রাষ্ট্রপতিরা ৩৩ বছরে কতজনের দণ্ড মওকুফ করেছেন, জানতে হাইকোর্টের রুল মেঘনা আলমের ব্যাংক হিসাব তলব সিরাজগঞ্জে কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলা উদ্বোধন তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম বিশ্ববাসীর প্রতি ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ ভিশনের আহ্বান যেভাবে নির্বাচিত হবেন পরবর্তী পোপ বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে : আসিফ নজরুল কমিশনের উদ্দেশ্য পুনরায় যাতে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে তালতলীতে প্রকৌশলী ও উপসহকারী প্রকৌশলী’র কক্ষে এসি বিলাস ও সাজসজ্জা পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন আদমদীঘিতে নেশার ট্যাবলেটসহ দুইজন গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে বাকৃবিতে মানববন্ধন জ্বালানি রূপান্তরের গুরুত্ব সম্পর্কে গণসচেতনতামূলক র‌্যালি রাজবাড়ীর কালুখালী বজ্রপাতে প্রাণ হারায় কৃষক। কিশোরগঞ্জে আ.লীগের চার নেতা গ্রেফতার সাতক্ষীরায় দুই নারীর প্রতারণার ফাঁদে মাছ ব্যবসায়ী লাখাইয়ে বুল্লাবাজার ব্যকস এর আহবায়ক কমিটি গঠন। ঢাকা বিভাগসহ ৪ জেলায় ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাতের আভাস ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পরিসংখ্যান কর্মকর্তার স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে শুমারির টাকা আত্মসাৎ আদমদীঘিতে ৭ শ্যালোর পাম্প চুরি, দিশেহারা কৃষক

হিন্দু ধর্মের দীপাবলির ইতিবৃত্ত।

দীপাবলি, বা, দেওয়ালি হল একটি পাঁচ দিন-ব্যাপী হিন্দু ধর্মীয় উৎসব। তবে জৈন-শিখ ধর্মালম্বীরাও এই সময়ে একই ধরনের উৎসব পালন করে থাকেন। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ধনতেরাস অথবা ধনত্রয়োদশী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দীপাবলি উৎসবের সূচনা হয়। কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উৎসব শেষ হয়। নবরাত্রি উৎসব অথবা বাঙালিদের দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার ১৮ দিন পর দীপাবলি শুরু হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বরের মধ্যে দীপাবলি অনুষ্ঠিত হয়।

উত্তর ভারতে দীপাবলি উপলক্ষে রঙিন গুঁড়ো দিয়ে দেওয়া রঙ্গোলি আলপনা।

অন্য নাম দেওয়ালি, আলোর উৎসব, দীপোত্সব, দীপান্বিতা, আলোকোত্সব।

হিন্দু, শিখ , বৌদ্ধ ও জৈন ; ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, মরিশাস, গুয়ানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, সুরিনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিজি (জাতীয় ছুটি)

দীপাবলির রাতে আলোকমালার প্রতিবিম্ব

দীপাবলি ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, মরিশাস, গুয়ানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, সুরিনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিজিতে একটি সরকারি ছুটির দিন। বাংলাদেশে এই দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি দেয়া হয়।

হিন্দুদের কাছে, দীপাবলি একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই দিন সব হিন্দুরা বাড়িতে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বাংলা, আসাম, ওড়িশা ও মিথিলাতে এই দিনটি কালীপূজা হিসেবে উদযাপন করা হয়। ভারতীয় সমাজের দৃঢ় বিশ্বাস 'দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন' বা 'ন্যায়ের কাছে অন্যায়ের পরাজয়' এই নীতিতে। দীপাবলির মাধ্যমে উপনিষদের আজ্ঞায় এই কথাটা খুবই সদৃঢ় ভাবে চরিতার্থ হয়ে ওঠে যথা "অসতো মা সৎ গময়। তমসো মা জ্যোতির্গময়। মৃত্যোর্মা অমৃতং গময়। ওঁ শান্তিঃ॥ ওঁ শান্তিঃ॥ ওঁ শান্তিঃ॥" অর্থাৎ "অসৎ হইতে সত্যে লইয়া যাও, অন্ধকার হইতে জ্যোতিতে লইয়া যাও, মৃত্যু হইতে অমরত্বে লইয়া যাও। সর্বত্র যেন ছড়াইয়া পড়ুক শান্তির বার্তা॥" উত্তর ভারতীয় হিন্দুদের মতে দীপাবলির দিনেই শ্রীরামচন্দ্র চৌদ্দ বছরের নির্বাসনের পর অযোধ্যা ফেরেন। নিজের পরমপ্রিয় রাজাকে ফিরে পেয়ে অযোধ্যাবাসীরা ঘিয়ের প্রদীপ জ্বেলে সাজিয়ে তোলেন তাদের রাজধানীটাকে। এই দিনটিতে পূর্বভারত বাদে সম্পূর্ণ ভারতবর্ষে লক্ষ্মী-গণেশের পুজোর নিয়ম আছে। জৈন মতে, ৫২৭ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে মহাবীর দীপাবলির দিনেই মোক্ষ বা নির্বাণ লাভ করেছিলেন। ১৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ ও ৫২ জন রাজপুত্র দীপাবলির দিন মুক্তি পেয়েছিলেন বলে শিখরাও এই উৎসব পালন করেন।আর্য সমাজ এই দিনে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর মৃত্যুদিন পালন করে। তারা এই দিনটি "শারদীয়া নব-শস্যেষ্টি" হিসেবেও পালন করেন। এছাড়া, নেপাল-ভারত-বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেই এই উৎসব নিয়ে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।

