নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ কালিগঞ্জ কৃষ্ণনগরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে গাঁজা বিক্রেতা ও ক্রেতার জেল-জরিমানা ফতুল্লার কাশীপুরে পিস্তলের গুলিতে পাভেল হত্যা মামলার প্রধান আসামী রায়হান বাবু গ্রেফতার ভর্তিচ্ছুদের পাশে কুবি ছাত্রদল গৃহকর্মী-যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ জাবিপ্রবি ফটকে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম, সর্বত্র বিএনপির ব্যানার রায়পুর রিপোর্টার্স ইউনিটির এপ্রিল মাসের সভা সম্পন্ন পাঁচবিবিতে ভূয়া ডিবি পুলিশের পরিচয়ে চাঁদা দাবি গ্রেফতার-২ কবি ও সাংবাদিক বিল্লাল হাওলাদারকে সুনামগঞ্জে সংবর্ধনা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাঁশের ঝোপে বিপুল পরিমাণে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার রায়গঞ্জে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ইয়াবা কারবারি ও গাঁজাসহ গ্রেফতার-৮ আশাশুনি সরকারি কলেজে ৬ শিক্ষককে এডহক নিয়োগ এডভোকেট শহিদুল ইসলাম ৩ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মনোনীত লালপুরে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পথচারী নিহত সর্বস্তরের শিক্ষা জাতীয়করণ চাই শিরোনামে যশোরে জেলা শিক্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল সিরাজগঞ্জে স্থাপনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন বরিশালে মুফতি ফয়জুল করিমকে বৈধ মেয়র হিসাবে ঘোষনা করার দাবীতে গণমিছিল জয়পুরহাটে স্বর্ণের দোকানে তল্লাশী করতে গিয়ে দুই ভুয়া ডিবি পুলিশ আটক ইসলামপুরে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৩ মাদক কারবারী আটক

২০ বিঘায় ড্রাগন চাষে প্রকৌশলী শাহীনের সাফল্য

দেশচিত্র নিউজ ডেস্ক

প্রকাশের সময়: 10-09-2022 03:23:22 am

সংগৃহীত ছবি


◾ সুখবর ও ইতিবাচক ডেস্ক 


ড্রাগন ফল চাষ করে সাড়া ফেলেছেন সাতক্ষীরার সফটওয়্যার প্রকৌশলী শাহীনুর রহমান শাহীন। তিনি ২০ বিঘা বিলের জমিতে ড্রাগন চাষ করে নিজে যেমন লাভবান হয়েছেন, তেমনি এলাকার কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন।


শাহীন কলারোয়া উপজেলার তরুলিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শওকাত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পাস করে চাকরির পেছনে ছোটেননি। ঢাকার শ্যামলীতে মিডিয়াসওয়ার লিমিটেড নামে সফটওয়্যার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। 


২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে লকডাউনে মানুষের ঘরে বন্দি থাকতে হয়। শাহীনের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানও সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়। সেই অবসরে ইউটিউব দেখে ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয় শাহীন। তার কৃষিতে আগে থেকে আগ্রহ ছিল। এরপর পরিবারের অমত ও সামাজিক বাধা উপেক্ষা করে প্রথমে ১০ বিঘা জমিতে মাটি ভরাট করে ড্রাগন ফল চাষের উদ্যোগ নেন। সেখানে সফলও হন। তারপর কলারোয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পরামর্শে সম্ভাবনা দেখে তিনি আরও ১০ বিঘা বিলের জমি ভরাট করে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। এতে এখনও পর্যন্ত শাহীনের প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। 


