উচ্চ শিক্ষার ৫ টি কলেজের মধ্যে লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজ সেনবাগ উপজেলা পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে এবং ৭ জন জিপিএ পাঁচ পান। কলেজ কার্যক্রমের শুরুতে মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ছাত্রী ভর্তি করা হয়। সম্প্রতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক মহিলা কলেজে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগ চালু অনুমতি পেয়েছে ।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় কলেজটিতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারীভাবে শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।
প্রতিনিয়ত তিনি তাঁর এলাকায় বর্তমান সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড- সম্পর্কে জনগণকে নিয়মিত অবহিত করা, এলাকার হত দরিদ্র মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হিসেবে নিয়মিত পাশে দাঁড়ানো এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষের নিকট পবিত্র ইসলামের সঠিক বাণী প্রচারের জন্য উদ্বুদ্ধকরণ, শিক্ষা প্রসার, বিশেষ করে নারী শিক্ষার উন্নয়ন তথা নারীর ক্ষমতায়নে অর্থাৎ সার্বিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দর্শন বাস্তবায়নে দিবা-রাত্র কাজ করে চলেছেন। প্রখ্যাত শিল্পপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক কৃতিত্বের সহিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জনের পর দেশের আপামর জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সমবেত হয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে- জড়িত থাকার সঙ্গে সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা তথা দেশকে বিশ্বের অন্যতম দেশে রূপান্তর করার মানসে ১৯৯২ সালে টেক্সটাইল এ্যান্ড ডাই কেমিক্যাল আমদানি ব্যবসা শুরু করেন।
কারণ তিনি উপলব্ধি করেন কেবল চাকুরীলব্ধ অর্থ দিয়ে নিজের পরিবার প্রতিপালন ছাড়া দেশের হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে কোন অবদান রাখা সম্ভব নয়। সার্বক্ষণিক অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তাঁর দেশপ্রেম, জ্ঞান, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে অচীরেই তিনি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে সুনাম অর্জন করেন এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা ও শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
তাঁর এই ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনেক বেকার যুবক ও যুব মহিলার কর্মসংস্থান, এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বর্তমানে তিনি সানজি গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।