"দীপাবলি" নামটির অর্থ "প্রদীপের সমষ্টি"।এই দিন হিন্দুরা ঘরে ঘরে ছোটো মাটির প্রদীপ জ্বালেন। এই প্রদীপ জ্বালানো অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক।বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে ঘরে লক্ষ্মী আসেন বলে উত্তর ভারতীয় হিন্দুরা বিশ্বাস করেন। বাংলার দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই উৎসব সাড়ম্বরে আলোকসজ্জা সহকারে পালিত হয়। তবে এই পূজা প্রাচীন নয়। ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কাশীনাথ রচিত শ্যামাসপর্যাবিধিগ্রন্থে এই পূজার সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আছে, নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় অষ্টাদশ শতকে তার সকল প্রজাকে শাস্তির ভীতিপ্রদর্শন করে কালীপূজা করতে বাধ্য করেন। সেই থেকে নদিয়ায় কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কৃষ্ণচন্দ্রের পৌত্র ঈশানচন্দ্রও বহু অর্থব্যয় করে কালীপূজার আয়োজন করতেন। অমঙ্গল বিতাড়নের জন্য আতসবাজিও পোড়ানো হয়। বিশেষত উত্তর ভারতে দীপাবলির সময় নতুন পোশাক পরা, পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণের প্রথাও আছে।

ধনতেরাসের দিন অনেক ভারতীয় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের অর্থবর্ষের সূচনা হয়; লোকজন নতুন বর্তন, বাসন, গয়না প্রভৃতিও কিনে থাকেন এই দিনে। তবে বেশির ভাগ বাঙালি ব্যবসায়ীদের অর্থবর্ষের সূচনা হয় পয়লা বৈশাখে। দ্বিতীয় দিনটিকে বলে ভূত চতুর্দশী। এই দিনে বাঙালিরা বাড়ির চোদ্দোটা এঁদো কোণায় চোদ্দোটা প্রদীপ জ্বালিয়ে কালো মুছিয়ে আলোকিত করে তোলেন বাড়িটাকে। কথায় আছে যে এমনটা করলে ভূতপ্রেত পরিবার আর স্বজনদের ঘাড়ের কাছে নড়তে পারে না; এমনটাও লোককথায় শোনা যায় যে এই প্রদীপসজ্জার মাধ্যমে পরিবারের পিতৃপুরুষদের অনুষ্ঠানে পদার্পণ করার জন্য নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়, যাতে তারা মায়ের বাৎসরিক আগমনে উপস্থিত হয়ে সবাইকে শুভাশীষ দিয়ে নিজেরা মায়ের আশীর্বাদে মোক্ষ লাভ করবেন। তৃতীয় দিন কার্তিক অমাবস্যায় যেখানে উত্তর ভারতে লক্ষ্মীর পূজা চলছে, পশ্চিমবঙ্গে দারুণ জাঁকজমকে ঘটা করে পালন করা হয় কালীপূজা। অবশ্য সেদিন আদি পশ্চিমবঙ্গ বাসিন্দারা, ঘটিরা, বাড়িতে লক্ষ্মীর পূজাও করে থাকেন। তবে আদি বাংলাদেশি হিন্দুদের, বাঙালদের, এই নিয়ম নেই; তা অনেকে বাড়িতেও কালী পুজো করেন, যদিও এই পুজোর বারোয়ারি ভাবে পালন হওয়ার প্রচলন বেশি। কদাচিৎ কালীপুজোর দিন আর দেওয়ালির দিন পৃথকও হতে পারে; দেওয়ালির তারিখটা একদিন পরে কিংবা আগেও পড়া সম্ভব। কেননা কালীপূজার লগ্ন অমাবস্যার মাঝরাত্রিতে ঠিক হয়, আবার দীপাবলির লক্ষ্মী পূজার লগ্ন নিশ্চিত করা হয় অমাবস্যার সন্ধ্যেতে, তাই পুজোর লগ্ন অনুযায়ী দুই পুজোর তারিখে মাঝে মাঝে অন্তর ঘটে থাকে। দেওয়ালির দিনে প্রদীপের আলোয় বাড়ি-বাড়ি ঝকমক করে ওঠে। নানান রঙের বাজিতে আকাশটাও রীতিমত চকচক করে থাকে। দীপাবলি সারি-সারি প্রদীপের আলোকে স্বর্গের দেবতাকে মর্তের কুটিরে বরণ করে নেবার উৎসব। চতুর্থ দিন কার্তিক শুক্লা প্রতিপদ। এই দিন বৈষ্ণবেরা গোবর্ধন পূজা করেন। পঞ্চম দিন যমদ্বিতীয়া বা ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। এই দিন বোনেরা তাদের ভাইদের জন্যে উপোস করে তাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে।

লেখক : প্রণব মন্ডল, কবি এবং শিক্ষার্থী।

Tag
আরও খবর

কলাম : জীবন চক্র

৭ দিন ২০ ঘন্টা ২১ মিনিট আগে






একদিন মায়ের শাসন ও ফুরিয়ে যাবে

৪৬ দিন ১৯ ঘন্টা ১১ মিনিট আগে