স্বামী ফিরে আসবে এমন আশায় পথপানে চেয়ে আছে মনজু বেগম (৩৮)। অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে দিন যায়, মাস যায়, কেটে যায় বছরের পর বছর। কিন্তু স্বামী ওবায়দুল হক (৪১) ফিরে আসে না। স্বামীর অনুপস্থিতিতে অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন মনজু বেগম। ঘটনাটি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ি ভুরিয়ারকুটি গ্রামের। ওবায়দুল ওই গ্রামের মরহুম আনছার আলীর ছেলে।
জানা গেছে, দীর্ঘ ১৮/২০ বছর আগে থেকেই ঢাকায় রিকশা চালানোর কাজে যাওয়া আসা করতেন ওবায়দুল। ৯ বছর আগে মনজু বেগম জানতে পারেন তার স্বামী ওবায়দুল বিদেশে যাবার লোভে পড়ে ঢাকায় নাজমা বেগম নামের এক মহিলাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তাছাড়া কোনো ঠিকানাও জানতে পারেন নাই মনজু বেগম। ওবায়দুলের বাড়িতে দুটি মেয়ে সন্তান আছে এবং স্ত্রী থাকার কথা গোপন রেখে নাজমাকে বিয়ে করেছেন। নাজমা বেগমের সাথে প্রথম স্ত্রী মনজু ছাড়া বাড়ির সকলের সাথে ফোনালাপ করিয়েও দিয়েছেন ওবায়দুল হক। কিন্তু ২০২০ সালে বাড়িতে এসে সংসার থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা নিয়ে আবার ঢাকায় চলে যান। এরপর থেকে আর কারো সাথে কারো যোগাযোগ হয়নি। তখন থেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওবায়দুলের প্রথম স্ত্রী মনজু বেগম। ইতোমধ্যে বছর খানেক আগে ধারদেনা ও আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়েকে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করাচ্ছেন।
প্রতিবেশী লাভলী বেগম, আছমা বেগম সহ আরো অনেকেই বলেন, ওবাইদুল অনেক চতুর একটা ছেলে। নিখোঁজ নাকি আত্মগোপনে আছেন এটা বলাই কঠিন। তার ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা শুনেছি। আরো একবার এমন আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রামের বাড়িতে এলে টাকা পয়সা নিয়ে চলে যায় আর খোঁজ খবর নেয় না। এলাকার অনেকেই বিভিন্ন কাজে ঢাকায় যান। কখনো কারো সাথে দেখা হলেও কোনো ঠিকানা বলেন না। ইদানিং নাকি ওবায়দুল ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় আছে। পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এভাবে থাকাটা তার মোটেও ঠিক নয়।
মনজু বেগম জানান, চার বছর ধরে স্বামীর সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ হচ্ছে না। আগে স্বামী ওবায়দুলের ব্যবহৃত যে তিনটি (০১৮৪৫৩১৯২৯৮, ০১৮৭৯০৬৪৫৮৭ ও ০১৪০৯২১৪০৮২) ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হতো, এখন যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কখনো বন্ধ বা কখনো অপরিচিত লোক ফোন রিসিভ করে। এদিকে সংসারেও তেমন কোনো সহায় সম্বল নাই যে সন্তানকে নিয়ে দিন যাপন করবেন। উপায়ান্তর না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। স্বামীর সন্ধান পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।