বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীতে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষে এবং আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ছোট থেকেই শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা দান করতে সরকারের রয়েছে নানামুখী উদ্যোগ।
এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে সারাদেশে আইসিটি শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন, আইসিটির নিত্যনতুন প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে ' শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ২২ হাজার 'শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং ৩০০ টি 'শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার' স্থাপন করা হয়েছে।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ধানসাগর পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সালের নভেম্বরে ১৭ টি ল্যাপটপ কম্পিউটার লাভ করে। এর এক সপ্তাহ পরে বাগেরহাট ৪ ( মোরেলগঞ্জ- শরণখোলা) আসনের একমাত্র স্মার্ট স্কুল হিসেবে ' শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচার ' স্থাপনে প্রাথমিক পর্যায়ে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন ৬ টি ডিজিটাল স্মার্টবোর্ড, ৫টি ডিজিটাল হাজিরা মেশিন, ১ টি ওয়াইফাই রাউটার, ৪ টি ডেস্কটপ কম্পিউটার ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ডিজিটাল আইডি কার্ড পান বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা।
তিনি আরও জানান, এসব ডিজিটাল সরঞ্জামাদি পেয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এগুলো সচল রেখেই চলছে এ স্কুলের ডিজিটাল কার্যক্রম। ফলে এসব উন্নত ডিজিটাল সরঞ্জামাদির কার্যকর ব্যবহারে মোরেলগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকার এ বিদ্যালয়টি উপজেলার একমাত্র স্মার্ট স্কুলে পরিণত হয়েছে এখন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রথম স্মার্ট স্কুল হওয়া এ প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই এসএসসিতে ভালো ফলাফল করে আসছে। এবারেও ৯৭ ভাগ পাশের হার নিয়ে উপজেলায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। স্মার্ট এ স্কুলটিতে অন্যান্য স্কুলের তুলনায় ভিন্নতা আছে বেশ। ডিজিটাল হাজিরাসহ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে এখানে। সকালে স্কুলে পৌঁছানোর পর থেকেই ডিজিটাল হাজিরার মাধ্যমে শুরু হয় প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের থাকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের ব্যবস্থা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, উপজেলা সদর থেকে ১২ কিমি দূরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থান করেও এ স্কুল তার শিখন পদ্বতি ও সুব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে যখন পুরোটাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠলো তখন থেকেই বেড়েছে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার। তাই এখন এসব শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর ও আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য।'
উপজেলার আইসিটি কর্মকর্তা ত্রিদীপ সরকার বলেন, ধানসাগর পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এখন উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তি সমৃদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়ছে। দুই উপজেলার (মোরেলগঞ্জ- শরণখোলা) মধ্যবর্তী স্থানে স্কুলটি অবস্থিত হওয়ায় 'স্কুল অব ফিউচার' কার্যক্রমে উভয় উপজেলায় এর অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।'
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. বাদশা মিয়া জানান, আশেপাশে অনেক স্কুল, মাদ্রাসা থাকলেও এ স্কুলটি তার সার্বিক ব্যবস্থাপনা গুনে শিক্ষার্থী সংখ্যা ও শিক্ষার মান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।