গড়াই নদের ভাঙনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের অনেক বসতবাড়ি ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। নদীগর্ভে সবকিছু হারিয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। সাধারণত বর্ষায় ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিলেও এবার শীত মৌসুমেও তীর ভাঙছে গড়াই নদের। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে নদের তীরে। জমিজমা ও ঘরবাড়ি হারানোর ভয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে উপজেলার সারুটিয়া, হাকিমপুর ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ৮ গ্রামের প্রায় হাজারো পরিবার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েক মাসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বহু বাড়িঘর, মসজিদ, রাস্তাঘাট ও কয়েকশ একর ফসলি জমি। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে আরো কয়েকটি গ্রাম। নতুন করে বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছেন সারুটিয়া ইউনিয়নের বড়ুরিয়া, কৃষ্ণনগর, হাকিমপুর ইউনিয়নের মাদলা এবং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কাশিনাথপুর, মাজদিয়া, উলুবাড়িয়া ও লাঙ্গলবাঁধ গ্রাম। প্রায় দুই যুগ ধরে গড়াই নদীভাঙনের কবলে পড়ে বদলে গেছে নদীর গতিপথ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়ুরিয়া, কৃষ্ণনগর, খুলুমবাড়ি, মাদলা, কাশিনাথপুর ও লাঙ্গলবাঁধ। ভিটেবাড়ি ও সহায়-সম্বল হারিয়ে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন পাউবোর প্রধান সেচ খালের কাছে।
সারুটিয়া ইউনিয়নের বড়ুরিয়া গ্রামের কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গড়াই নদে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে আমার ফসলি জমি সব চলে গেছে। কয়েক বছরের ভাঙনে সহায়-সম্পদ হারিয়ে এখন আমি নিঃস্ব। অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাতে হয়। এ বছর শুকনো মৌসুমে শেষ সম্বল বসতবাড়ির অর্ধেক চলে গেছে নদীগর্ভে। বাকি অংশটুকুও হুমকির মুখে। এটুকুও চলে গেলে আমার আর কিছুই থাকবে না।’
উলুবাড়িয়া গ্রামের কৃষক দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘নদী ভাঙতে ভাঙতে গ্রামের অর্ধেকই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নেয় না। আমাদের সহায়-সম্বল সব হারিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। নদীপারের অনেক বাসিন্দা এখন অন্যত্র বসবাস করছে।’
ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মাঝদিয়া গ্রামের দিনমজুর রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছর জিও ব্যাগ দিয়ে কয়েকটি এলাকায় কিছুটা কাজ হয়। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাই আমাদের দাবি, ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।’
হাকিমপুর ইউনিয়নের পূর্ব মাদলা গ্রামের বাসিন্দা করিম মোল্ল্যা বলেন, ‘শুধু আমাদের গ্রাম না। আশপাশের প্রতিটি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিবার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দেয়। পানি কমে গেলে আরেক দফায় ভাঙনের কবলে পড়তে হয়। এ বছর ভাঙনের মাত্রা অপেক্ষাকৃত বেশি।’
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করি। কিন্তু স্থায়ী বাঁধ দেয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা প্রকল্প প্রস্তাব দিয়েছি। এটি পাস হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।
১ দিন ৩১ মিনিট আগে
৩ দিন ২৩ ঘন্টা ৪৬ মিনিট আগে
৫ দিন ২১ ঘন্টা ১৯ মিনিট আগে
১০ দিন ২২ ঘন্টা ২৩ মিনিট আগে
১২ দিন ১৯ মিনিট আগে
১২ দিন ২০ মিনিট আগে
১৫ দিন ৭ ঘন্টা ৩০ মিনিট আগে