কুয়েটের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ এবং প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যার বিচার দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২১ এপ্রিল, সোমবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হন। পরে একটি মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, “দেশের প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারে, সেটাই আমাদের প্রধান দাবি।”
‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ নামের একটি ছাত্র প্ল্যাটফর্ম এ কর্মসূচির আয়োজন করে। আয়োজকরা বলেন, “শুধুমাত্র পারভেজ নয়, দেশের যেকোনো শিক্ষার্থীর ওপর নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার হওয়া উচিত। পাশাপাশি, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ, সহনশীল ও অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।”
এ সময় দর্শন ৫১ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ জেনিচ বলেন, কুয়েটের যে পরিস্থিতি তা একটি প্রশ্নের উদ্ভব করে, যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাদের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তো শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য কাজ করার কথা। এটাই তাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের যে চরিত্রগত মান তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সংকট সেই সংকটে শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে কিভাবে সেই স্বৈরাচারী ভিসি একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নেয়। কুয়েটে যে ঘটনাটি ঘটেছে এবং শিক্ষার্থীদের যে নৈতিক আন্দোলন তাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সংহতি প্রকাশ করছি এবং কুয়েটের যে সমস্যা তা অবিলম্বে সমাধান করতে হবে। এবং সেখানে যদি রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় সেটাও করা উচিৎ।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে পরিবেশ তা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে, ইন্টেরিম সরকারের এদিকে নজর দেয়া উচিৎ। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী যে আশা-আকাঙ্ক্ষা সেটা আসলে পূরণ হচ্ছে না এবং কুয়েটের ভিসির ব্যাপারে যে অভিযোগগুলো এসেছে তার যৌক্তিক সমাধান করা এবং এতে যদি ভিসির পদত্যাগ করতে হয় অবশ্যই করতে হবে। একইসাথে আমরা আরেকটি বিষয় নিয়ে দাড়িয়েছি যে গতকাল প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী পারভেজকে যে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। ক্ষমতাকে ব্যাবহার করে যে ক্ষমতার চর্চা সেটার প্রতিফলন হচ্ছে পারভেজ হত্যাকান্ড এবং আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করছি।
অর্থনীতি বিভাগের ৪৭ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী বলেন, আমরা যারা জুলাইয়ে রক্ত দিয়েছি, আমরা যারা জুলাইয়ে রাজপথে থেকে আমাদের বন্ধুদের শহীদ হতে দেখেছি এই দিনগুলো আমাদের অনেক পীড়া দেয়। কেননা আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম এমন একটি নতুন বাংলাদেশের,এমন একটি শিক্ষাঙ্গনের যেখানে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের কোপানো হবে না। যেখানে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করতে পারবে। যেখানে কোনো সন্ত্রাবাজি চলবে না। কিন্তু আমরা বারবার দেখছি মব ভায়োলেন্সর সূত্রপাত হচ্ছে এবং এই মব ভায়োলেন্সের শিকার হয়েছেন প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ। আমরা যদি এসকল হত্যা কান্ডের বিরুদ্ধে কথা না বলি, আমরা যদি এই সন্ত্রাসবাজি,অস্ত্রের ঝনঝনানি এগুলোর বিরুদ্ধে কথা না বলি তাহলে আস্তে আস্তে পারভেজের মতো পরিণতি আমাদের সবার হবে। আমাদের স্পষ্ট দাবি পারভেজের যে হত্যাকারী তারা যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন বা তারা কোনো রাজনৈতিক দলবিহীন হোক না কেন, সেসকল হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আর হত্যাকারীকে দায়মুক্তি দেয়া কোনো জুলাই যোদ্ধার কাজ হতে পারে না, হত্যাকারীকে দায়মুক্তি দেয়া কোনো গণঅভ্যুত্থানকারীর কাজ হতে পারে না।
এধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়বে বলে প্রত্যাশা জানায় আয়োজকরা।
৫ ঘন্টা ৪ মিনিট আগে
৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট আগে
৯ ঘন্টা ৫০ মিনিট আগে
১ দিন ৫ ঘন্টা ৫৮ মিনিট আগে
১ দিন ৬ ঘন্টা ২ মিনিট আগে
২ দিন ৪ ঘন্টা ১৪ মিনিট আগে
২ দিন ১০ ঘন্টা ১৫ মিনিট আগে
২ দিন ১৩ ঘন্টা ৪৭ মিনিট আগে