শাহীন পুরো প্রকল্পে পাইপ লাইন স্থাপন করে সেচের ব্যবস্থা করেছেন। চারিপাশে শক্ত বেড়া দিয়েছেন। পুরো প্রকল্পটি সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত। এক বছরের ব্যবধানে ২০২১ সালের মে থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৮ মাস ড্রাগন ফল তোলা হয়। চলতি মৌসুমেও ক্ষেত থেকে গাছপাকা নিরাপদ ফল ২০০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। সেই ব্যবসায়ীরা ফল পাঠিয়ে দিচ্ছেন সাতক্ষীরার বিভিন্ন বাজার, খুলনা শহর এবং ঢাকায়। গত দুই বছরে প্রায় ১৯ লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। তাছাড়া ‘ফলের আড়ৎ’ নামে শাহীনের ফেসবুক পেজ রয়েছে। কেউ চাইলে সেখান থেকে ফলের অর্ডার দিতে পারেন। 


শাহীনের বাবা শিক্ষক শওকাত আলী জানান, ছেলে বুয়েট থেকে ২০১৩ সালে সিএসই বিভাগে লেখাপড়া শেষ করেছে। এখন সে সফল ব্যবসায়ী। চাকরির পেছনে না ঘুরে সফটওয়্যার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। সেখানে ৩২ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। ড্রাগন ফলের প্রকল্পে নিয়মিত ১৫ জন কাজ করে। 


জেলার তালা উপজেলার শুভাষিনী ডিগ্রি কলেজের কম্পিউটার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি ও একই উপজেলার শ্রীমন্তকাটি গ্রামের মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাবুল তুরুলিয়া গ্রামে আসেন ড্রাগন চাষ দেখতে। শাহীনের সাফল্য দেখে তারাও উৎসাহী হয়েছেন। তারা বলেন, এমন অত্যাধুনিক ড্রাগন চাষ প্রকল্প চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তাদের প্রাথমিকভাবে কয়েক কাটা জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করার ইচ্ছা রয়েছে। 


শাহীনুর রহমান শাহীন জানান, দুই বছরে ২০ বিঘা জমিতে ৫ হাজার সিমেন্টের পিলারে ২০ হাজার ড্রাগন গাছের চারা রোপন করেছেন। ১০ বিঘা জমিতে রোপণের প্রথম বছরেই ফল আসে। এরপর দ্বিতীয় বছরে আরও ১০ বিঘা জমিতে চাষ করেন। এখন প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই হাজার কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি করছেন তিনি। 


শাহীন আরও বলেন, তিনি বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেন এবং সেখান থেকে সিসি টিভির মাধ্যমে ড্রাগন প্রকল্প পরিচালনা করেন। তার বাবা গ্রামে থেকে প্রকল্পটি দেখভাল করেন। তার জেলায় এটিই সবচেয়ে বড় ড্রাগন উৎপাদন প্রকল্প। তার এই সফলতা দেখে এখন অনেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।


২০ বিঘার ড্রাগন বাগান আরও বাড়াতে চান এবং এ ফল বিদেশেও রফতানি করতে চান শাহীন। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, তার উপজেলায় ১২ জন চাষি ৩০ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। সাতক্ষীরা ও মেহেরপুর খামারবাড়ির উপ-পরিচালকসহ কৃষি বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের টিম শাহীনের ড্রাগন চাষ পরিদর্শন করেছেন। 


কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস জানান, একটা স্বপ্ন ও একটা সঠিক সিদ্ধান্ত সমাজের চিত্র পাল্টে দিতে পারে, তরুণ উদ্যোক্তা শাহীন যার দৃষ্টান্ত। তার ড্রাগন বাগান নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে।   


সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম বলেন, ড্রাগন চাষে প্রথমে বেশি খরচ হলেও পরবর্তীতে পরিচর্যা ছাড়া তেমন খরচ না থাকায় কৃষকরা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।   


কৃষিবিদ মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘তরুলিয়া গ্রামে ড্রাগন চাষ আমি দেখতে গিয়েছি। জেলায় ড্রাগন চাষ ক্রমশ বাড়ছে। গত বছর বিভিন্ন উপজেলায় ১০ হেক্টর জামিতে ড্রাগন ফল চাষ হয়েছে।



তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি



আরও খবর