৬. পড়াশোনার ধরন কেমন?
শুভাশীষ রায় বলেন, যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার ধরনে ব্যবহারিক প্রয়োগ বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাস্তব জীবনের নানা সমস্যা ও পরিস্থিতি, গ্রুপওয়ার্ক, ওয়ার্ক সিমুলশনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়। ড. নিয়াজ চৌধুরী বলেন, মধ্যম মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন বেশ ভালো করছে। ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে নানা মাত্রায় সহযোগিতা করছে তাঁরা। ইউরোপের অন্য দেশের চেয়ে যুক্তরাজ্যের পড়াশোনার কাঠামো আন্তর্জাতিক মানের ও আধুনিক। ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব স্কটল্যান্ড থেকে ডক্টরেট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রিধারী ড. সাদিয়া টুম্পা জানান, পড়ার সুযোগ অন্যান্য ইউরোপের দেশের চেয়ে যুক্তরাজ্যে বেশি। গবেষণার সুযোগ বেশি।
৭. জীবনযাত্রার মান ও খরচ কেমন?
বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে খরচ ভিন্ন। রাসেল গ্রুপে সংযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যয় বেশি, সুযোগ-সুবিধাও আন্তর্জাতিক মানের অবশ্য। এমনিতে জীবনযাত্রার মান যুক্তরাজ্যের সব জায়গায় প্রায় একই রকম। দক্ষিণে ব্যয় একটু বেশি। লন্ডনের সঙ্গে ম্যানচেস্টারে একই ধরনের বাড়ির ভাড়ার পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য খুব বেশি নেই। লন্ডনে চাকরির সুযোগ বেশি, কিন্তু চাকরির অবেদনকারীর সংখ্যাও অনেক বেশি। উত্তরের শহর ম্যানচেস্টার, লিডস, লিভারপুল বা শেফিল্ডে খরচ কম, কিন্তু বেতন কাঠামো একই।
৮. বৃত্তি ছাড়া পড়তে চাইলে খরচ কেমন?
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ছাড়া পড়ার খরচ অনেক বেশি। লিভারপুল জন মুরস বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনসে মাস্টার্সে পড়ছেন রামেন্দ্র সুখন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে মাস্টার্স শ্রেণিতে বৃত্তি ছাড়া পড়তে বছরে ১০ থেকে ১৬ হাজার পাউন্ডের মতো খরচ পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে টিউশন ফিতে পার্থক্য আছে। রাসেল গ্রুপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ হাজার পাউন্ড। মধ্যম মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি ১৪ থেকে ১৮ হাজার পাউন্ড। থাকা-খাওয়ায় মাসে আটশো থেকে হাজার পাউন্ড লেগে যায়।
৯. পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ আছে?
যুক্তরাজ্যে একজন শিক্ষার্থী পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি পাচ্ছেন। সরাসরি ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আছে। রামেন্দ্র সুখন বলেন, অনেক শিক্ষার্থী স্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গবেষণা সহযোগী হিসেবে কাজ করা যায়।
১০. পড়ালেখা করে যুক্তরাজ্যে চাকরির সুযোগ কেমন?
ইউরোপের একটি উন্নত দেশ হিসেবে পড়াশোনার পর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের গবেষণার যেমন সুযোগ থাকে, তেমনি চাকরির অনেক সুযোগ আছে। ড. সাদিয়া টুম্পা জানান, মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ আছে। অনেক শিক্ষার্থীই এখানে উচ্চশিক্ষা শেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন ফ্রান্স, স্পেনে চাকরির সুযোগ পায়। ব্রেক্সিটের পরে যুক্তরাজ্যে কাজের সুযোগ বাড়ছে। ড. নিয়াজ চৌধুরী বলেন, উচ্চশিক্ষিত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এখানে অনেক সুযোগ আছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা’ চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েট ভিসার মাধ্যমে স্নাতক-মাস্টার্সের পরে দুই বছর, পিএইচডির পরে তিন বছর কাজের অনুমতি পাচ্ছে। যদি কেউ চান, তাহলে কাজ করার সময়েই স্কিলড ওয়ার্কার ভিসায় আবেদন করতে পারেন। কোভিড মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট পেশার জন্য বিশেষ কাজের স্কিম চালু করা হয়েছে। মেডিকেল ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে পড়ুয়াদের চাকরির অনেক সুযোগ আছে।