বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কাজলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের একটি রাস্তা ভেঙে একটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই রাস্তায় আরও কয়েকটি জায়গায় ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে রাস্তটি ভেঙে গেলে ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার বিকালে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে পানিবন্দী হয়েছে ৪৯ হাজার মানুষ। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন।
শুক্রবার বিকালে যমুনা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৮৩ মিটার। এ উপজেলায় এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৬ টা থেকে শুক্রবার বিকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ২০ সেন্টিমিটার। এদিকে পানি বাড়তে থাকায় উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের টেংরাকুড়া চরের একটি রাস্তা ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এখানে বৃহস্পতিবার বিকালে রাস্তাটির ২০ ফিট অংশের মাটি ধ্বসে গেছে। এতে এ গ্রামের ১০০ টির বেশি পরিবারের মানুষজনের ঘরবাড়ি এবং কৃষিজমির ফসল প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে যাওয়া রাস্তাটির আরও একটি অংশ ধ্বসে গিয়ে সেখানে বিশালাকার আয়তনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেখানেও ভাঙন আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার এ অংশটি ধ্বসে গেলে টেংরাকুড়া, উত্তর টেংরাকুড়া, দক্ষিণ টেংরাকুড়া, জামথল, দক্ষিণ জামথল এবং বেড়াপাঁচবাড়িয়া গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৬ গ্রামের গ্রামের ২০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তাটি ভেঙে গেলে এসব গ্রামে অবস্থিত ৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১ টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩ টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
এদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার ৭৫ টি গ্রামের ৪৯ হাজারের বেশি মানষ পানিবন্দী হয়েছে। এ উপজেলার ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে ৮ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছে উপজেলার ৩২ হাজার ছাগল এবং ৪৩ হাজার গরুসহ বেশকিছু গৃহপালিত পশু। পানিবৃদ্ধিতে উপজেলার ১৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়েছে।
কাজলা টেংরাকুড়া চরের শাহজাহান আলী বলেন, টেংরাকুড়া গ্রামের রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় পুরো ইউনিয়নের এলাকাবাসীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এতে একটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং মানুষজন পানিবন্দী হয়েছে। রাস্তাটির অপর পাশে ধ্বসে যাওয়া অংশ ভাঙন হুমকিতে রয়েছে এবং সেখানে ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, যেহেতু পানি বৃদ্ধির হার কমে গেছে। তাই দুএকদিনের মধ্যেই পানি স্থিতিশীল হয়ে কমতে শুরু করবে। কাজলার টেংরাকুড়া চরের ভেঙে যাওয়া রাস্তাটি পরিদর্শনের জন্য ইতিমধ্যেই আমাদের লোক পাঠানো হয়েছে।
চরাঞ্চলের মানুষের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও নিশ্চিত করেন এই কর্মকর্তা।