কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের উদ্যোগে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মাঝে পানি, কলম ও স্যালাইন বিতরণ কাতারের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা সন্ত্রাসমুক্ত ও নিরাপদ শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন উখিয়ায় কলেজ শিক্ষক ইকবাল খুন কৃষি বিষয়ক স্নাতক ব্যতীত "কৃষিবিদ" পদবী ব্যবহার করা যাবে না: বাকৃবি শিক্ষার্থীরা পীরগাছায় বসতভিটার জমি দখলের অভিযোগ!! প্রায় দেড়শ বছর ধরে যাতায়াতের রাস্তা বাঁশের বেড়া নওগাঁয় নার্সিং শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন পালিত. সিরাজগঞ্জে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রচার কমিটির সভা অনুষ্ঠিত। প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী কলেজে Seminar on Foundation English অনুষ্ঠিত আক্কেলপুরের জামায়াতের মহিলা বিভাগের নির্বাচনী প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত. শ্যামনগরে প্রকল্প অবহিতকরণ সভা ছাত্রদলনেতা পারভেজ হত্যার বিচার চেয়ে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ রাষ্ট্রপতিরা ৩৩ বছরে কতজনের দণ্ড মওকুফ করেছেন, জানতে হাইকোর্টের রুল মেঘনা আলমের ব্যাংক হিসাব তলব সিরাজগঞ্জে কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলা উদ্বোধন তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম বিশ্ববাসীর প্রতি ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ভিশনের আহ্বান যেভাবে নির্বাচিত হবেন পরবর্তী পোপ বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে : আসিফ নজরুল কমিশনের উদ্দেশ্য পুনরায় যাতে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে

ডেঙ্গু আতঙ্ক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে : আক্রান্ত ২ হাজার ৩৭৭ জন, ঝুঁকিতে স্থানীয়রা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে এ পর্যন্ত ২হাজার ৩৭৭জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন।আর মৃত্যু হয়েছে তিন রোহিঙ্গার।


ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ফলে স্থানীয় জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।


রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সংলগ্ন এলাকার অপরিচ্ছন্ন নালা–নর্দমা, ছরা, খাল ও পরিত্যক্ত স্থানে জমে থাকা পানিতে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা দেখা গেছে।


এর ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সংলগ্ন এলাকার লোকজনের মাঝে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


সোমবার পর্যন্ত উখিয়ায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৭৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৩ জন। উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু পরীক্ষা ও আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।


উখিয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্তের অধিকাংশ রোহিঙ্গা ক্যাম্প–সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা, দেশি–বিদেশি এনজিওর সেবাকর্মী, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশ সদস্যসহ আশ্রিত রোহিঙ্গা এবং ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বলে উখিয়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।


উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী মেগা ক্যাম্পের পাশাপাশি ১৭টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এসব ক্যাম্পের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস প্রায় ৯ লক্ষাধিক রোহিঙ্গার। সেখানে দুর্গন্ধ ও মশা–মাছির অত্যাচার। ড্রেন, স্যুয়ারেজ লাইন, গোসলের স্থান ও লেট্রিন নিয়মিত পরিষ্কার না রাখার কারণে যত্রতত্র পানি ও ময়লা জমে থাকে।


অনেক এনজিও বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে এলেও এক স্থানে প্রচুর মানুষের বসবাসের কারণে দুর্গন্ধ ও মশা থেকে নিষ্কৃতি মিলছে না।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অল্প জায়গায় বিপুল সংখ্যক মানুষের বসবাস ও অসচেতনতার অভাবে অপরিচ্ছন্নতা বেড়েছে।


ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো ডেঙ্গুর হট স্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে ক্যাম্পগুলোর রোহিঙ্গা ও আশপাশের স্থানীয় মানুষকে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, সব ধরনের চেষ্টা তারা করছেন, কিন্তু ক্যাম্পের মানুষকে সচেতন হতে হবে।


কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্পগুলোর অধিকাংশ নালা–নর্দমা উন্মুক্ত, যেখানে সেখানে পানি জমে থাকে। পানিতে অসংখ্য মশা ও মশার ডিম দেখা যায়। ক্যাম্পগুলোর গোসল ও স্যুয়ারেজের পানি যে পথ ধরে যায় এবং লেট্রিনের গা ঘেঁষে ঘরগুলো তৈরি হওয়ায় দুর্গন্ধে ঘরে বাস করা দুঃসহ।


রোহিঙ্গাদের স্কুল টিচার নুরুল কবির বলেন, ক্যাম্প স্থাপনের শুরুর দিকে এসব জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছিল। কিন্তু গত ৫–৬ বছরে এলাকাগুলো আমাদের অবহেলায় দূষিত হয়ে উঠেছে। এত ছোট এলাকায় এত মানুষ, শিশুদের সংখ্যা এত বেশি, পরিচ্ছন্ন রাখার কথা ভাবা যায় না।


একটি মসজিদের ইমাম খায়রুল আমিন বলেন, রোহিঙ্গা পরিবারগুলো পানি ধরে জমিয়ে রাখে। সেখানে ডেঙ্গুর মশা জন্মাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ও এনজিওগুলোর পক্ষ হতে রোহিঙ্গাদের বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়ে মিটিংয়ে বলা হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মেনে চলা হয় না।


বালুখালী কাশেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবুজ সেন বলেন, তার এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। ইতিমধ্যে বালুখালী উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংলগ্ন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট পরিচালিত হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তিনি এলাকাবাসীকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান।


চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত উখিয়ায় ৩৩৬ জন ডেঙ্গু পরীক্ষা করেছেন। এদের মধ্যে ৪২ জন স্থানীয় রোগী শনাক্ত হয়েছে।


একই সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২৩৩৫ জন। এ সময়ে ক্যাম্প১/ইস্ট, ২/ ডাব্লিউ ও ৬ নম্বর ক্যাম্পে একজন করে তিন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে।


ডেঙ্গু আক্রান্তদের কঙবাজার জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে, ক্লিনিক এবং বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে উখিয়া উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার রঞ্জন বড়ুয়া জানান।


কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের হেলথ কো– অর্ডিনেটর ডা. আবু তোহা এম আর এইচ ভূঁইয়া জানান, চলতি বছরের ২৪ জুলাই পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ২৩৩৫ জন রোহিঙ্গা। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ক্যাম্প–৩, ক্যাম্প–৪ ও ক্যাম্প ১৭–তে। আক্রান্তদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।


কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা বলেন, ’সম্ভাব্য ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় কক্সবাজারের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে চিকিৎসার জন্য ১০ জন চিকিৎসক নিয়ে টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে সদর হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো।’


২০২২ সালে কক্সবাজারে মোট ১৯ হাজার ২৩১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩৬ জন রোহিঙ্গা ও ৩ হাজার ৫৮৫ জন ছিল স্থানীয়। ওই বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৩৯ জন। যার মধ্যে রোহিঙ্গা ২৬ জন ও বাঙালি ১৩ জন।

Tag
আরও খবর
উখিয়ায় কলেজ শিক্ষক ইকবাল খুন

৮ ঘন্টা ৫৭ মিনিট আগে